লিখেছিলেন 'আসছে বছর আবার হবে', আগুনের পরশমণি প্রাণে ছুঁইয়ে জীবনের শেষ দুর্গাপুজোতে ঐন্দ্রিলা, রয়ে গেল ছবি

শত প্রতিকূলতাকে কাটিয়ে হাসিমুখে জীবনকে বরণ করে নেওয়ার আর এক নামই ঐন্দ্রিলা। বার বার জীবনযুদ্ধে জয়ী হয়েছেন তিনি। জীবনের প্রতিটি পল উপভোগ করতে চেয়েছেন। দু মাস আগে দুর্গাপুজোর সময়েও ঝলমল করে উঠেছিল তাঁর হাসিমুখ।

এই সাজেই মহালয়ায় ধরা দিয়েছিলেন ঐন্দ্রিলা। এক বাংলা চ্যানেলে মহালয়ার সকালে বিশেষ অনুষ্ঠানে দশমহাবিদ্যা-র এক রূপে তাঁকে পান দর্শকরা। তাঁকে দেখা গিয়েছিল মাতঙ্গীর রূপে।

পুজো নিয়ে আলাদা কোনও পরিকল্পনা করতে পারেননি ঐন্দ্রিলা। দফায় দফায় কেমোথেরাপির মাঝে বাড়িতেই কেটেছে পুজোর দিনগুলি।

মুর্শিদাবাদে ঐন্দ্রিলাদের দেশের বাড়িতে দুর্গাপুজো হয়। আগে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ও ঘনিষ্টজনদের মাঝে দুর্গাপুজো সেখানেই কাটাতেন তিনি।

সনাতনী ঐতিহ্যবাহী এই রূপেই সকলকে বার্তা দিয়েছিলেন ঐন্দ্রিলা, পুজো আসছে।

সাদা সিল্ক শাড়ির সঙ্গে এলো খোঁপায় ফুলের থোকা। এই শ্বেতশুভ্র রূপেই মহাষষ্ঠীতে অনুরাগীদের শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন তিনি।

দশভুজার সামনে দাঁড়িয়ে মহাষ্টমী পুজোর সাক্ষী ছিলেন ঐন্দ্রিলা। সকলকে জানিয়েছিলেন শারদ শুভেচ্ছা।

নিজেও সক্রিয় ভাবে অংশ নিয়েছিলেন দুর্গাপুজোর নানা কাজে।

নিজের জীবনদীপ ক্রমশ স্তিমিত হয়ে পড়ছিল। সে দুঃখ ভুলে তিনি প্রজ্বলন করেছিলেন আনন্দ-দীপ।

আগুনের পরশমণির স্পর্শে তিনি সারা রাত ফুটিয়ে তুলেছেন নতুন নতুন তারা।

ব্যক্তিগত জীবনে তিনি লড়াইয়ের প্রতিভূ। জীবনকে কষ্টিপাথরে যাচাই করে তৈরি করেছিলেন কাঁচা সোনা।

হাতে ধরে আছেন প্রস্ফুটিত পদ্ম। মাথায় এক থোকা ফুল। এই ছবি শেয়ার করে ঐন্দ্রিলা অনুরাগীদের জন্য লিখেছিলেন 'আসছে বছর আবার হবে।' তখন কে আর ভেবেছিল তিনি নিজেই থাকবেন না আগামী পুজোয়।

বাড়ির লক্ষ্মীপুজোতেও আয়োজনের সর্বাগ্রে ছিলেন ঐন্দ্রিলা। সেদিনও যত্ন নিয়ে সাজিয়েছিলেন নিজেকে।

পুজো আসে। পুজো যায়। রয়ে যায় ঐন্দ্রিলার সদাহাস্য মুখখানি।

দর্শকদের হৃদমাঝারে তিনি জীবনেরই আর এক নাম।