মটরশুঁটি ভালোবাসেন...? শীতে মুঠো মুঠো খাচ্ছেন 'সবুজ' সবজিটি? সতর্ক হন 'এঁরা'! পেটে গেলেই সর্বনাশ! পড়ুন বিশেষজ্ঞের মত

শীতকাল মানেই এনতারসে সবুজ আর রঙিন শাক-সবজি খাওয়া। আর এই তালিকায় প্রায় শীর্ষে থাকে সবুজ মটরশুঁটি। প্রোটিনে ভরপুর এই সবজি মুঠো মুঠো খেতে বা রান্নায় দিতে ভালবাসেন অনেকেই।

এমনকি বাড়ির যে ছোট্ট সদস্যটি সবজি দেখলেই নাক সিটকায় তারাও এই একটি সবজি নিয়ে কোনও না করে না। খিচুড়ি হোক বা শীতের সবজি, এক মুঠো সবুজ মটরশুঁটি দিয়ে দিতে পছন্দ করেন সবাই।

এছাড়াও আমরা অনেকেই কিছু বিশেষ খাবারের জন্য কাঁচা মটরশুঁটি ব্যবহার করি যা আমরা বাড়িতে তৈরি করি। স্যালাডেও ব্যবহার করা হয় এই মটরশুঁটি। আর মটর পনির থেকে পিজ-পোলাও তো বিখ্যাত মটরশুঁটির পদ।

ম্যাঙ্গানিজ, ভিটামিন সি এবং ভিটামিন কে সমৃদ্ধ, সবুজ মটরশুঁটিগুলি যে কোনও স্বাস্থ্যকর খাবারের জন্য একটি দুর্দান্ত সংযোজন হিসেবেই দেখা হয় যা কাঁচা এবং টাটকা খাওয়া হয়। একথা বলাই বাহুল্য এই সবুজ সবজি বেশ কিছু স্বাস্থ্য উপকারিতার উৎস।

মটরশুঁটিতে রয়েছে ভিটামিন, মিনারেল, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, প্রোটিন ও ফাইবার। এগুলি শরীরে মূল্যবান পুষ্টি উপাদান সরবরাহ করে তবে মটরশুঁটি খাওয়ার ফলে অনেক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও দেখা দেয় শরীরে।

রান্নার জন্য মটরশুঁটি ব্যবহার করার আগে দুবার চিন্তা করুন এঁরা:যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক অধ্যাপক প্রশান্ত কুমার বিশ্বাসের মতে, সত্যিকারের সবুজ মটরশুঁটি লোহা, ফসফরাস, ফোলেট এবং ভিটামিন এ, এবং সি সমৃদ্ধ। এর প্রোটিন শরীরের ওজন কমাতে সাহায্য করে। বলা হয়েছে, বেশি মটরশুঁটি খেলে পেট ফাঁপা এবং ক্যানসারের মতো মারাত্মক রোগ হতে পারে।

কাঁচা মটরশুঁটিতে চর্বি এবং ক্যালোরি কম এবং এছাড়াও এটি ফাইবার সমৃদ্ধ, যা আপনার শরীরের ওজন কমাতে একটি চমৎকার ভূমিকা পালন করে।

পাশাপাশি এটি আপনাকে পূর্ণ বোধ করায় এবং অন্যান্য অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া থেকে বিরত রাখে। কিন্তু এই সাধের মটরশুঁটি খাওয়ার ফলেই আবার আপনার শরীরে অনেক স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই সতর্ক হওয়া জরুরি।

১) ভিটামিন কে বৃদ্ধি: এই সবজি শরীরে ভিটামিন কে বাড়িয়ে দেয়। মটরশুঁটিতে পাওয়া ভিটামিন কে শরীরে ক্যানসার কোষকে বৃদ্ধি পেতে বাধা দেয়। তবে বেশি মটর ডাল খাবেন না।

প্রচুর পরিমাণে সবুজ মটরশুঁটি শরীরে ভিটামিন কে-এর মাত্রা বেশি বাড়িয়ে দেয়। এটি রক্তকে পাতলা করে দেয় এবং প্লেটলেটের সংখ্যা কমায়। এই কারণে ক্ষত সারতে বেশি সময় লাগে। পেট সংক্রান্ত সমস্যা থাকলেও ডাল খাওয়া ক্ষতিকর হতে পারে।

২) জয়েন্ট পেইন: যখন হাঁটুতে ব্যথা এবং হাড়ের সমস্যা দেখা দেয়, তখন ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং ভিটামিন ডি যুক্ত খাবার খেতে হবে। কিন্তু মটরশুঁটি অতিরিক্ত সেবনে ক্যালসিয়ামের মাত্রা কমতে শুরু করে শরীরে।

মটরশুঁটি বেশি খেলে আবার ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বাড়তে শুরু করে। ইউরিক অ্যাসিড বেড়ে গেলে জয়েন্টে ব্যথা হতে পারে। বেশি পরিমাণে ডাল খেলে হাড় দুর্বল হয়ে যায়।

৩) চর্বি বৃদ্ধি: সবুজ মটর খেলে শরীরের চর্বি বাড়ে। এটি প্রোটিন এবং ফাইবারের একটি ভাল উৎস ঠিকই, কিন্তু খুব বেশি মটরশুঁটি খাওয়া আপনার উল্টো ক্ষতি করতে পারে।

৪) পুষ্টির অভাব: শরীরে পুষ্টি পাওয়া যায় না। মটর ডালের মধ্যে থাকা ফাইটিক অ্যাসিড এবং ল্যাকটিন পুষ্টি শোষণে হস্তক্ষেপ করে।

৫) ডায়রিয়ার সমস্যা: মটরশুঁটি অতিরিক্ত সেবনে পেটে ব্যথা এবং ফোলাভাব হতে পারে। এতে গ্যাসের সমস্যা হয়। মটরশুঁটিতে কার্বোহাইড্রেট বেশি থাকে। প্রচুর পরিমাণে মটরশুঁটি খেলে এগুলো সহজে হজম হয় না এবং মটরশুঁটির ল্যাকটিন পেটে প্রদাহ বাড়াতে কাজ করে। আবার মটরশুঁটি অতিরিক্ত সেবনেও ডায়রিয়া হতে পারে।

৬) গ্যাসের সমস্যা- যাদের হজম শক্তি শক্তিশালী নয় তাঁদের গ্যাসের সমস্যা হতে পারে সবুজ মটরশুঁটিতে। কারণ এতে রয়েছে প্রচুর প্রোটিন যা হজম করতে অনেক পরিশ্রম করতে হয়। এতে গ্যাস ও অ্যাসিডিটির সমস্যা হতে পারে।