Bashar Al Assad: চোখের ডাক্তার থেকে নৃশংস একনায়ক, গৃহযুদ্ধ বিধ্বস্ত সিরিয়ায় বাশার আল-আসাদের উত্থান ও পতন
- Published by:Siddhartha Sarkar
Last Updated:
Bashar al-Assad From Doctor To Brutal Dictator: বাশার আল আসাদ পেশায় চক্ষু চিকিৎসক। তবে পৃথিবীকে দেখেছেন অন্য চোখে। লন্ডনে পড়াশোনা করেছেন। সেখানেই ব্রিটিশ-সিরিয় বংশোদ্ভূত আসমার সঙ্গে আলাপ, প্রেম এবং বিয়ে। বাশারের বাবা হাফেজ আল-আসাদ ছিলেন সিরিয়ার একনায়ক।
advertisement
1/23

বাংলাদেশের পর এবার সিরিয়া। গণ অভ্যুত্থানে পতন হয়েছে বাশার সরকারের। দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন রাষ্ট্রপতি তথা একনায়ক বাশার আল-আসাদ (Bashar Assad)। তাঁর বাসভবনে ঢুকে তাণ্ডব করেছে সিরিয়াবাসী। ঠিক যেমনটা বাংলাদেশে হয়েছিল। Photo: AP
advertisement
2/23
বাশার আল আসাদ পেশায় চক্ষু চিকিৎসক। তবে পৃথিবীকে দেখেছেন অন্য চোখে। লন্ডনে পড়াশোনা করেছেন। সেখানেই ব্রিটিশ-সিরিয় বংশোদ্ভূত আসমার সঙ্গে আলাপ, প্রেম এবং বিয়ে। বাশারের বাবা হাফেজ আল-আসাদ ছিলেন সিরিয়ার একনায়ক। অনেকেই বলেন, নৃশংসতাকে অন্য মাত্রায় নিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। ২০০২ সালে তাঁর কুর্সিতেই বসেন বাশার। Photo: AP
advertisement
3/23
সিরিয়ার তখন বেহাল দশা। দাঙ্গাবিধস্ত একটা দেশ। চাকরি নেই, বাসস্থান নেই, একমুঠো অন্নের জন্য হাহাকার। কুর্সিতে বসেই পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নতির চেষ্টা করেন বাশার। বোঝাতে চান, তাঁর নেতৃত্বে এক অন্য সিরিয়া দেখবে বিশ্ববাসী। শুরু হয় জনসংযোগ। বিলাসবহুল প্রাসাদে থাকতেন। কিন্তু নিজেকে এমনভাবে পেশ করতেন, যেন তিনি খুব সাধারণ একজন। Photo: AP
advertisement
4/23
রাজনীতির কারবারিরা বলেন, বাশার আল-আসাদ ছিলেন বাবার মতোই উচ্চাকাঙ্খী। অনেকটা জর্ডনের রাজপরিবারের ঢংয়ে সিরিয়াতে পিতৃতান্ত্রিক একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন। তবে আরও মসৃণ আরও সুশৃঙ্খলভাবে। Photo: AP
advertisement
5/23
আসাদ পরিবারের একনায়কতন্ত্রের অর্ধ-শতাব্দীর নাটকীয় সমাপ্তি হয়েছে। বাইশ বছর পর গদিচ্যুত হয়েছেন আশাদ। তবে সিরিয়ায় নিছক গণঅভ্যুত্থান হয়নি, এর পিছনে কলকাঠি নেড়েছে আল-কায়দার একটি শাখা সংগঠন। মধ্যপ্রাচ্যে এবার অনেক ওলটপালট হবে। বেশ কিছু দেশের মানচিত্রও বদলে যেতে পারে বলে অনুমান করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। Photo: AP
advertisement
6/23
বাবা-ছেলের শাসনে সিরিয়া: অনেকেই বাশারের সঙ্গে লিবিয়ার একনায়ক মুয়াম্মর গদ্দাফির মিল পান। হাট-বাজার, মুদিখানা, চায়ের ঠেক, সর্বত্র গোয়েন্দা এজেন্ট। তাঁদের চোখ ফাঁকি দেওয়ার জো নেই। বাশার অর্থনৈতিক সংস্কার করতে চেয়েছিলেন। তাঁর মতে, আগে দেশের আর্থিক উন্নতি দরকার, তারপর রাজনৈতিক সংস্কার হবে। বেশ কিছু পদক্ষেপও নেন। কিন্তু সাধারণ মানুষের তাতে কোনও লাভ হয়নি। বাশার ঘনিষ্ঠ গোষ্ঠীই ক্ষীর খেয়ে যান। Photo: AP
advertisement
7/23
ধীরে ধীরে বিশ্ব বোঝে, বাশার অবিকল তাঁর বাবার মতোই। একইরকম একনায়ক। ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখাতেই যাঁর আগ্রহ। আর সামরিক বাহিনীই তাঁর সেই ক্ষমতার উৎস। বিশেষ করে বিমান বাহিনী এবং গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। ক্ষমতায় এসেই রাজনৈতিক বন্দীদের মুক্তি দিতে শুরু করেছিলেন বাশার। এই তালিকার বেশিরভাগই ছিলেন বামপন্থী। বাশার পশ্চিমা বিশ্বকে বোঝাতে চেয়েছিলেন, সিরিয়ায় পরিবর্তন হচ্ছে। Photo: AP
advertisement
8/23
আসলে এটা ছিল ‘আইওয়াশ’। আসাদ পরিবারের বিরুদ্ধে মুখ খুললেই সেই গ্রেফতারি, সেই নির্যাতন। একেবারে তাঁর বাবার জমানায় যেমনটা হত। সবকিছু সেরকমই চলতে থাকে। এর মধ্যেই সামনে আসে সেডানায়া জেলের ঘটনা। ২০১১ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে অমানবিক নির্যাতন করে হত্যা করা হয় ১৩ হাজার বন্দীকে। এই ঘটনা বাশারের মুখোশ খুলে দেয়। Photo: AP
advertisement
9/23
ক্ষমতায় বসার পর থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত নিজের ভাবমূর্তি উদ্ধারের সবরকম চেষ্টা করেছিলেন বাশার। স্ত্রী আসমা ছিলেন জেপি মর্গ্যানের ইনভেস্টমেন্ট ব্যাঙ্কার। ‘ভোগ’ ম্যাগাজিনে তাঁকে নিয়ে বড় নিবন্ধ ছাপা হয়েছিল। সেখানে তাঁকে বলা হয়েছিল “মরুভূমির গোলাপ”। কিন্তু সেডানায়ার ঘটনা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়, বাশার তাঁর বাবার চেয়েও ভয়ঙ্কর। মরুভূমিতে গোলাপ তো দূরের কথা কোনও ওয়েসিস-ও নেই। Photo: AP
advertisement
10/23
বাশারের বাবা হাফেজ ছিলেন সিরিয়া বিমান বাহিনীর কর্তা। ১৯৬৩ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের ষড়যন্ত্রকারীদের একজন। তাঁর হাত ধরেই সিরিয়ায় বার্থ পার্টি ক্ষমতায় আসে। শাসন যাতে আসাদ পরিবারের হাতেই থাকে, তার জন্য কিছু ব্যবস্থা নিয়েছিলেন হাফেজ। বাশার আলাদা ছিলেন না। তিনি সেগুলোকেই এগিয়ে নিয়ে যান। Photo: AP
advertisement
11/23
১৯৬৬ সালে তথাকথিত দাঙ্গার সময় হাফেজ যে নীতি নিয়েছিলেন, পরবর্তীকালে সেগুলোই হয়ে উঠেছিল আসাদ পরিবারের শাসনের মূলমন্ত্র। যে কোনও বিরোধিতাকে সমূলে উপড়ে ফেলতে হবে, তার জন্য যদি গণহত্যা চালাতে হয়, কুছ পরোয়া নেহি। Photo: AP
advertisement
12/23
আরেকটা অভ্যুত্থানের মধ্যে দিয়ে সিরিয়ার ক্ষমতা সম্পূর্ণ কুক্ষিগত করেন হাফেজ। নিজের গোষ্ঠীর আলাওয়াইতদের পুলিশে নিয়োগ করতে শুরু করেন। সিরিয়া ধীরে ধীরে হয়ে ওঠে পুলিশ রাষ্ট্র। ১৯৭০-এর দশকের মাঝামাঝি মুসলিম ব্রাদারহুড বিদ্রোহ শুরু হয়। দমনপীড়ন চালু করেন হাফেজ। নির্যাতন, হত্যা কিছুই যাদ যায়নি। Photo: AP
advertisement
13/23
মুসলিম ব্রাদারহুড নেতাদের পরিবারের সদস্যদের পর্যন্ত খুঁজে খুঁজে খুন করে হাফেজের পুলিশ। ১৯৮২ সালে স্থল এবং বায়ু পথে দেশবাসীর উপরেই হামলা চালান হাফেজ। যা ‘হামা গণহত্যা’ নামে পরিচিত। এতে কয়েক হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। তাঁর ভাই মাহিরও ছিলেন একই রকমের নিষ্ঠুর। Photo: AP
advertisement
14/23
আরব বসন্ত: সিরিয়ার কুর্সিতে বসার কথা ছিল হাফেজের বড় ছেলে বাসেলের। ১৯৯৪ সালে একটি গাড়ি দূর্ঘটনায় মৃত্যু হয় তাঁর। তখন ডাক পড়ে বাশারের। বাশার সেই সময় লন্ডনে। রাজনীতিতে তাঁর কোনও আগ্রহও ছিল না। হাফেজ তাঁকে সিরিয়ায় নিয়ে আসেন। তারপর হাতে ধরে শেখান ‘শাসন’ কীভাবে করতে হয়। Photo: AP
advertisement
15/23
তিনি বাবার থেকে আলাদা। হলিউডের সিনেমা দেখেন। দামাস্কাসের রেস্তোরাঁয় খান। এভাবেই সিরিয়াবাসীর সামনে নিজেকে পেশ করেন বাশার। কিন্তু সিরিয়াবাসীর মন গলেনি। ২০১১ সালে শুরু হয় আরব বসন্ত। আসাদ শাসনের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে শুরু করে জনগণ। প্রথমদিকে খুচরো বিক্ষোভ। মার্চ নাগাদ তা জনবিপ্লবের রূপ নেয়। মাহেরের নির্দেশে বিক্ষোভকারীদের উপর গুলি চালায় সেনা। শুধু মাহেরের নির্দেশ নয়, এটাই ছিল সরকারি নীতি। বহু মানুষের মৃত্যু হয়। বাশারও সেই পথই নেন। দমনপীড়নকেই শাসকের অস্ত্র করে তোলেন তিনি। Photo: AP
advertisement
16/23
ইমেল ফাঁস: ২০১২ সালে উইকিলিকস বাশার এবং আসাদ পরিবারের কিছু ইমেল ফাঁস করে দেয়। দেখা যায়, দেশে যখন সাধারণ মানুষের রুটিরুজি জুটছে না, আসমা তখন প্যারিস থেকে দামি গয়না কিনছেন। সেই বছরই রাশিয়ান সেনা সিরিয়ায় পা রাখে। সামনে আসে, কোথায়-কীভাবে দমন চালাতে হবে, প্রতিদিন সেই আদেশনামায় স্বাক্ষর করছেন বাশার। সিরিয়ায় গণহত্যা চলাকালীন নববর্ষের প্রীতিভোজে মেতে আসমা এবং বাশার। Photo: AP
advertisement
17/23
উইকিলিকসের জেরে বাশার সরকারের তখন নড়বড়ে অবস্থা। আন্তর্জাতিক মহল পদত্যাগের জন্য ক্রমাগত চাপ দিচ্ছে। বাশার কোনওরকমে তা পিছিয়ে দিচ্ছেন। ঠিক এই সময়েই সিরিয়ায় শুরু হল গৃহযুদ্ধ। ৫ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক বাস্তুচ্যুত হন। Photo: AP
advertisement
18/23
২০১৩ সালে সিরিয়ার উত্তরে রাক্কায় আইএস আত্মপ্রকাশ করে। তারা আসাদ বাহিনীর চেয়েও নৃশংস। গোটা বিশ্বের নজর তখন আসাদের থেকে সরে গিয়ে আইএস-এর উপর গিয়ে পড়ে। এর মধ্যেই দামাস্কাসের কিছু এলাকায় রাসয়নিক অস্ত্র ব্যবহার করে আসাদ সরকার। তবে বাশারই সেই নির্দেশ দিয়েছিলেন কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়। Photo: AP
advertisement
19/23
সেই সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা আসাদ সরকারের বিরুদ্ধে ‘রেড লাইন’ ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু তাতে খুব একটা লাভ কিছু হয়নি। বরং মধ্যপ্রাচ্যের এই অঞ্চলে হস্তক্ষেপের সুযোগ পেয়ে যায় অন্যান্য শক্তিধর দেশগুলো। আসাদও সিরিয়ার নিয়ন্ত্রণ হারাতে শুরু করেন। Photo: AP
advertisement
20/23
প্রথমেই ভ্লাদিমির পুতিন রাশিয়ান বাহিনী মোতায়েন করে বাশারকে সমর্থনের সিদ্ধান্ত নেন। এটা ছিল মধ্যপ্রাচ্যে মস্কোর রাজনৈতিক প্রভাব বাড়ানোর কৌশলী পদক্ষেপ। ইরানও হিজবুল্লাহর পিছনে ব্যাপক টাকা ঢালে। হিজবুল্লাহর জঙ্গিরা আসাদ সরকারের হয়ে কাজ শুরু করে সিরিয়ায়। Photo: AP
advertisement
21/23
এই সময় অবশ্য আসাদের হাতে আর গোটা সিরিয়ার নিয়ন্ত্রণ ছিল না। তারপরেও ২০১৪ সালে ‘সাওয়া’ অর্থাৎ ঐক্যের স্লোগান দিয়ে লোকদেখানো নির্বাচন করান বাশার। সিরিয়ার মাত্র ২৫ শতাংশই তখন তাঁর দখলে। কিন্তু তারপরেও আশ্চর্যজনকভাবে ক্ষমতায় টিকে যান বাশার। Photo: AP
advertisement
22/23
কিন্তু সমস্যা হল, সিরিয়া ততদিনে পুরোপুরি বাইরের শক্তির উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। এই কারণেই বাশার টিকে ছিলেন, আর এই কারণেই বাশারের পতনও হয়েছে। রাশিয়া এখন ইউক্রেন নিয়ে ব্যস্ত। ইজরায়েলের মুহূর্মুহু আক্রমণে হিজবুল্লাহ আর আগের হিজবুল্লাহ নেই। তেহরানও দূর্বল। ফলে বাশারকে বাঁচানোর মতো আর কেউ ছিল না। Photo: AP
advertisement
23/23
সিরিয়া বিশেষজ্ঞ এবং নিউ লাইন্স প্রত্রিকার প্রধান ও সম্পাদক হাসান বলেছেন, “শুধু পরিকল্পিত জঙ্গি আক্রমণের কারণে বাশার সরকারের পতন হয়নি। ১৩ বছরের গৃহযুদ্ধে সেনাবাহিনীর মনোবল ভেঙে গিয়েছিল। সিরিয়ার উত্তর আর পূর্ব ভাগে তুরস্ক এবং আমেরিকার প্রভাব অত্যন্ত বেড়ে যায়। বাকি অংশে ইরান এবং রাশিয়ার উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছিলেন বাশার।” এগুলোই পতনের প্রধান কারণ। ক্ষমতার শেষ দিন পর্যন্ত বিদ্রোহীদের সঙ্গে কথা চালিয়ে গিয়েছেন বাশার। আত্মবিশাসী ছিলেন, ফের পুরো সিরিয়া তাঁর হাতে আসবে। কিন্তু বুঝতে পারেননি, একটা টোকাতেই তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়বে সাজানো সংসার। Photo: AP
বাংলা খবর/ছবি/পাঁচমিশালি/
Bashar Al Assad: চোখের ডাক্তার থেকে নৃশংস একনায়ক, গৃহযুদ্ধ বিধ্বস্ত সিরিয়ায় বাশার আল-আসাদের উত্থান ও পতন