লক্ষ লক্ষ ভারতীয়ের মৃত্যুর কারণ...! 'নুনের' ভুল ব্যবহার 'জীবন-ঝুঁকির' সমান, সতর্ক হন, নইলে!

লবণ বা নুন রান্নাঘরের গুরুত্বপূর্ণ উপাদানগুলির মধ্যে একটি। লবণ ছাড়া খাবারের স্বাদ অসম্পূর্ণ। প্রতিটি খাবারেই লবণ অপরিহার্য বলে মনে করা হয়। কিন্তু কখনও কি ভেবে দেখেছেন যে এই লবণই আবার ধীরে ধীরে আপনার স্বাস্থ্যের জন্য বিষ হয়ে উঠতে পারে?

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) এক প্রতিবেদন অনুসারে, ভারতীয়রা প্রতিদিন যে পরিমাণ লবণ গ্রহণ করেন, তার দ্বিগুণ তাদের চাহিদা।

চিকিৎসকদের মতে, একজন ব্যক্তির প্রতিদিন সর্বোচ্চ ৫ গ্রাম লবণ খাওয়া উচিত। কিন্তু উত্তর ভারতে এই পরিমাণ প্রায় ১০ থেকে ১২ গ্রামের কাছাকাছি, যেখানে দক্ষিণ ভারতে এটি ৮ থেকে ১০ গ্রাম।

ভারতে প্রায় ২.২ কোটি মানুষ হৃদরোগে ভুগছেন। শুধু তাই নয় প্রায় ৭ কোটি কিশোর-কিশোরী এই দেশে ইতিমধ্যেই উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন। প্রতি বছর, ১.৭৫ লক্ষ ভারতীয় অতিরিক্ত লবণ গ্রহণের কারণে মারা যান।

ভারতের ৮০% লবণ গ্রহণ আসে ঘরে রান্না করা খাবার থেকে, যা গড়ে দৈনিক লবণ গ্রহণ ১২ গ্রামেরও বেশি করে তোলে, যা জাতীয় পুষ্টি ইনস্টিটিউট এবং WHO (বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা) দ্বারা নির্ধারিত ৫ গ্রামের চেয়ে অনেক বেশি।

আমাদের প্রতিদিনের লবণ গ্রহণের ৮০% আসে বাইরের খাবার যেমন বিস্কুট, স্ন্যাকস, চিপস, সস, ওয়েফার এবং অন্যান্য প্যাকেটজাত খাবার থেকে।

এই বিষয়ে বিস্তারিত রিপোর্ট শুনলে আঁতকে উঠবেন। উচ্চ রক্তচাপজনিত জটিলতার কারণে বার্ষিক প্রায় ১,৭৫,০০০ মৃত্যুর সঙ্গে সম্পর্কিত এই একটি রান্নাঘরের উপাদান। নিঃসন্দেহে এটি বেশ উদ্বেগজনক একটি পরিসংখ্যান।

ভারতের ৮০% লবণ গ্রহণ আসে ঘরে রান্না করা খাবার থেকে, যা গড়ে দৈনিক লবণ গ্রহণ ১২ গ্রামেরও বেশি করে তোলে, যা জাতীয় পুষ্টি ইনস্টিটিউট এবং WHO (বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা) দ্বারা নির্ধারিত ৫ গ্রামের চেয়ে অনেক বেশি।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেন যে উচ্চ লবণ গ্রহণ রক্তচাপ বৃদ্ধির একটি প্রধান কারণ, যা হৃদরোগ, স্ট্রোক এবং কিডনির সমস্যাজনিত রোগের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করে। এক্ষেত্রে খাদ্যতালিকাগত পরিবর্তন এবং নিয়ন্ত্রক ব্যবস্থার মাধ্যমে অতিরিক্ত লবণ গ্রহণ বন্ধ করা জরুরি।

এপিটোম কিডনি অ্যান্ড ইউরোলজি ইনস্টিটিউট এবং লায়ন্স হাসপাতালের চেয়ারম্যান ডঃ বিজয় খের বলেন, "যদি আমরা শৈশব থেকেই অভ্যাস শুরু করি, তাহলে স্বাদ কোষগুলি কম লবণের পছন্দের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে পারে, যা সারা জীবন ধরে অতিরিক্ত লবণাক্ত খাবারের আকাঙ্ক্ষা কমায়"।

ভারত সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে লবণের ব্যবহার ৩০% কমানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। কর আরোপ, বিজ্ঞাপন নিয়ন্ত্রণ এবং সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে এটি অর্জনের প্রচেষ্টা চলছে। কিন্তু এর পাশাপাশি, আমাদের নিজেদের অভ্যাসও পরিবর্তন করতে হবে বলেই মত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের।

অতিরিক্ত লবণও ক্ষতিকর: বিশেষজ্ঞদের মতে, বেশি লবণ খেলে শরীর থেকে ক্যালশিয়াম প্রস্রাবের মাধ্যমে বেরিয়ে যায়। ফলে হাড়ের ঘনত্ব কমে যেতে পারে। তাই লবণের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করা দরকার।