ঐতিহ্যবাহী চাষের বদলে ফুল চাষে ব্যাপক আগ্রহী রাজস্থানের ভরতপুরের কৃষকরা। গত কয়েক বছর ধরেই এমনটা চলছে। ভারতে এমনিতেই ফুল চাষ ব্যাপক জনপ্রিয়। তবে সবচেয়ে বেশি চাষ হয় গাঁদা ফুলের। ফুলচাষীদের কথায়, ব্যাপক হারে গাঁদা চাষের প্রধান কারণ কম খরচে বেশি লাভ। শুধু তাই নয়, অন্যান্য ফুল চাষের তুলনায় এটা চাষ করাও সহজ।
চার হেক্টর জমিতে গাঁদা চাষ করে লাখ লাখ টাকা আয়: কৃষক যমুনালাল মীনা জানান, আগে তিনি গম এবং সরষে চাষ করতেন। দুই বছর আগে এক বন্ধুর পরামর্শে প্রায় চার হেক্টর জমিতে গাঁদা চাষ করেন। গাছ লাগানোর ৩ মাস পর ফুল আসতে শুরু করে। বছরে ১০ থেকে ১২ বার ফুল আসে এবং এক হেক্টরে প্রায় ১৫ টন ফুল ফোটে। তাঁর কথায়, ‘এই ফুল চাষে কম পরিশ্রমে বেশি লাভ করা যায়। অনেক ব্যবসায়ী সরাসরি খামার থেকে ফুল কিনে যায়। বিবাহ ও উৎসবের মরশুমে ফুলের দাম প্রতি কেজি ৩০০ টাকা পর্যন্ত পৌঁছে যায়। কেজি প্রতি ১০০ থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত লাভ হয়। সঙ্গে তিনি যোগ করেন, ‘বছরে ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকা আয় হয়’।
জৈব সার ব্যবহার: গাঁদা ফুল চাষে রাসায়নিক সারের পরিবর্তে জৈব সার ব্যবহার করেন যমুনালাল মীনা। এই সার ব্যবহার করলে ফসলের উৎপাদন বাড়ে। তবে আরও বেশি উৎপাদনের জন্য অধিকাংশ কৃষক রাসায়নিক সার ব্যবহার করেন। কিন্তু এর কুপ্রভাব আছে। ফসল বিষাক্ত হওয়ার পাশাপাশি মাটির উর্বরতা কমে যায়। গাঁদা ফুল শুধু পুজো, বিবাহ বা উৎসবে নয়, ওষুধ তৈরিতেও ব্যবহৃত হয়। আসলে গাঁদা ফুলের পাতায় রয়েছে ঔষধিগুণ। সেটাকেই কাজে লাগায় ওষুধ এবং তেল কোম্পানিগুলো। তাই সারা বছরই চাহিদা থাকে। একথা মাথায় রাখেই গত ২ বছর ধরে জৈব সার ব্যবহার করেই গাঁদা ফুলের চাষ করছেন যমুনালাল মীনার মতো ভরতপুরের অনেক কৃষকই। তাঁরা নিজেরাই বলছেন, ‘আমাদের জীবন বদলে গিয়েছে’।