Air Conditioner Temperature: ঘরের এসির তাপমাত্রা 'এই' ডিগ্রিতে সেট করুন! শরীরও ঠিক থাকবে, পয়সাও বাঁচবে...

ভয়ঙ্কর গরমে বাইরে বেরোনো দায়, আগামী দিনে এখানকার মানুষকে ভয়াবহ গরমের মুখোমুখি হতে হতে পারে। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী সপ্তাহ থেকে শুরু হতে চলেছে তীব্র দাবদাহ।

এমন অবস্থায় মানুষের একমাত্র ভরসা হয়ে দাঁড়াচ্ছে এয়ার কন্ডিশনার বা এসি। গরম ও আর্দ্রতা থেকে বাঁচতে অনেকেই এসি’র সামনে বসে থাকেন ঘন্টার পর ঘন্টা। আপনি যদি নিয়মিত এসি ব্যবহার করেন, তবে এই প্রতিবেদনটি অবশ্যই পড়ে ফেলুন।

অতিরিক্ত ঠান্ডা স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর যদি আপনি এসি চালানোর সময় ঘরের তাপমাত্রা ২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কম রাখেন, তবে তা স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর হতে পারে। কম তাপমাত্রায় ঘুমালে শ্বাসপ্রশ্বাসের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাপমাত্রা কম থাকলে এসি ঘরের সব আর্দ্রতা শুষে নেয়, যার ফলে ত্বকের সমস্যাও দেখা দেয়।

এখন গরমের সময়, কিন্তু বর্ষাকালে সংক্রমণের ঝুঁকিও বেড়ে যায়। ফলে এসি’র তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা খুবই জরুরি। বেশি গরমে শরীর থেকে প্রচুর ঘাম বেরোয়, কিন্তু ঘরের শুষ্কতা ত্বকের ছিদ্র বন্ধ করে দিতে পারে, যা ত্বকের স্বাভাবিক কার্যকারিতায় ব্যাঘাত ঘটায়।

স্কিন প্রবলেম হয়ে যায় একজন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ বলেন, “এসি’র তাপমাত্রা ২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে রাখা সবচেয়ে ভালো। কারণ এটি সুস্থ শরীরের জন্য আদর্শ বলে ধরা হয়।” সাধারণ মানুষের শরীরের তাপমাত্রা ৩৬-৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস হয়। সেই হিসেবে ২৪ ডিগ্রি তাপমাত্রা শরীরের জন্য স্বাস্থ্যকর।

তিনি আরও বলেন, “শরীরের তাপমাত্রার তুলনায় খুব কম তাপমাত্রায় চালানো এসি ঘরের ভেতরে অতিরিক্ত শুষ্কতা সৃষ্টি করে, যার ফলে ত্বকের ক্ষতি হয়। এর ফলস্বরূপ, ঘাম না হওয়ার কারণে ত্বকের তন্তুগুলি শরীরের অতিরিক্ত তেল তৈরি করে, যার ফলে ব্রণ, দাগ এবং অকাল বার্ধক্যের লক্ষণ দেখা দিতে পারে।”

২৪ ডিগ্রি তাপমাত্রার পরামর্শ অধিকাংশ সময় দেখা যায়, গরম পড়তেই মানুষ এসি’র তাপমাত্রা অনেক কমিয়ে দেন। অনেকেই ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে সেট করেন।

এতে ঘর ঠান্ডা হয় ঠিকই, কিন্তু এসি’র ওপর প্রচুর চাপ পড়ে এবং বেশি বিদ্যুৎ খরচ হয়। তাই বিশেষজ্ঞরা সবসময় এসি ২৪ ডিগ্রি তাপমাত্রায় চালানোর পরামর্শ দেন। এতে বিদ্যুৎও কম খরচ হয়।

বিদ্যুৎ বাঁচে এই বিষয়ে ভারতের শক্তি মন্ত্রকও বহুবার সচেতনতা প্রচার করেছে। মন্ত্রকের মতে, যদি আপনি এসি ২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে চালান, তবে একটি সিজনে প্রায় ৪০০০ থেকে ৫০০০ টাকা পর্যন্ত বিদ্যুৎ বিলে সাশ্রয় হতে পারে।

মন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, এসি’র তাপমাত্রা প্রতি এক ডিগ্রি বাড়ালে বিদ্যুৎ খরচ ৬ শতাংশ পর্যন্ত কমে যায়। অর্থাৎ আপনি যদি ২৪ ডিগ্রিতে এসি চালান, তবে ১৮ শতাংশ পর্যন্ত বিদ্যুৎ খরচ কমবে।

ভারতে কেন জরুরি এনার্জি এফিসিয়েন্সি ব্যুরোর অনুমান, বর্তমান প্রবণতা অনুযায়ী ২০৩০ সালের মধ্যে ভারতে এয়ার কন্ডিশনারের কারণে বিদ্যুৎ চাহিদা ২০০ গিগাওয়াট ছুঁয়ে ফেলবে। এই সংখ্যা আরও বাড়বে, কারণ বর্তমানে মাত্র ১০ শতাংশ পরিবার এসি ব্যবহার করে। যদি সকলে এই পরামর্শ মেনে চলে, তবে ভারত প্রায় ২৩ বিলিয়ন ইউনিট বিদ্যুৎ বাঁচাতে পারে।

বর্তমানে দেশের মোট এসি’র কুলিং ক্যাপাসিটি ৮০ মিলিয়ন টিআর, যা ২০৩০ সালের মধ্যে বেড়ে ২৫০ মিলিয়ন টিআর হতে পারে। এখন দেশে বছরে প্রায় ৬.৫ মিলিয়ন ইউনিট রুম এসি বিক্রি হয়, যা ২০৫০ সালের মধ্যে এক বিলিয়ন ইউনিটে পৌঁছাতে পারে। অন্যদিকে, বিশ্বব্যাপী মোট শক্তি ব্যবহারের প্রায় ১০ শতাংশই চলে যায় এসি ব্যবহারে।