Travel Plan Bankiput Sea Beach: জীবনের গুরুত্বপূর্ণ ছুটি যেখানে-সেখানে কাটাবেন না! ঘুরে আসুন বাঁকিপুট, খুব কাছে-খুব কম খরচে, জানুন
- Published by:Raima Chakraborty
- hyperlocal
- Reported by:Madan Maity
Last Updated:
Travel Plan Bankiput Sea Beach: দিঘার কোলাহল ছেড়ে প্রিয়জনের সঙ্গে নিরিবিলি সময়ের আদর্শ ঠিকানা বাঁকিপুট! একবার গেলে ফিরে আসতে ইচ্ছে করবে না...
দিঘা মানেই ভিড়, কোলাহল, বাজারের হইচই, কিন্তু এর বাইরে যদি আপনি চান সমুদ্রের ধারে শান্ত, নিরিবিলি একদিন কাটাতে, তাহলে বাঁকিপুটই হতে পারে আপনার গন্তব্য। পূর্ব মেদিনীপুরের এই ছোট্ট সমুদ্রতীরবর্তী গ্রামটি এখনও দিঘার মতো পর্যটনকেন্দ্রে পরিণত হয়নি। এখানে নেই অসংখ্য দোকানপাট, রঙিন আলো বা হোটেলের ব্যস্ততা। বরং আছে বিস্তীর্ণ বালুকাবেলা, ঢেউয়ের একটানা গর্জন, আর কাসুয়ারিনা গাছের ছায়া। যারা প্রকৃতিকে নিরিবিলি উপভোগ করতে চান, তাদের জন্য বাঁকিপুট এক অমূল্য স্থান। (ছবি ও তথ্য : মদন মাইতি)
advertisement
কলকাতা থেকে দীঘাগামী যে কোনও বাসে উঠে কিংবা ট্রেনে এসে কাঁথিতে নামতে হবে। কাঁথির জুনপুট মোড় দিয়ে ট্রেকার কিংবা অটোয় জুনপুট হয়ে বাঁকিপুটে আসা যায়। আবার রসুলপুর মোড় থেকে অটো কিংবা ট্রেকারে মুকুন্দপুর হয়ে বাঁকিপুটে আসা যায়। বাঁকিপুট চলে এলে সেখান থেকে দারিয়াপুরের বঙ্কিম স্মৃতিধন্য এলাকা, পেটুয়াঘাট বন্দর কিংবা হিজলির মসনদ-ই-আলার মাজার, সব জায়গায় যাওয়া যাবে। দিঘা থেকে বাঁকিপুটের দূরত্ব প্রায় ১৬–১৭ কিলোমিটার। দিঘার কুশলপুর মোড় থেকে অটো, ভ্যান বা ছোট গাড়ি ভাড়া করে বাঁকিপুট পৌঁছানো যায় ৩০–৪০ মিনিটে। পথের দু’পাশে রয়েছে সমুদ্রের আভাস, মাছ ধরার নৌকা আর কাসুয়ারিনা বনের মনোরম দৃশ্য, যা যাত্রাপথকে আরও উপভোগ্য করে তোলে।
advertisement
বাঁকিপুটে পর্যটকদের থাকার জন্য এখনো খুব বড় হোটেল গড়ে ওঠেনি, তবে আছে কিছু পরিচ্ছন্ন হোমস্টে ও ছোট লজ। গোপালপুর এলাকার সৈকতের কাছেই কয়েকটি লজ রয়েছে যেখানে সাধারণ কিন্তু আরামদায়কভাবে থাকা যায়। রুম ভাড়া তুলনামূলকভাবে কম, তাই কম বাজেটে এখানে রাত কাটানো সহজ। কিছু হোমস্টেতে সাগরের একেবারে ধারে বসে সূর্যোদয় দেখা যায়, যা অনেকের কাছে এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা।
advertisement
এখানে আসার পর প্রথমেই ঘুরে দেখবেন ব্রিটিশ আমলের পুরনো লাইটহাউস, যা এখন ঐতিহাসিক নিদর্শন। লাইটহাউসের আশপাশের সৈকত ঢেউয়ের ধাক্কা থেকে রক্ষা পেতে পাথর দিয়ে বাঁধানো, যা দেখতে দারুণ লাগে। এছাড়া রয়েছে বিস্তীর্ণ কাসুয়ারিনা বন, যেখানে শান্ত পরিবেশে হাঁটাহাঁটি করে সময় কাটানো যায়। যারা ফটোগ্রাফি পছন্দ করেন, তাদের জন্য এখানে সূর্যাস্ত ও সমুদ্রের ছবি তোলার অসাধারণ সুযোগ রয়েছে।
advertisement
বাঁকিপুটের খাবারের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল তাজা সি-ফুড। স্থানীয় ঝুপড়ি রেস্তোরাঁয় সদ্য ধরা মাছ, চিংড়ি, কাঁকড়া নারকেলের দুধে বা মশলাদার কারিতে রান্না করে পরিবেশন করা হয়। দিঘা থেকে বাঁকিপুট একদিনে ঘুরে আসতে চাইলে যাতায়াত, খাবার ও অন্যান্য খরচ মিলিয়ে জনপ্রতি প্রায় ৮০০–১০০০ টাকায় সফর শেষ করা সম্ভব। যদি রাত কাটাতে চান, তবে হোমস্টের ভাড়া ও অতিরিক্ত খাবারের খরচ যোগ হবে।
advertisement
এক পর্যটক শ্রীমা মন্ডল সেন বললেন, "দিঘায় অনেকবার এলেও বাঁকিপুটে প্রথমবার। এখানে এসে মনে হল, সমুদ্রকে যেন নতুনভাবে দেখছি, চারপাশে শুধু ঢেউয়ের শব্দ, বাতাসের গন্ধ, আর চোখের সামনে অন্তহীন বালুকাবেলা। রাতে হোমস্টেতে বসে লাইটহাউসের আলো আর দূরের জাহাজের ঝিকিমিকি দেখতে দেখতে সময় কেটে গেল। আমি মনে করি, যে কেউ দিঘায় এলে অন্তত একদিনের জন্য বাঁকিপুটে আসা উচিত।"