

ঈশপের গল্পের যে শেয়াল আঙুরের থোকা পর্যন্ত পৌঁছতে পারেনি, তার দুঃখ কোনও দিন ঘুচবে না। কিন্তু তাই বলে আপনিও আঙুরফল টক বলে একে দূরে সরিয়ে রাখবেন না। নতুন গবেষণা বলছে যে আঙুরে যেহেতু পলিফেনলস থাকে, তাই এই ফল সানবার্ন বা রোদে পোড়া ভাব এবং অতি বেগুনি রশ্মির প্রভাব রোধ করতে পারে।


জার্নাল অফ আমেরিকান অ্যাকাডেমি অফ ডারমাটোলজিতে প্রকাশিত এই গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে যে যেসব ব্যক্তি এই সমীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিলেন, তাঁদের রোদে পোড়া ভাব আটকে দেওয়ার ক্ষমতা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। বৃদ্ধি পেয়েছে তাঁদের কোষে ইউভি রশ্মি রোধ করার ক্ষমতাও। এটা সম্ভব হয়েছে কারণ এঁরা আঙুর জাতীয় ফল খেয়েছেন নিয়ম করে।


আমেরিকার বার্মিংহাম আলাবামা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ক্রেইগ এলমেট বলেছেন যে আঙুর আসলে একটি ভক্ষণযোগ্য সানস্ক্রিন। এমনিতে মুখে যে সানস্ক্রিন লাগানো হয়, আঙুর খেলে তার উপরে আরও একটি বাড়তি সুরক্ষার স্তর তৈরি হয়ে যায়। ক্রেইগ এই গবেষণার মূল কাণ্ডারী। ২.২৫ কাপ আঙুরের সমান আঙুরের পাউডার টানা ১৪ দিন খেলে সেটা ইউভি রশ্মির ক্ষতিকর প্রভাব আটকাতে কতটা সক্ষম, তা এই গবেষণায় দেখা হয়েছে।


এই সমীক্ষায় যাঁরা অংশগ্রহণ করেছিলেন তাঁদের আলাদা করে দুইবার পরীক্ষা করা হয়েছে। প্রথমে আঙুর খাওয়ার আগের পর্যায়ে দেখা হয়েছে ইউভি রশ্মি তাঁদের ত্বকে ঠিক কতটা ক্ষতি করেছে। এই সব ব্যক্তিদের প্রথমে এরিথেমার সামান্য ডোজ দেওয়া হয়েছিল। এটা দেওয়ার জন্য এই সব ব্যক্তিদের ত্বকে লাল ভাব দেখা যায়। সামান্য ইউভি রেডিয়েশনে এই লালভাব আরও বেড়ে যায়। দ্বিতীয় পর্যায়ে দুই সপ্তাহ আঙুর খাওয়ার পর আবার পরীক্ষা করা হয়।


দুই সপ্তাহ পর দেখা যায় যে আঙুর খাওয়ার জন্য এই সব ব্যক্তিদের ৭৪.৮% ইউভি রশ্মি প্রতিরোধক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে। এই সব ব্যক্তিদের ত্বকের থেকে নমুনা নিয়ে বায়োপ্সি করা হয়। দেখা যায় যে আঙুর খাওয়ার জন্য ত্বকের ডিএনএ-র ক্ষতি অনেক কম হয়েছে।