বর্ষার দাপটে ছাদে ড্যাম্প ধরে নাজেহাল দশা? সহজ এবং সস্তার এই ঘরোয়া টোটকাগুলি অবলম্বন করে দেখুন, চোখের নিমেষে দূর হবে সমস্যা
- Published by:Siddhartha Sarkar
- local18
Last Updated:
ড্যাম্প ধরার সমস্যার সমাধান করার জন্য ঘরোয়া কিছু টোটকা ব্যবহার করা যেতে পারে। তা-ও একেবারে সস্তায়। তাহলে আজকের প্রতিবেদনে সেই সস্তার কার্যকর উপায়গুলি সম্পর্কে আলোচনা করে নেওয়া যাক।
Report- Sanjay Yadav: দেশ জুড়ে চলছে বর্ষার দাপট। অনেক জায়গাই অতি বৃষ্টির কারণে জলের তলায় চলে গিয়েছে। এদিকে বর্ষার মরশুম শুরু হতে না হতেই প্রায় প্রতিটি বাড়িতে নানা রকম সমস্যা দেখা দেয়। এর মধ্যে অন্যতম হল - ছাদ স্যাঁতস্যাঁতে হয়ে যাওয়া বা ড্যাম্প ধরা। যার জেরে শুধু ঘরের দেওয়ালই ক্ষতিগ্রস্ত হয় না, এর পাশাপাশি ছাদের ক্ষমতাও দুর্বল হয়ে যেতে শুরু করে। আর ড্যাম্প ধরার কারণে বাড়িতে ফাঙ্গাস জন্মাতে থাকে এবং ঘরের মধ্যে দুর্গন্ধও ছড়িয়ে পড়ে। এই সমস্যার সঙ্গে মোকাবিলা করার জন্য বাজারে নানা দামি রাসায়নিক এবং প্রফেশনাল ওয়াটারপ্রুফিং পরিষেবা পাওয়া যায়। কিন্তু সকলের বাজেটে তা অবশ্য কুলোয় না। এই পরিস্থিতিতে ড্যাম্প ধরার সমস্যার সমাধান করার জন্য ঘরোয়া কিছু টোটকা ব্যবহার করা যেতে পারে। তা-ও একেবারে সস্তায়। তাহলে আজকের প্রতিবেদনে সেই সস্তার কার্যকর উপায়গুলি সম্পর্কে আলোচনা করে নেওয়া যাক।
advertisement
ছাদে ড্যাম্প ধরার একাধিক কারণ রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হল - ছাদে জল জমে যাওয়া, ক্র্যাক বা চিড় ধরা, খারাপ ওয়াটারপ্রুফিং ইত্যাদি। অনেক সময় আবার ছাদের ঢাল ঠিকঠাক না থাকার কারণেও জল জমে এমনটা হয়ে পারে। ফলে এহেন পরিস্থিতিতে ধীরে ধীরে বাড়ির ছাদ বা দেওয়াল দিয়ে চুঁইয়ে চুঁইয়ে জল ঢুকতে শুরু করে। তার ফলে ঘরের দেওয়ালের প্লাস্টারের পলেস্তারা খসে যেতে থাকে, রঙ করা থাকলে সেই রঙও নষ্ট হয়ে যায়। এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকে ফাঙ্গাসের উপদ্রবও। এই পরিস্থিতি সামাল দিতে ছাদকে সম্পূর্ণ রূপে ওয়াটারপ্রুফ এবং ড্যাম্পপ্রুফ করা আবশ্যক।
advertisement
তাহলে সেক্ষেত্রে কী করণীয়? এর জন্য সবার প্রথমে ছাদটা ভাল করে পরিষ্কার নিতে হবে। এর মধ্যে জমা হওয়া ধুলো এবং শ্যাওলা পরিষ্কার করে নিতে হবে। ছাদের কোথাও প্লাস্টার আলগা হয়ে পলেস্তারা খসলে সেটাকেও পরিষ্কার করতে হবে। যদি ছাদের মধ্যে বড়সড় ক্র্যাক থাকে, তাহলে সেটা সিমেন্ট অথবা ওয়াটারপ্রুফিং উপাদান দিয়ে মেরামত করে নিতে হবে। এবার উড চারকোলের টুকরো নিয়ে তা মিহি করে গুঁড়ো করে নিতে হবে। এর জন্য পুরনো মিক্সার গ্রাইন্ডারও ব্যবহার করা যেতে পারে।
advertisement
এবার একটা বড় পুরনো বালতি নিয়ে তার মধ্যে চুন ভরতে হবে। এরপর সেই চুনের মধ্যে গুঁড়ো করে রাখা চারকোল যোগ করতে হবে। ধীরে ধীরে এই মিশ্রণের মধ্যে জল দিতে হবে। একটি শক্ত লাঠি বা রড দিয়ে মিশ্রণটিকে ভাল ভাবে মিশিয়ে নিতে হবে। এবার দেখা যাবে, ওই মিশ্রণটি এতটাই ঘন হয়ে গিয়েছে যে, সেটিকে রঙের মতো ছাদের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়া যাবে। তবে মিশ্রণে যেন কোনও ডেলা না থাকে, সেদিকে নজর দিতে হবে। এবার সমান ভাবে গোটা ছাদের উপর ওই মিশ্রণ ছড়িয়ে দিতে হবে। এর জন্য পুরনো ওয়াইপার অথবা ঝাঁটা ব্যবহার করা যেতে পারে। ছাদের উপর ওয়াটারপ্রুফিংয়ের কাজ করবে এই মিশ্রণটি। যা ড্যাম্পের হাত থেকে ছাদকে বাঁচাবে।
advertisement
এই মিশ্রণটি এবার শুকিয়ে নেওয়ার জন্য ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হবে। আসলে এই শুকিয়ে যাওয়ার বিষয়টা আবহাওয়ার উপর নির্ভর করে। ভাল ফল পাওয়ার জন্য রোদ আছে এমন দিনেই এই কাজ করা উচিত। যদি দেখা যায় যে, প্রথম আস্তরণটা পাতলা হয়ে গিয়েছে অথবা ড্যাম্পের সমস্যাটা গুরুতর, তাহলে সেক্ষেত্রে আরও একটি কোট বা লেয়ার দিতে হবে। তবে প্রথম কোটটি সম্পূর্ণ শুকিয়ে যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করে তবেই দ্বিতীয় কোটটি দিতে হবে। এমনকী এতে ওয়াটারপ্রুফিংয়ের প্রভাব হবে আরও মজবুত।
advertisement
ফলে বোঝাই যাচ্ছে যে, ছাদের ড্যাম্প ধরার সমস্যা প্রতিরোধ করার জন্য চুন এবং চারকোলের মিশ্রণের কোটিং দেওয়ার প্রক্রিয়া খুবই সহজ এবং কার্যকর। শুকিয়ে যাওয়ার পর চুন শক্ত হয়ে যায়। তা একটা ওয়াটারপ্রুফ লেয়ার তৈরি করবে। ফলে ফাঙ্গাস এবং শ্যাওলাও জন্মাতে পারে না। আবার এদিকে আর্দ্রতা শুষে নেওয়ার দারুণ ক্ষমতা রয়েছে চারকোলের। আর চুনের সঙ্গে সেটা মিশলে এর কার্যকারিতা কয়েক গুণ বেড়ে যায়। ঘরে তৈরি এই মিশ্রণ শুধু ড্যাম্প ধরার সমস্যাই দূর করে না, তার সঙ্গে ছাদের ক্ষমতা এবং স্থায়িত্ব বৃদ্ধি করে।