Explainer: নবরাত্রিতে খাওয়া হয় দেশ জুড়ে, কীভাবে তৈরি হয় ‘ঢেমসি’-র আটা, কীভাবেই বা বিষাক্ত হয়ে ওঠে?
- Published by:Siddhartha Sarkar
Last Updated:
Kuttu Ka Atta: ঢেমসির আটা খাওয়ার পর অসুস্থ হওয়ার ঘটনা এটিই প্রথম নয়। প্রতি বছর নবরাত্রির সময় এমন ঘটনা ঘটে।
advertisement
1/8

দিল্লির বেশ কয়েকটি এলাকায় 'Buckwheat', যাকে চলতি বাংলায় 'ঢেমসি' বলা হয়ে থাকে, তার আটা খেয়ে প্রায় ১৫০ থেকে ২০০ জন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। রোগীদের অবস্থা গুরুতর নয় এবং স্থিতিশীল বলেও জানা গিয়েছে। মঙ্গলবার সকালে পুলিশ খবর পায় যে ঢেমসির আটা খাওয়ার পর বেশ কয়েকজন শারীরিক অস্বস্তি এবং বমির অভিযোগ করেছেন। আক্রান্তদের জাহাঙ্গীরপুরীর বাবু জগজীবন রাম (বিজেআরএম) হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় এবং পুলিশ খাদ্য বিভাগকে অবহিত করে। আক্রান্তরা মূলত জাহাঙ্গীরপুরী, মহেন্দ্র পার্ক, সময়পুর, ভালসোয়া ডেয়ারি, লাল বাগ এবং স্বরূপ নগর এলাকার বাসিন্দা। উত্তরপ্রদেশের মেরঠেও একই রকম একটি ঘটনা ঘটেছে, যেখানে ঢেমসির আটা খেয়ে প্রায় ১৫০ জন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাঁদের জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। (Representative Image)
advertisement
2/8
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের খবর বলছে যে, নবরাত্রির উপবাসের সময় এঁরা ঢেমসির আটা দিয়ে তৈরি খাবার খেয়েছিলেন। সন্দেহ করা হচ্ছে যে ওই আটায় ভেজাল থাকতে পারে, যার ফলে খাদ্যে বিষক্রিয়া হয়েছে। ঢেমসির আটা খাওয়ার পর অসুস্থ হওয়ার ঘটনা এটিই প্রথম নয়। প্রতি বছর নবরাত্রির সময় এমন ঘটনা ঘটে। অতএব, ঢেমসির আটা কী, এটি কীভাবে তৈরি হয়, কেনই বা এটি বিষাক্ত হয়ে ওঠে শরীরের পক্ষে, সব কিছু জেনে নেওয়া যাক একে একে। (Representative Image)
advertisement
3/8
‘কুট্টুর আটা’ কীভাবে তৈরি হয়: ইংরেজিতে ‘বাকহুইট ফ্লাওয়ার’ বলা হয়। হিন্দিতে ‘কুট্টু কি আটা’ ৷ যদিও নামে 'হুইট' শব্দটি আছে, এটি গম বা সেই জাতীয় শস্য ভাবলে চলবে না। ঢেমসির আটা আসলে একটি ফল থেকে তৈরি হয়। এর বৈজ্ঞানিক নাম ফ্যাগোপিরাম এসকুলেন্টাম। এটি ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে আরও অনেক নামে পরিচিত, যেমন টাউ, ওগলা, ব্রেশ এবং ফাফড়। কেন এটিকে সুপারফুড বলা হয়? ঢেমসিকে সুপারফুড বলা হয় কারণ এটি পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ এবং এর অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে। ঢেমসি প্রোটিনের একটি চমৎকার উৎস, এর প্রতি ১০০ গ্রামে প্রায় ১৫ গ্রাম প্রোটিন থাকে। এতে প্রচুর পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট এবং ফাইবারও রয়েছে। এই কারণেই এটি উপবাসের সময় খাওয়া হয়, লুচি-পরোটা বানানো হয় এই আটা দিয়ে। ঢেমসির আটায় আলফা লিনোলেনিক অ্যাসিড থাকে, যা খারাপ কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে বলে মনে করা হয়। (Representative Image)
advertisement
4/8
ঢেমসির আটায় কম গ্লাইসেমিক সূচক থাকে, যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী। আমেরিকান জার্নাল অফ গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজি অনুসারে, ঢেমসির আটায় অদ্রবণীয় ফাইবারও থাকে, যা পিত্তথলিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে। কত দিনে এটি নষ্ট হয়ে যায়? ঢেমসির আটার শেলফ লাইফ খুবই কম। এটি এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে নষ্ট হয়ে যেতে পারে। মেয়াদ শেষ হওয়ার পরে এটি খেলে বিষক্রিয়া হতে পারে। ঢেমসির আটার ভেজাল শনাক্ত করার দুটি সহজ উপায় রয়েছে। আসল ঢেমসির আটার রঙ হবে বাদামি। যদি গমের আটা বা অন্য কোনও জিনিস এতে মেশানো হয়, তাহলে এর রঙ বদলে যায়। যদি ভেজাল থাকে, তাহলে ময়দা মাখার সময় ভেঙে ভেঙে পড়বে, খাঁটি ঢেমসির আটা সহজেই মাখা যায়। (Representative Image)
advertisement
5/8
ঢেমসি চাষের ইতিহাস: বিশ্বাস করা হয় যে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ঢেমসি চাষ শুরু হয়েছিল প্রায় ৫,০০০-৬,০০০ বছর আগে। সেখান থেকে এটি মধ্য এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য এবং তার পর ইউরোপে ছড়িয়ে পড়ে। একটি প্রতিবেদন অনুসারে, ফিনল্যান্ডে এর ব্যবহার ৫৩০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে শুরু হয়েছিল, যার লিখিত প্রমাণ রয়েছে। সায়েন্স ফ্যাক্টস অনুসারে, ঢেমসির মূল উৎপত্তিস্থল চিন এবং সাইবেরিয়া। তবে, প্রাচীন গ্রিসের কিছু অঞ্চলে এটি বন্য প্রজাতি হিসেবেও পাওয়া যেত। (Representative Image)
advertisement
6/8
ঢেমসি গাছের গঠন: ঢেমসি গাছটি প্রায় ২ থেকে ৪ ফুট উচ্চতার হয়ে থাকে। এর পাতা ত্রিকোণাকার এবং গাঢ় সবুজ রঙের হয়। গাছটি প্রথমে ছোট সাদা ফুল দেয়, যা পরে ফলের গুচ্ছে পরিণত হয়। যখন এই ফলগুলি শুকিয়ে যায়, তখন ছোট বাদামি বীজ বের হয়, এই বীজ পিষে ঢেমসির আটা তৈরি হয়। (Representative Image)
advertisement
7/8
ভারতে কোথায় এটি চাষ করা হয়? ঢেমসি মূলত ১,৮০০ মিটার উচ্চতার উপরে পাহাড়ি অঞ্চলে চাষ করা হয়। এটি জম্মু ও কাশ্মীর, হিমাচলপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড এবং দক্ষিণ ভারতের নীলগিরি অঞ্চলে জন্মায়। উত্তর-পূর্ব ভারতের কিছু অংশেও এটি চাষ করা হয়। রবি মরশুমে ঢেমসি বপন করা হয় এবং এর ফসল মাত্র ৩০-৩৫ দিনের মধ্যে প্রস্তুত হয়ে যায়। ফসল ৮০% পাকা হয়ে গেলে এটি সংগ্রহ করা হয়। এরপর বীজ শুকিয়ে গুঁড়ো করে আটা তৈরি করা হয়।
advertisement
8/8
বিশ্বে ঢেমসি সবচেয়ে বেশি কোথায় উৎপাদিত হয়? বিশ্বের বৃহত্তম বাকহুইট বা ঢেমসি উৎপাদনকারী দেশগুলির মধ্যে রয়েছে রাশিয়া, চিন এবং কাজাখস্তান। এই তালিকায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চতুর্থ স্থানে রয়েছে। ইউক্রেন এবং কিরগিজস্তানের মতো দেশগুলিও ব্যাপকভাবে ঢেমসি চাষ করে এবং এটি তাদের নিয়মিত খাদ্যতালিকার একটি অংশ জুড়ে থাকে। বিশ্বের অনেক জায়গায় ঢেমসি বিভিন্ন উপায়ে ব্যবহৃত হয়। জাপানে ঢেমসি আটার নুডলস বিশেষ জনপ্রিয়। চিনে এটি ভিনিগার তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। ঢেমসির আটার কেক, প্যানকেক ইত্যাদি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপে খুব জনপ্রিয়। (Disclaimer: প্রতিবেদনের লেখা তথ্য News18 বাংলার নিজস্ব মত নয় ৷ সঠিক ফল পাওয়ার জন্য বিশেষজ্ঞের সঙ্গে যোগাযোগ করুন ৷ )
বাংলা খবর/ছবি/লাইফস্টাইল/
Explainer: নবরাত্রিতে খাওয়া হয় দেশ জুড়ে, কীভাবে তৈরি হয় ‘ঢেমসি’-র আটা, কীভাবেই বা বিষাক্ত হয়ে ওঠে?