Women Hernia: মহিলাদের হার্নিয়া: অবহেলা নয়, কোন অভ্যাস বাড়াচ্ছে রোগের ঝুঁকি, কোন উপসর্গ অবহেলার নয়, জানাচ্ছেন চিকিৎসক

বেশিরভাগেরই ধারণা, হার্নিয়া সাধারণ পুরুষের হয়। কিন্তু এই ধারণা সম্পূর্ণ ভ্রান্ত! আর এই কারণেই ভারতে মহিলাদের ক্ষেত্রে হার্নিয়া দেরিতে ধরা পড়ে। হার্নিয়ার উপসর্গগুলো মহিলারা অন্য সাধারণ রোগের সঙ্গে গুলিয়ে ফেলেন ফলে এড়িয়ে যান। মহিলারা কোন কোন উপসর্গে সতর্ক হবেন? জানাচ্ছেন নয়াদিল্লির ম্যাক্স সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের দুই চিকিৎসক ডাঃ গৌতম ও ডাঃ অশীষ গৌতম--

অনেক মহিলাদের ক্ষেত্রেই হার্নিয়ার সাধারণ ফোলাভাব দেখা যায় না। বদলে তাঁরা তলপেটে টান, কুঁচকিতে ব্যথা অনুভব করেন। অনেকের আবার হাঁটাহাঁটি, ভার ওঠানো বা দীর্ঘক্ষণ বাড়ির কাজকর্ম করার সময় কষ্ট পান। এই উপসর্গগুলি প্রায়ই ডিম্বাশয়ের সিস্ট, ফাইব্রয়েড, মূত্রনালির সংক্রমণ বা পেলভিক মাংসপেশির টানের মতো সমস্যার সঙ্গে গুলিয়ে ফেলা হয়।

গর্ভাবস্থায় পেটের পেশিগুলি প্রসারিত হয়, পেশির উপর বেশি চাপ পড়ে, ফলে হার্নিয়ার ঝুঁকিও বাড়ে। ডেলিভারির পর সদ্য মায়েরা খুদেকে কোলে নেন, অনেক মসয় ভারী ব্যাগ তোলেন, আবার বাড়ির নানা কাজে ফিরে যান। ফলে পেটের দেয়ালে আরও চাপ বাড়ে।সিজারিয়ান ডেলিভারির কাটাছেঁড়ার দাগও এই অংশকে দুর্বল করে দিতে পারে, ফলে ইনসিশনাল হার্নিয়া হতে পারে। অস্ত্রোপচারের পর কাটা অংশের কাছে সামান্য স্ফীতি বা দীর্ঘস্থায়ী ব্যথাকে অনেক মহিলা স্বাভাবিক পোস্ট-সার্জারি অস্বস্তি ভেবে অবহেলা করে থাকেন।

মহিলাদের সঙ্গী নানারকমের ব্যথা... তা সে পিরিয়ডের ব্যথা হোক কী পিঠের যন্ত্রণা বা গর্ভাবস্থাজনিত অস্বস্তি ও ক্লান্তি। প্রায়ই এই ব্যথাগুলিকে স্বাভাবিক হিসেবে উড়িয়ে দেওয়া হয়। ফলে হার্নিয়ার ব্যথা শুরু হলে মহিলারা আলাদা করে সচেতন হন না। ভেবে বসেন, এই ব্যধাটাও হয়তো স্বাভাবিক কোনও ব্যথা। যত ক্ষণে মহিলারা চিকিৎসকের দ্বারস্থ হন, তত ক্ষণে হার্নিয়াটি বেশ বড় হয়ে গিয়েছে।

মহিলাদের ক্ষেত্রে ইনগুইনাল হার্নিয়া প্রায়ই ছোট হয় এবং পেলভিসের গভীরে থাকে, ফলে সাধারণ পরীক্ষায় তা ধরা কঠিন। শুয়ে থাকা অবস্থায় সাধারণ আল্ট্রাসাউন্ড স্ক্যানেও অনেক সময় হার্নিয়া ধরা পড়ে না। দাঁড়িয়ে থাকা বা কাশি দেওয়ার সময় হার্নিয়া শনাক্ত করা সহজ, কিন্তু এই ধাপগুলি সবসময় প্রাথমিক পরীক্ষার অংশ হয় না।

মহিলাদের নানা দৈনন্দিন অভ্যাস সমস্যা আরও বাড়ায়। যেমন,শিশুকে কোলে তোলা, বাজারের ব্যাগ বওয়া, দীর্ঘ সময় ডেস্কে বসে থাকা, অতিরিক্ত ওজন এবং দীর্ঘস্থায়ী কোষ্ঠকাঠিন্য—সবই হার্নিয়ার ঝুঁকি বাড়ায়। যেহেতু এগুলি দৈনন্দিন জীবনের অংশ, তাই এগুলিকে নিয়ে খুব একটা মাথাব্যথা থাকে না মহিলাদের সিংহভাগের।

কেন তাড়াতাড়ি রোগ নির্ণয় জরুরি?হার্নিয়া নিজে থেকে কখনওই সেরে যায় না। এটি বড় হতে পারে বা আটকে যেতে পারে, ফলে আক্রান্ত টিস্যুতে রক্ত সরবরাহ বন্ধ হয়ে যেতে পারে। প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ শনাক্ত হলে চিকিৎসা সহজ হয়, জটিলতার ঝুঁকিও কম থাকে।