পৌরাণিক মতে বলে, হর-গৌরীর বিয়ে হয়েছিল শিবরাত্রির মহালগ্নে। ফাল্গুন মাসের কৃষ্ণপক্ষের চোদ্দতম রাতই হল শিবরাত্রি। এই রাতটাই বছরের সবচেয়ে অন্ধকার রাত। বলা হয় শিবের গলায় মালা দিয়েছিলেন দক্ষরাজের কন্যা সতী। কিন্তু শিবকে মেনে নিতে পারেননি রাজা দক্ষ। তিনি একবার শিবকে বাদ দিয়ে একটি যজ্ঞের আয়োজন করেছিলেন।
photo source collected
তার পরে মহাদেবকে শান্ত করা সম্ভব ছিল না। তখন সতী জন্ম নিলেন হিমালয়কন্যা উমা রূপে। স্বর্গরাজ্যে তখন অসুর, দানবরা রাজ করছে। তারকাসুর তখন তান্ডব করছেন। তাকে বধ করতে পারে একমাত্র শিব পুত্র কার্তিক। তখনই ঠিক করা হয় শিবের বিয়ে দিতে হবে উমার সঙ্গে। তবেই জন্ম হবে কার্তিকের। দেবতাদের প্রচেষ্টায় ও উমার তপস্যায় বিয়ে হয় হর-গৌরীর।
photo source collected
উত্তরাখণ্ডে রুদ্রপ্রয়াগ জেলার ত্রিযুগীনারায়ণ গ্রামে বিয়ে হয়েছিল তাঁদের। এই পৌরাণিক জনপদটি ছিল হিমালয় রাজার রাজধানী। এই বিবাহ দিয়েছিলেন স্বয়ং ব্রহ্মা। সেই দিনটি ছিল শিবরাত্রির পুণ্যলগ্ন।এ দিন দেশের বহু শিবমন্দিরে হরগৌরীর বিবাহের অনুষ্ঠান হয়। অনেক জেলাতেই শিবরাত্রিতে হরগৌরীর বিবাহ উৎসব না হলেও মেলা বসে এবং বিশেষ পুজো ও অনুষ্ঠান হয় এই দিনে।
photo source collected
শিবরাত্রির মাহাত্ম্য বিষয়ক ব্রতকথাটিও চমৎকার। সেখানে বলা হয়, বারাণসীতে এক ব্যাধ বাস করত। ব্যাধ এক দিন শিকার করতে গিয়ে আটকে পড়ে জঙ্গলে। গভীর রাত হয়ে গেলে ব্যাধ একটি বেল গাছে উঠে ঘুমিয়ে পড়ে। তার নীচে ছিল একটি শিবলিঙ্গ। রাতে তার নড়াচড়ার বেলপাতা আর শিশিরের জল পড়ে শিবলিঙ্গের মাথায়। সেটি ছিল মহাশিবরাত্রি। কিন্তু ব্যাধ এইসব কিছুই জানে না। সকাল হতেই শিকার নিয়ে বাড়ি চলে আসে। কিন্তু বাড়িতে তখন এক অতিথি। ব্যাধ নিজে না খেয়ে সেই অতিথিকে খাওয়াল। তার অজান্তেই শিবরাত্রি ব্রত সম্পূর্ণ হল। এরপর ব্যাধের মৃত্যু হলে তাঁর জায়গা হয় শিবলোকে। তাই বলা হয় ছেলে-মেয়ে সবাই শিব পুজোয় জল ঢাললে পাবেন ফল। এই পুজো ছেলেদের জন্যও।
photo source collected