প্রয়াত ‘সুপার মম’ ৷ আরও একবার মাকে হারালেন মূক ও বধির ৷ ২০ বছর দেশে ফিরতে পেরেছিলেন যার জন্য সেই তো ছিলেন তাঁর মা ৷ পরিবার যখন অজানা ছিল তখন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজকেই মায়ের আসনে বসিয়েছিলেন মূক-বধির গীতা ৷ ভুল করে পাকিস্তানে চলে যাওয়া গীতাকে ভারতে ফেরত এনেছিলেন সুষমাই ৷ মঙ্গলবার রাতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে চলে গেলেন প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ ৷ আরও একবার মা-হারা হল গীতা ৷ সুষমার প্রয়াণের খবরে কান্নায় ভেঙে পড়লেন তিনি ৷
২০ বছর আগে পাকিস্তানের লাহোর স্টেশনে সমঝোতা এক্সপ্রেস থেকে মূক-বধির গীতাকে পেয়েছিলেন পাক রেঞ্জার্সরা ৷ কিন্তু সাত-আট বছরের মূক ও বধির এই মেয়েটি, সেই সময় তাঁর পরিচয় জানতে পারেনি সেদেশের পুলিশ ৷ শেষপর্যন্ত তাঁর ঠাঁই হয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন Edhi Foundation- এ ৷ পরে সুষমা স্বরাজের হস্তক্ষেপেই দীর্ঘ সময় পরে ঘরে ফিরতে সক্ষম হন গীতা ৷
ধুমধাম করে দেশে ফিরিয়ে আনা হয় গীতাকে ৷ কিন্তু, বিহারের যে পরিবার তাঁকে নিজেদের হারিয়ে যাওয়া মেয়ে বলে দাবি করেছিল, গীতা তাঁদের চিনতেই পারেননি। কিন্ত পরিবারকে চিনতে না পারলেও সে যে এ দেশের মেয়ে তাতে কোনও সন্দেহ নেই জানিয়েদেন তৎকালীন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ ৷ চিন্তিত মায়ের মতো মেয়েকে সংসারে স্থিতু করতে যোগ্য পাত্রেরও খোঁজ চালাচ্ছিলেন সুষমা ৷ আজ মায়ের মৃত্যুসংবাদ পেয়ে ইশারায় শোকবার্তা জানালেন গীতা ৷ হারালেন অভিভাবককে ৷
বিদেশমন্ত্রককে তিনি দিয়েছিলেন মানবিক মুখ। হয়ে উঠেছিলেন ভারতীয় রাজনীতির সুপার মম। তিনি রাজনীতিকে রাজনীতিতেই রাখতেন। রাজনৈতিক লড়াই কখনও ব্যক্তিগত সম্পর্কে প্রভাব ফেলত না। হঠাৎ ভারতীয় রাজনীতির সুষমা-অধ্যায়ের সমাপ্তি। তিনি তো বিদেশমন্ত্রী নন। তিনি সুপারমম। হ্যাঁ, ২০১৭ সালে সুষমা স্বরাজ সম্পর্কে এই বিশ্লেষণ ছিল মার্কিন দৈনিক ওয়াশিংটন পোস্টের।
ঠিক তাই, দায়িত্ব নিয়ে আম জনতার জন্য খুলে দিয়েছিলেন দক্ষিণের দরজা। মন্ত্রক আম মানুষের জন্য। দেশবাসীর কাছে বার্তা ছিল, একবার যোগাযোগ করুন। বাকি দায়িত্ব বিদেশমন্ত্রকের। তাই বিদেশমন্ত্রী নন, গত পাঁচ বছরে সুষমা স্বরাজ মানে কারোর বোন, কারোর দিদি, আবার কারোর মা। আজ সবাই বিহ্বল। তাই পরিবারের একজনকে হারিয়ে গীতার মতোই শোকার্ত সোনু, হামিদ আমেদ সহ অসংখ্য অনুগামী ৷ photo: Sushma Swaraj