শুধু গরমে নয়, সারা জীবনে একটুও জল খায় না কোন প্রাণী...? বলতেই পারবেন না 'গ্যারান্টি'!

জল ছাড়া এই গরমে ভাবতে পারছেন? অসম্ভব...তাই না? এমন এক প্রাণী আছে, যার সারা জীবনে কোনও দিন জল না খেলেও চলে যায়। জানেন কোন প্রাণী? ভাবুন...ভাবুন। মাথা চুলকেও সহজে মনে পড়বে না।

প্রকৃতির বিস্ময়কর প্রাণীদের মধ্যে কিছু এমন রয়েছে, যাদের সম্পর্কে খুব কম মানুষই জানেন। এদের বিশেষ গঠন, আচরণ ও অভিযোজন ক্ষমতা বিজ্ঞানীদেরও আশ্চর্য করে।

সাধারণত হরিণ ও গজেলের কথা আমরা শুনেছি, কিন্তু এই বিশেষ প্রজাতিটি সম্পূর্ণ আলাদা। পূর্ব আফ্রিকার শুষ্ক, রুক্ষ পরিবেশে এটি অনায়াসে বেঁচে থাকতে পারে, এমনকি একটি জীবনকাল জল না খেয়েও টিকে থাকতে সক্ষম।

শুধু ব্যতিক্রমী গঠনের জন্য পরিচিত নয়, বরং এই প্রাণী খুব দ্রুতগতিতেও দৌড়াতে পারে। শিকারিদের হাত থেকে বাঁচতে এটি প্রায় ৬৪ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা গতিতে দৌড়াতে সক্ষম। এর লম্বা পা ও হালকা শরীর একে দ্রুত দৌড়াতে সাহায্য করে।

আপনি নিশ্চয়ই উটের কথা শুনেছেন, যা দীর্ঘদিন জল ছাড়া থাকতে পারে। তবে এই প্রাণীর নাম জেরেনুক। আশ্চর্য প্রাণী, যা সম্পূর্ণ জীবনকাল জল না খেয়েও বেঁচে থাকতে পারে।

জেরেনুক একধাপ এগিয়ে, কারণ এটি কখনও জল পান করে না। পূর্ব আফ্রিকার শুষ্ক অঞ্চলে পাওয়া যায় এই বিশেষ হরিণ, যা 'জিরাফ গজেল' নামেও পরিচিত।

জেরেনুক মূলত ইথিওপিয়া, সোমালিয়া, কেনিয়া ও তানজানিয়ার শুষ্ক বনাঞ্চলে বসবাস করে। এটি দেখতে অনেকটা সাধারণ হরিণের মতো হলেও, এর লম্বা ও সরু গলা একে আলাদা করে তোলে। সাধারণত এর দেহের দৈর্ঘ্য ৮০-১০৫ সেমি পর্যন্ত হয়।

বিশেষ বৈশিষ্ট্যের মধ্যে অন্যতম হল, এটি পেছনের পায়ে ভর দিয়ে দাঁড়িয়ে গাছের উঁচু পাতা ও ফল খেতে পারে। এটির কশেরুকার বিশেষ গঠন শরীরকে প্রায় ছয় ফুট পর্যন্ত উচ্চতায় তুলে ধরতে সাহায্য করে।

পুরুষ জেরেনুকের চোখের কাছে বিশেষ গ্রন্থি থাকে, যা থেকে এক ধরনের ঘন ও আঠালো কালচে তরল নিঃসরণ হয়। তারা এই তরল গাছের গায়ে ঘষে নিজেদের এলাকা চিহ্নিত করে। এই গন্ধ ব্যবহার করে অন্যান্য জেরেনুক বুঝতে পারে, ওই অঞ্চলটি অন্য কোনও পুরুষের দখলে আছে কিনা।

জেরেনুক তার অদ্ভুত গঠন ও বিশেষ ক্ষমতার জন্য বিজ্ঞানী ও প্রাণীপ্রেমীদের কাছে অত্যন্ত আকর্ষণীয় এক প্রাণী। এটি প্রকৃতির এক বিস্ময়, যা শেখায় প্রতিকূল পরিবেশেও কীভাবে বেঁচে থাকা যায়।