ভারতের একেবারে দক্ষিণে অবস্থিত ধনুষকোড়ি নাকি ভুতুড়ে, বিকেল ৫টার পর থাকতে দেওয়া হয় না পর্যটকদের, জানুন অজানা কাহিনি
- Published by:Pooja Basu
- news18 bangla
Last Updated:
ভারতের একেবারে দক্ষিণে। মনোরম পরিবেশ এবং ভারত মহাসাগর ও বঙ্গোপসাগরের সংযোগস্থল ধনুষকোড়ি। তামিলনাড়ুর দক্ষিণে রামনাথপুরম জেলার একেবারে শেষপ্রান্ত এই ধনুষকোড়ি। এখান থেকে শ্রীলঙ্কার তালাইমান্নার এর দূরত্ব চব্বিশ কিলোমিটার। এটি আসলে পম্বন দ্বীপের শেষ সীমানা। পর্যটকদের জন্য দারুণ
ভ্রমণ পিপাসু বাঙালির সব সময়ই নতুন নতুন জায়গা বেড়াতে ইচ্ছে যায়। তাই কাজের ফাঁকে একটু অবসর মিললেই কখনও দল বেঁধে, আবার কখনও সপরিবারে বেরিয়ে পড়ে কোনও এক নতুন গন্তব্যে কটা দিন কাটিয়ে আসতে। এরকমই এক অসাধারণ গন্তব্য হতে পারে ভারতের একেবারে দক্ষিণে। মনোরম পরিবেশ এবং ভারত মহাসাগর ও বঙ্গোপসাগরের সংযোগস্থল ধনুষকোড়ি।
advertisement
তামিলনাড়ুর দক্ষিণে রামনাথপুরম জেলার একেবারে শেষপ্রান্ত এই ধনুষকোড়ি। এখান থেকে শ্রীলঙ্কার তালাইমান্নার এর দূরত্ব চব্বিশ কিলোমিটার। এটি আসলে পম্বন দ্বীপের শেষ সীমানা। ১৯৬৪ সালে এক ভয়াবহ সাইক্লোন তছনছ করে দেয় এই জায়গাটি৷ যার ফলে এখানে স্থায়ীভাবে কেউ বসবাস করে না। শোনা যায় এটি নাকি একটি ভুতুড়ে জায়গা। বিকেল পাঁচটার পর এখানে কোনও পর্যটককে থাকতে দেওয়া হয়না প্রশাসনের তরফে। রামেশ্বরম থেকে গাড়িতে করে যেতে মিনিট কুড়ি সময় লাগবে।তবে সেখান থেকে বাস সার্ভিসও রয়েছে। যে রাস্তাটি দিয়ে গাড়ি যায় সেই রাস্তা যেখানে ভারত মহাসাগরের তীরে এসে শেষ হচ্ছে সেটাই আসলে ধনুষকোড়ি। রাস্তাটির শেষে রয়েছে একটি গোল চক্কর যেখানে আপনাকে ইউ টার্ন নিতে হবে কারণ এটাই ভারতের শেষ ভূভাগ।
advertisement
রাস্তার শেষে মহাসাগর। এটিই হল ভারত মহাসাগর ও বঙ্গপোসাগরের সংযোগস্থল। রাস্তার বাঁ দিকে দেখতে পাবেন বঙ্গপোসাগর আর ডান দিকে ভারত মহাসাগর। বাঁ দিকের জলোচ্ছাস অনেকটাই সংযমী ঢেউ, ডানদিকে দেখবেন উত্তাল ঢেউ একের পর এক এসে আছড়ে পড়ছে তটে। তারই মাঝে একটা দুটো মাছ ধরার ভুটভুটি পেরিয়ে যাচ্ছে৷ কারণ অনেকেই এখানে সামুদ্রিক মাছ ধরে জীবণ যাপন করেন।সামনের দিকে তাকালে দূরে দেখতে পাবেন একটি ভূখণ্ড ভারত মহাসাগরের মধ্যে যা মূল ভূখণ্ডের থেকে বিচ্ছিন্ন।
advertisement
সমুদ্রের জলরাশির উন্মাদনা দেখার পর আপনি ফেরার পথে দেখতে পাবেন একটি টাওয়ার হাউস। এই টাওয়ারের পাশেই ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে এক সময়ের ধনুষকোড়ি শহরের ধ্বংসাবশেষ। দূর দূরন্ত যতখানি চোখ যাবে কোনও বসতি পাবেন না। তবে কিছু অস্থায়ী ফেরিওয়ালা অবশ্যই পাবেন আপনার আশেপাশে যারা সেখানে পানীয় শরবত অথবা ফল বিক্রি করছেন।এখানে সেরকম হোটেলের কোনও ব্যবস্থা নেই যেখানে খাবর পাবেন। তাই আপনাকে খাবার খেতে হবে রামেশ্বরম ফিরে গিয়েই। কয়েক কিলোমিটার ফেরার পথে কয়েকটি হোটেল পাবেন তবে তা সম্পূর্ণ দক্ষিণ ভারতীয় খাবারের জন্য। অবশ্য সামুদ্রিক মাছ খেতে চাইলে সেখানে পাবেন। তেল দিয়ে ফ্রাই করে পেঁয়াজ , লবন ও লেবু সহযোগে বাঙালীর রসনালাভ হতে পারে।
advertisement
এবার আপনার গন্তব্য রামেশ্বরম। রামেশ্বরমে এসে কিছু জায়গা বেড়াতে পারবেন। রয়েছে হিন্দুদের দ্বাদশ জ্যোতির্লিঙ্গের অন্যতম রামেশ্বরম মহাদেব।এখানে কিছুটা সময় কাটাতে পারবেন দক্ষিণ ভারতীয় চারুকলার বিশাল মন্দির দেখে। এরপর আপনি এখান থেকে অটো অথবা গাড়ি ভাড়া করে যেতে পারেন পম্বন ব্রিজ। এই পম্বন ব্রিজ একটি অতি রোমাঞ্চকর ব্রিজ। ১৯১৪ সালে ইংরেজ আমলে তৈরি এটিই ভারতের প্রথম সমুদ্রের ওপর তৈরি ব্রিজ যার দৈর্ঘ্য দু কিলোমিটারের একটু বেশি। বেশ খানিকটা জলের কাছাকাছি এই ব্রিজটি তাই ট্রেনে যাওয়ার সময় অদ্ভূত অনুভূতি পাওয়া যায় এখানে।এর ঠিক পাশেই একটি রোজ ব্রিজ তৈরি হয়েছে, যেখান থেকে দাঁড়িয়ে সমুদ্রের ওপর দিয়ে যাওয়া ট্রেন দেখতে পাবেন আপনি।
advertisement
এছাড়াও এই ব্রিজের বিপরীতে সমুদ্রে দেখা যাবে সারিবদ্ধভাবে ভুটভুটি মাছ ধরতে ব্যস্ত। আবার রে ব্রিজের পিছনের দিকে দেখা যাবে লাইট হাউস।এছাড়াও রামেশ্বরমে রয়েছে এ পি জে আব্দুল কালাম মেমোরিয়াল, রামের পাদুকা, বিভীষণ মন্দির, কালামের বাড়ি যা বর্তমানে একটি মার্কেটের রূপ নিয়েছে। এখানে পাবেন রামায়ণে বর্নিত পঞ্চমুখী হনুমান।মোটের ওপর দুই থেকে তিন দিনের প্য়াকেজ ট্য়ুর করলেই যথেষ্ঠ।
advertisement
কীভাবে যাবেন?চেন্নাই মহানগরীর এগমোর রে স্টেশন থেকে ট্রেনযোগে যেতে পারেন রামেশ্বরম। সন্ধে সাতটায় এগমোর রামেশ্বরম এক্সপ্রেস রয়েছে যা সকাল আটটা নাগাদ পোঁছে দেবে রামেশ্বরম। এছাড়াও বিমানে যেতে পারেন চেন্নাই আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর, সেখান থেকে গাড়ি ভাড়া করে যেতে পারেন রামেশ্বরম৷ হাজার চারেক টাকা খরচ করে অথবা বাস যোগেও যাওয়া যায়, সেক্ষেত্রে আড়াইশো টাকা ভাড়া জনপ্রতি। সব মিলিয়ে এক জমজমাট ডেস্টিনেশন হতে পারে ভ্রমণ পিপাসুদের জন্য।