Knowledge Story: সাপের মতোই বিষাক্ত...সারা শরীরজুড়ে বিষ! পৃথিবীর সবচেয়ে বিষধর এই পাখির নাম জানেন?
- Published by:Satabdi Adhikary
- news18 bangla
Last Updated:
দেখতে ছোট্ট মিষ্টি, নরম পালকে ঢাকা শরীর৷ আর কণ্ঠও অত্যন্ত সুরেলা৷ এই পাখিকে পৃথিবীর অন্যতম সিঙ্গিং বার্ডসের তালিকায় ফেলা হয়ে থাকে৷ দেখলে কেউ ঘুণাক্ষরেও কল্পনা করতে পারবেন না যে, এই পাখিই কিনা এতখানি বিষাক্ত৷ ছুঁলেই যাকে প্যারালইসড হয়ে যেতে পারে যে কোনও মানুষ৷ অন্যান্য জীব তো কোন ছাড়...
সাপ বিষাক্ত হয়, এ বোধহয় আমরা সবাই জানি৷ এমনকি, বিষধর নয়, এমন সাপকেও ভয় পেয়ে মেরে ফেলে অনেকেই৷ বিনা কারণে৷ এছাড়া, বিষাক্ত মাকড়সা, পোকা, এমনকি, বিষাক্ত গাছের কথাও আমরা বহু শুনেছি৷ কিন্তু, বিষাক্ত পাখি? পাখিও আবার কোনও দিন বিষাক্ত হয় নাকি? উত্তর হল হ্যাঁ৷ এই পৃথিবীতেই রয়েছে এমন অনেক পাখি, যারা অত্যন্ত বিষাক্ত৷ এই প্রতিবেদনে তেমনই এক বিষাক্ত পাখির কথা আলোচনা করব আমরা৷
advertisement
advertisement
দেখতে নিরীহ এই পাখির নাম হল হুডেড পিটোহুই (Hooded Pitohui)৷ পাপুয়া নিউ গিনিতে পাওয়া যায় বলে এই পাখিকে গিনি পিটোহুই নামেও ডাকা হয়ে থাকে৷ ভুলবশত এই পাখির ডানা স্পর্শ করলেই কয়েক মিনিটের মধ্যে পক্ষাঘাত এবং মৃত্যু হতে পারে যে কারও। এদের পালকে এবং ত্বকে থাকে বিষ৷ কিন্তু, সেই বিষ আসে কোথা থেকে? এই পাখিরাই কি সাপের মতো নিজের শরীরে বিষ তৈরি করে?
advertisement
পাপুয়া নিউ গিনির লোকজন এই পাখিকে Rubbish Bird বলে ডেকে থাকেন। কারণ, এটি পৃথিবীর সবচেয়ে বিষাক্ত পাখি। বার্ডস্পটের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৯৯০ সাল পর্যন্ত এই পাখিটি বিষাক্ত হওয়ার কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য ছিল না। ১৯৯০ সালে প্রথমবারের মতো, ক্যালিফোর্নিয়া অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্সেসের বাস্তুবিদ জ্যাক ডাম্বাচার আবিষ্কার করেছিলেন যে এটি অত্যন্ত বিষাক্ত।
advertisement
জ্যাক পাপুয়া নিউ গিনির হুডেড পিটোহুই নিয়ে গবেষণা করছিলেন। পাখিটিকে জাল থেকে ছাড়ার চেষ্টা করার সময় ভুলবশত তার হাত কেটে যায় এবং তারপরেই ক্ষতস্থানে শুরু হয় অসহ্য জ্বলুনি। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই অসাড় হতে শুরু করে গোটা হাত। জ্বালা এড়াতে জ্যাক ডাম্বাস কাটা জায়গার রক্ত মুখ দিয়ে শুষতে থাকেন৷ তাতে হয় হিতে বিপরীত৷ কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই তাঁর ঠোঁট ও জিভে শুরু হয় জ্বলুনি৷ তারপর তিনি অজ্ঞান হয়ে যান। তড়িঘড়ি তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া না হলে হয়ত জ্যাককে বাঁচানোই যেত না৷
advertisement
এর পরে জ্যাক ডাম্বসার বুঝতে পারেন যে, তিনি বিশ্বের প্রথম বিষাক্ত পাখি আবিষ্কার করে ফেলেছেন। এর পরে, ডাম্বসার দেখতে শুরু করেন পিটোহুইয়ের শরীরে কী কী রাসায়নিক রয়েছে যা এত বিষাক্ত। দু’ বছরের গবেষণার পরে, ১৯৯২ সালে তিনি আবিষ্কার করেন হুডেড পিটোহুইয়ের শরীরে থাকে ব্যাট্রাকোটক্সিন নামের এক রাসায়নিক৷ যা বিশ্বের সবচেয়ে মারাত্মক নিউরোটক্সিন। এই পাখির শরীরে, ত্বকে ও পালকে এই বিষ থাকে। কোবরার মধ্যেও পাওয়া যায় নিউরোটক্সিন, যা কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে একজন মানুষকে মেরে ফেলতে পারে।
advertisement
ScientificAmerican-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হুডেড পিটোহুই-এর মধ্যে যে বিষের সংমিশ্রণ পাওয়া যায়, কলম্বিয়ান গোল্ডেন ডার্ট ব্যাঙের মধ্যেও সেই একই বিষের মিশ্রণ পাওয়া যায়। গোল্ডেন ডার্ট ফ্রগ এতটাই বিপজ্জনক যে এটি একটি প্রাপ্তবয়স্ক হাতিকে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে মেরে ফেলতে পারে। বিজ্ঞানীদের মতে, ভুলবশত আপনি যদি হুডেড পিটোহুইকে স্পর্শ করেন বা সংস্পর্শে আসেন তবে এর বিষ সরাসরি স্নায়ু এবং পেশীতে আক্রমণ করে। প্রথমে পেশীগুলি অসাড় হয়ে যায়। বিষের মাত্রা বেশি হলে প্যারালাইসিস ও হার্ট অ্যাটাক হতে পারে। এমনকি কয়েক মিনিটের মধ্যে মৃত্যুও ঘটতে পারে।
advertisement