Interesting Fact: সিঙাড়া দেখলেই জিভে জল? ৯৯% মানুষ কিন্তু জানেনই না ভারতীয় খাবার নয় 'Samosa'! ইতিহাস শুনলে চমকে যাবেন...

সিঙাড়া। নাম শুনলেই মন চনমন করে ওঠে নিশ্চই? বাঙালি থেকে অবাঙালি কার না প্রিয় এই দুর্দান্ত লোভনীয় স্ন্যাক্সটি? মজাদার, ক্রিস্পি এবং সুস্বাদু সিঙাড়া বা সামোসা ভালবাসে সকলেই কম বেশি। বিকেলের জলখাবারেও দারুণ চলে এই খাবার। গরম গরম চা আর সঙ্গে সিঙাড়া! শুধু এই বাংলার মানুষই নন, ভারতে প্রায় প্রতিটি অঞ্চলেই দুর্দান্ত জনপ্রিয় এই মুখরোচক খাবার।

যুগ যুগ ধরে সিঙাড়া বা সামোসা আমাদের একটি অতি পরিচিত খাবার। এটি সাধারণত আলু আর কিছু মশলা দিয়ে বানানো পুর ও ময়দার লেচি দিয়ে গড়ে ভাজা হয়। মূলত ডিপ ফ্রাই করা হয়, আর তাতেই জমে যায় স্বাদ। বর্ষায় বা শীতের মরশুমে সন্ধেবেলা গরম গরম সিঙাড়া খেয়ে সবার মন পুলকিত হয়ে যায় নিমেষে। আপনিও যদি এই খাবারটির ভক্ত হয়ে থাকেন, তাহলে চলুন জেনে নেই এই সিঙাড়ার এমন আজব সব তথ্য আর ইতিহাস যা কল্পনাও করতে পারবেন না আপনি!

সিঙাড়া বা সামোসা কিন্তু ভারতীয় খাবার নয়! হ্যাঁ, আপনি ঠিকই পড়েছেন, সামোসা আসলে ভারতের খাবারই নয়। আপনি এটি পড়ে হতাশ হবেন তবে জানিয়ে রাখি যে আপনার প্রিয় শিঙাড়া নামক খাবারটির শিকড় ১০ শতক প্রাচীন। এই খাবারটি আসলে মূলত জনপ্রিয় ছিল মধ্যপ্রাচ্যে। সেখানে এটি 'সামসা' নামে পরিচিত ছিল। ইরান, মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলে দারুণ পছন্দের ছিল এই স্নাক্সটি। সে সময় মাংসের পুর ভরে তৈরি করা হত এটি।

সিঙাড়ার আসল রেসিপিটি মিশর থেকে লিবিয়া হয়ে এশিয়ায় পৌঁছেছিল সেই সময়। নাম ছিল সানবুসাক, সানবুসাক এবং সানবুসাজ। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন যে সিঙাড়ার রেসিপি মুঘলদের সঙ্গে এরপরে এক সময় দিল্লিতে পৌঁছেছিল। ধীরে ধীরে এর ধরণের পরিবর্তন করা হয় এই দেশে। সেই সময় সামোসা ছিল শুধুমাত্র রাজপরিবারের জন্য। অর্থাৎ রাজা উজিররাই কেবল খেতে পারতেন এই খাবার।

প্রাচীন কাহিনী অনুসারে, ১৩০০ শতাব্দীতে, 'সিঙাড়া' শুধুমাত্র রাজপরিবার এবং আরব ও মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলির উচ্চ শ্রেণীর জন্য সংরক্ষিত ছিল। এই খাবারটি বিশেষ অনুষ্ঠানে প্রস্তুত করা হত এবং এতে শুধুমাত্র রাজপরিবারেরই অধিকার বলেই বিবেচিত হত।

সিঙাড়া কখনই নিরামিষ ছিল না! ছোটবেলা থেকেই আমরা দেখে আসছি আলু, মটর, পনির দিয়ে পুর বানিয়ে তা ভরা হয় ময়দার লেচিতে। কিন্তু জানলে অবাক হবেন যে সিঙাড়া আসলে মাংস, বাদাম, পেস্তা, মশলা দিয়ে তৈরি করা হয়। যা তখন ডিপ ফ্রাই করে চাটনির সঙ্গে খাওয়া হত।

কেন এর আকৃতি এমন হয়? আপনি কি কখনও ভেবে দেখেছেন কেন এটি এমন ত্রিকোণ আকারের হয়? আমরা সকলেই জানি এই জনপ্রিয় খাবারের আকৃতি পিরামিডের মতো। এই কারণেই এর নামকরণ করা হয়েছিল সামোসা, যা সরাসরি মিশরের পিরামিডের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। তাই সামোসা ভক্ত সারা বিশ্বেই দেখতে পাওয়া যায়।

আপনি যদি মনে করেন যে আপনি সিঙাড়ার একমাত্র ভক্ত, তবে আপনি জেনে অবাক হবেন যে এটি সারা বিশ্বে এত জনপ্রিয় যে এটির জন্য একটি বিশেষ দিন রয়েছে। প্রতি বছর ৫ সেপ্টেম্বর পালিত হয় বিশ্ব সামোসা দিবস। আর দিনেই সিঙাড়ার মতো মুখরোচক স্নাক্সটির অনেক অজানা ইতিহাস প্রকাশ্যে আসে।