মাত্র ২ মাসে ১৭ কেজি ওজন ঝরিয়েছেন ক্রিকেটার সরফরাজ খান ! আর তাঁর সেই ওয়েট লসের রহস্য লুকিয়ে রয়েছে গ্রিন কফিতেই, এই বিশেষ পানীয়টি আসলে কী?
- Published by:Siddhartha Sarkar
Last Updated:
Green Coffee Benefits: সম্প্রতি নিজের ওয়েট লস জার্নির কথা ইনস্টাগ্রামে তুলে ধরেছিলেন সরফরাজ খান। একাধিক রিপোর্টে দাবি করা হচ্ছে যে, তিনি মাত্র ২ মাসের মধ্যে ১৭ কেজি ওজন ঝরিয়ে ফেলেছেন।
কিছু কিছু মানুষের ওয়েট লস জার্নি বা ট্রান্সফরমেশন উল্লেখ করার মতোই! মাত্র ২ মাসের মধ্যেই ১৭ কেজি ওজন ঝরিয়ে ফেলেছেন তরুণ ক্রিকেট তারকা সরফরাজ খান। এই কথা প্রকাশ্যে আসতেই এ নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে। সম্প্রতি নিজের ওয়েট লস জার্নির কথা ইনস্টাগ্রামে তুলে ধরেছিলেন সরফরাজ খান। একাধিক রিপোর্টে দাবি করা হচ্ছে যে, তিনি মাত্র ২ মাসের মধ্যে ১৭ কেজি ওজন ঝরিয়ে ফেলেছেন। এদিকে ২৭ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার নিজেও একটি ছবি ভাগ করে নিয়েছেন। তা থেকেই স্পষ্ট যে, প্রতিবেদনে যা যা দাবি করা হয়েছে, সেগুলি সত্য! কিন্তু এত কম সময়ে কী করে ওজন কমালেন সরফরাজ?
advertisement
এক্সারসাইজের পাশাপাশি কঠোর ডায়েট মেনে চলেছেন এই ক্রিকেটার। হিন্দুস্তান টাইমসের এক সাক্ষাৎকারে এহেন দাবি করেছেন তাঁর বাবা। HT-র কাছে নৌশাদ বলেন যে, আমরা আমাদের ডায়েট দারুণ ভাবে নিয়ন্ত্রণ করেছি। আমরা রুটি কিংবা ভাত বাদ দিয়ে দিয়েছিলাম। প্রায় এক থেকে দেড় মাস আমাদের বাড়িতে রুটি কিংবা ভাত হয়নি। আমরা ব্রোকোলি, গাজর, শসা, স্যালাড এবং সবুজ শাকসবজির স্যালাড বেশি খেয়েছি। এর পাশাপাশি গ্রিলড ফিশ, গ্রিলড চিকেন, সেদ্ধ করা চিকেন, সেদ্ধ ডিম ইত্য়াদি খেয়েছি। এছাড়া গ্রিন টি আর গ্রিন কফিই পান করেছি। তিনি আরও বলেন যে, আমরা অ্যাভোক্যাডো খেয়েছি। এর পাশাপাশি পাতে থাকত স্প্রাউটসও। কিন্তু সবথেকে প্রধান বিষয় হল - আমরা ভাত-রুটি বন্ধ করে দিয়েছিলাম। এমনকী চিনিও ত্যাগ করেছিলাম। ময়দা এবং বেকারির খাবারও বন্ধ ছিল। ফলে বোঝাই যাচ্ছে যে, কতটা কড়া ডায়েট মেনেছেন সরফরাজ। তবে তাঁর ডায়েটের সবথেকে বিশেষ দিক হল - গ্রিন কফি।
advertisement
এটি আসলে কী? সেটাই জেনে নেওয়া যাক। গ্রিন কফি কী? গ্রিন কফি হল এমন কফি বিন, যা একেবারে কাঁচা এবং আনরোস্টেড অবস্থায় থাকে। এই ধরনের কফি বিনের রঙ সাধারণ ভাবে সবজেটে প্রকৃতির হয়। যেহেতু এই কফি বিনকে রোস্টিং প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যেতে হয় না, তাই এই ট্র্যাডিশনাল কফিতে আসে গাঢ় রঙ এবং সিগনেচার ফ্লেভারও। আর আনরোস্টেড হওয়ার কারণে গ্রিন কফি বিনে উচ্চমাত্রায় থাকে নির্দিষ্ট যৌগ - বিশেষ করে ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড। এর একাধিক স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে। প্রসঙ্গত, স্বাদ এবং গন্ধ যাতে আসে, তার জন্য রোস্ট করা হয় কফি বিনকে। যেটা কাঁচা গ্রিন কফি বিনে পাওয়া যাবে না।
advertisement
গ্রিন কফির ইতিহাসের জন্য ফিরে যেতে হবে প্রাচীন ইথিওপিয়ায়। আসলে সেখানে কালদি নামে পেশায় একজন ছাগল প্রতিপালনকারী এই গ্রিন কফির উত্তেজক প্রভাব আবিষ্কার করেছিলেন বলে শোনা যায়। সেখান থেকেই গ্রিন কফি পৌঁছে গিয়েছিল ইয়েমেনে। আর সেখানে সুফি মনীষীরা প্রার্থনার সময় জেগে থাকার জন্য গ্রিন কফি ব্যবহার করে শক্তিশালী ভেষজ পানীয় তৈরি করেছিলেন। রোস্ট করার প্রক্রিয়াটা অবশ্য এসেছিল অনেক বছর পরে প্রায় ত্রয়োদশ শতাব্দী নাগাদ। এদিকে ষোড়শ শতাব্দীতে কফি ইউরোপে পৌঁছনোর পর এটি আরও জনপ্রিয়তা লাভ করেছিল।
advertisement
তবে যদিও রোস্টেড কফি সারা বিশ্বে স্থান করে নিয়েছে। তবুও গ্রিন কফি কিন্তু একটা জায়গাতেই কেবল আটকে রয়েছে। বর্তমানে বেশ কয়েকটি ভারতীয় ব্র্যান্ড গ্রিন কফির হোল বিন এবং গুঁড়ো নির্যাস উভয়ই বিক্রি করে থাকে। এমনকী কিছু কিছু সংস্থা আবার রেডি-টু-ব্রিউ স্যাশে অথবা ক্যাপসুলও বিক্রি করছে। গ্রাহকরা অনলাইনে এবং হেলথ ফুড স্টোরে পেয়ে যাবেন এগুলি। গুণমান এবং পরিমাণের উপর ভিত্তি করে নির্ধারিত হয় এর দাম। মোটামুটি ৩০০ টাকা থেকে ১৫০০ টাকার মধ্যে সাধারণত মেলে গ্রিন কফি।
advertisement
গ্রিন কফি কি ওজন কমাতে সহায়ক? আসলে ওয়েট লস বা ওজন ঝরানোর জন্য কোনও ম্যাজিক পিল নেই। কিন্তু এ বিষয়ে কিছু প্রতিশ্রুতি দিতে পারে গ্রিন কফি। একাধিক গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, গ্রিন কফি এবং এর নির্যাস মোটামুটি ভাল ওজনই ঝরাতে সহায়ক হয়ে উঠতে পারে। যা মেটাবলিক স্বাস্থ্য এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপযোগিতা প্রদান করে। যদিও এটা চমকপ্রদ কোনও পন্থা নয়, তবে এর জন্য আরও বেশি বেশি গবেষণার প্রয়োজন।
advertisement
বর্তমান গবেষণা থেকে কী কী জানা গিয়েছে? ১. গ্রিন কফি ওজন ঝরানোর ক্ষেত্রে সাহায্য করতে পারে। ২. কার্ডিওমেটাবলিক উন্নতিতে সহায়ক হতে পারে এটি। ২০২১-এ প্রকাশিত একটি সিস্টেমেটিক রিভিউতে দেখা গিয়েছে, ব্লাড প্রেশার, কোলেস্টেরল, ট্রাইগ্লিসারাইড এবং ফাস্টিং গ্লুকোজের মাত্রা কমানোর ক্ষমতা রয়েছে এর। ৩. গ্রিন কফির মধ্যে রয়েছে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বা প্রদানবিরোধী উপাদান। ৪. গ্রিন কফিতে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ত্বককে সুস্থ রাখে। আসলে এই অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ধর্মী উপাদান কোলাজেন বুস্ট করে এবং ইনফ্লেমেশন কমায়। ফলে বয়সের ছাপ পড়া রোধ করে।