‘কোনও রেড ফ্ল্যাগ ছিল না, বিমানের একটা ইঞ্জিন ছিল একদম নতুন, অপরটির সার্ভিস করানো হয়েছিল ২০২৩ সালে...’, দুর্ঘটনা নিয়ে নীরবতা ভাঙলেন টাটা চেয়ারম্যান চন্দ্রশেখরন
- Published by:Siddhartha Sarkar
Last Updated:
Tata Group Chairman N Chandrasekaran: বিশেষজ্ঞরা এখন এই বিমান দুর্ঘটনার জন্য যে নতুন তত্ত্বকে দায়ী করছেন তার নাম ‘এয়ার লক’।
আহমেদাবাদে এয়ার ইন্ডিয়ার Boeing 787-8 Dreamliner বিমানের দুর্ঘটনা সমগ্র বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। বিশ্বের সমস্ত বিমান বিশেষজ্ঞরা এখন এই দুর্ঘটনার আসল কারণ খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন। এখন পর্যন্ত প্রকাশিত ফুটেজ এবং তথ্য দেখার পর বেশিরভাগ বিশেষজ্ঞ পাখির সঙ্গে ধাক্কা এবং ল্যান্ডিং গিয়ারের সমস্যার কারণে বিমান দুর্ঘটনার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়েছেন। বিশেষজ্ঞরা এখন এই বিমান দুর্ঘটনার জন্য যে নতুন তত্ত্বকে দায়ী করছেন তার নাম ‘এয়ার লক’। কোনও ‘রেড ফ্ল্যাগ ছিল’ না, একটা ইঞ্জিন নতুন ছিল, অপরটি সার্ভিস করানো হয়েছিল ২০২৩ সালে, সাক্ষাৎকারে বললেন টাটা গ্রুপের চেয়ারম্যান চন্দ্রশেখরন (Chairman of Tata Sons and Air India) ৷
advertisement
বিমান চলাচলের ক্ষেত্রে এয়ার লক হল এমন একটি পরিস্থিতি যেখানে বিমানের ইঞ্জিন বা জ্বালানি পাইপলাইনের মধ্যে বাতাসের বুদবুদ আটকে যায়। বাতাসের বুদবুদ আটকে যাওয়ার কারণে ইঞ্জিন এবং হাইড্রোলিক সিস্টেমে জ্বালানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে যায়, যা বিমানের কর্মক্ষমতাকে প্রভাবিত করে। এই বুদবুদ জমা জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ করে দেয়, যার কারণে ইঞ্জিন শক্তি পায় না। এর ফলে, বিমানটি থ্রাস্ট পায় না এবং উপরে যাওয়ার পরিবর্তে এটি নীচে পড়তে শুরু করে। বোয়িং ৭৮৭-এর মতো একটি বিমানে দুটি ইঞ্জিন থাকে এবং এটি একটি ইঞ্জিনেও উড়তে পারে। কিন্তু যদি দুটি ইঞ্জিনেই জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে দুর্ঘটনা ঘটবেই।
advertisement
আহমেদাবাদ দুর্ঘটনায় কী ঘটেছিল? ২০২৫ সালের ১২ জুন, এয়ার ইন্ডিয়ার বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার, ফ্লাইট এআই-১৭১, আহমেদাবাদ থেকে লন্ডনের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছিল। কিন্তু উড়ানের মাত্র ৩৬ সেকেন্ড পরেই বিমানটি একটি মেডিকেল কলেজ হোস্টেলের সঙ্গে ধাক্কা খায়, যার ফলে ২৪১ জন যাত্রী এবং ক্রু সদস্য-সহ ২৭০ জনেরও বেশি লোক নিহত হয়। তদন্তে জানা গিয়েছে যে বিমানটি 'মেডে' কল করেছিল, যা জরুরি অবস্থার ক্ষেত্রে করা হয়। কিছু বিশেষজ্ঞ বিশ্বাস করেন যে এয়ার লক এই দুর্ঘটনার একটি সম্ভাব্য কারণ হতে পারে।
advertisement
কীভাবে একটি এয়ার লক তৈরি হয়? রক্ষণাবেক্ষণের সময় যদি বিমানের জ্বালানি ট্যাঙ্ক বা পাইপলাইনে বাতাস আটকে যায়, তাহলে এটি এয়ার লক তৈরি করতে পারে। এছাড়াও, যদি জ্বালানি সিস্টেমে বাতাসের বুদবুদ থেকে যায়, তাহলে ইঞ্জিনে জ্বালানি সরবরাহ ব্যাহত হতে পারে। এর ফলে ইঞ্জিনের শক্তি কমে যেতে পারে অথবা এটি সম্পূর্ণরূপে কাজ করা বন্ধ করে দিতে পারে। এয়ার লকই দুর্ঘটনার কারণ কি না, তা এখনও তদন্তসাপেক্ষ। জানা গিয়েছে যে এই দুর্ঘটনার প্রাথমিক তদন্তের রিপোর্ট ৩০ দিনের মধ্যে আসবে। পরবর্তী যে পদক্ষেপই নেওয়া হোক না কেন, সেই ভিত্তিতেই তা নেওয়া হবে। অন্য দিকে, এয়ার ইন্ডিয়া বিমান দুর্ঘটনার বিষয়ে অবশেষে নীরবতা ভাঙলেন টাটা সন্সের চেয়ারম্যান এন. চন্দ্রশেখরন।
advertisement
বুধবার টাইমস নাও-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘‘আমাদের বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনার ভাল অবস্থায় ছিল, এতে কোনও রক্ষণাবেক্ষণের সমস্যা ছিল না এবং কোনও রেড ফ্ল্যাগও ছিল না।" তিনি বলেন, "আমি নিজেই সমস্ত রেকর্ড পরীক্ষা করেছি- বিমান, ইঞ্জিন, পাইলট, সব কিছু ঠিকঠাক ছিল।’’ তিনি আরও বলেন যে এই দুর্ঘটনা এতটাই বেদনাদায়ক যে তাঁর হৃদয় ভেঙে গিয়েছে। টাটা গ্রুপ ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দাঁড়িয়ে থাকবে, এই প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়েছে তাঁর তরফে।
advertisement
advertisement
চন্দ্রশেখরন বোয়িং (যা বিমান তৈরি করে) এবং জিই অ্যারোস্পেস (যা ইঞ্জিন তৈরি করে) উভয় সংস্থাকেই পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করতে এবং তাদের অন্য কোনও বিমানে কোনও ত্রুটি আছে কি না তা প্রকাশ করতে বলেছেন। তিনি বলেন, "আমরা তাদের স্পষ্টভাবে বলতে বলেছি, যদি কোনও ঝুঁকি থাকে, তাহলে তারা যেন তা সামনে নিয়ে আসে।" ‘‘নিঃসন্দেহেই এই বিমান দুর্ঘটনা টাটা গ্রুপের জন্যও এক বড় সমস্যা! আবেগপ্রবণ হয়ে পড়ে চন্দ্রশেখরন বলেন, এই ঘটনাটি তাঁর জন্যও এক ধাক্কা। তিনি বলেন, "টাটার বিমান সংস্থায় এমন ঘটনা ঘটেছে, এটা খুবই দুঃখজনক। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির জন্য আমাদের হৃদয় কাঁদছে। আমরা এখন এবং ভবিষ্যতেও তাদের সম্ভাব্য সকল উপায়ে সাহায্য করব।’’ এন চন্দ্রশেখরন বলেছেন যে তিনি এখনও পর্যন্ত বিমান দুর্ঘটনায় বেঁচে যাওয়া একমাত্র ব্যক্তির সঙ্গে দেখা করেছেন। আগামী দিনে তিনি যতটা সম্ভব ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সঙ্গেও দেখা করবেন।