প্যান, আধার লিঙ্ক না করানো থাকলে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বন্ধ হয়ে যাবে না তো? জেনে রাখুন সত্যিটা!

নাগরিক যতই দায়িত্বজ্ঞানহীন হোক না কেন, সরকারের কিন্তু ধৈর্য অপরিসীম। এই নিয়ে তো আর কমবার প্যান কার্ড এবং আধার কার্ড লিঙ্ক করানোর সময়সীমা বাড়ানো হল না।

শেষ পর্যন্ত তা এসে ঠেকেছে ৩০ জুন, ২০২৩ তারিখ পর্যন্ত। এই সময়সীমার মধ্যেও যদি দুই কার্ড লিঙ্ক করানো না হয়, তাহলে প্যান নিষ্ক্রিয় করে দেওয়া হবে।

আর এই জায়গা থেকেই দেখা দিয়েছে ধন্দ- প্যান কার্ড নিষ্ক্রিয় হয়ে গেলে কি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টও বন্ধ হয়ে যাবে?

সবার প্রথমে জানিয়ে রাখা ভাল যে এমন কিছু হবে না, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট যেমন আছে, তেমনই থাকবে। তবে এটিএম থেকে টাকা তোলা গেলেও চেকের সাহায্যে টাকা তুলতে সমস্যা হতে পারে।

কেন না, ব্যাঙ্কে প্যান কার্ডের যে তথ্য দাখিল করা রয়েছে, তা তো আর বৈধ নয়, আয়কর দফতরের তরফ থেকে ওই কার্ডের সব তথ্য নিষ্ক্রিয় করে দেওয়া হয়েছে।

কেন না, ব্যাঙ্কে প্যান কার্ডের যে তথ্য দাখিল করা রয়েছে, তা তো আর বৈধ নয়, আয়কর দফতরের তরফ থেকে ওই কার্ডের সব তথ্য নিষ্ক্রিয় করে দেওয়া হয়েছে।

ফলে, ব্যাঙ্ক খুব স্বাভাবিক ভাবেই অ্যাকাউন্টে টাকা জমা এবং তোলার ক্ষেত্রে সহযোগিতা করবে না। বিশেষ করে তা যদি ৫০ হাজার টাকার উর্ধ্বে হয়, তাহলে তো ভুগতেই হবে।

শুধু এখানেই প্যান কার্ড নিষ্ক্রিয় হয়ে গেলে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সংক্রান্ত জটিলতা শেষ হয়ে যাচ্ছে না। প্যান কার্ড নিষ্ক্রিয় হয়ে গেলে আইটিআর ফাইল করা যাবে না।

এর ফলে আটকে থাকা রিটার্ন বা রিফান্ড ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা পড়বে না। ফিক্সড ডিপোজিট থাকলে তার পুনর্নবীকরণ বা রিনিউয়াল নিয়েও সমস্যা হতে পারে।

তাহলে উপায়? প্যান কার্ড আবার তার পূর্বের বৈধতার জায়গায় ফিরিয়ে আনতে হবে। তা সক্রিয় করতে হবে, জরিমানা দিয়ে। তারপর সেই প্যান কার্ড ফের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সঙ্গে যুক্ত করতে হবে।

কী ভাবে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে প্যান সংযুক্ত করতে হবে দেখে নেওয়া যাক— ইন্টারনেট ব্যাঙ্কিংয়ের মাধ্যমে: প্রথমেই নিজের ইন্টারনেট ব্যাঙ্কিং অ্যাকাউন্টে লগ ইন করে নিজের প্রোফাইলে গিয়ে খুঁজতে হবে Service Requests, Services, অথবা PAN Registration-এর অপশন। এক একটি ব্যাঙ্কে এক এক রকম অপশন থাকতে পারে।

প্রয়োজনীয় অপশন বেছে নিয়ে PAN Card Updation, Link Your PAN বা Update PAN অপশন বেছে নিতে হবে। এরপর নিজের প্যান কার্ড নম্বর লিখতে হবে। রেজিস্টার্ড ই-মেল আইডি, জন্মতারিখও জানতে চাওয়া হতে পারে। সব ঠিক থাকলে ২ থেকে ৭টি কার্যদিবসের মধ্যে প্যান এবং ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সংযুক্ত হয়ে যাবে।

ফোন হটলাইনের মাধ্যমে: ব্যাঙ্কের কাস্টমার কেয়ার সেন্টারে কল করতে হবে। (কোনও ভাবেই ইন্টারনেট থেকে এই নম্বর সংগ্রহ করা ঠিক নয়। তাতে জালিয়াতির সম্ভাবনা থাকে।) কাস্টমার কেয়ার একজিকিউটিভকে নিজের অ্যাকাউন্ট-প্যান লিঙ্কের বিষয়ে জানাতে হবে।

গ্রাহক যাচাই করার জন্য কিছু প্রশ্ন করা হতে পারে। প্যান কার্ড নম্বর জানতে চাওয়া হতে পারে। কল শেষ হলে একটি ‘সার্ভিস রিকোয়েস্ট নম্বর’ এবং কনফার্মেশন দেওয়া হবে। ৭টি কাজের দিনের মধ্যে অ্যাকাউন্টের সঙ্গে প্যান লিঙ্ক হয়ে যাবে।

সরাসরি ব্যাঙ্কে গিয়ে: সরাসরি নিজের ব্যাঙ্কে শাখায় উপস্থিত হয়ে এই সংযুক্তি করিয়ে নেওয়া যেতে পারে।

নিজের অ্যাকাউন্টে প্যান আপডেট অনুরোধ জানিয়ে ব্রাঞ্চ ম্যানেজারকে একটি চিঠি দিতে হবে। সঙ্গে দিতে হবে যথাযথ ভাবে পূরণ করা KYC ফর্ম এবং প্যান কার্ডের একটি স্ব-প্রত্যয়িত নকল ও প্রয়োজনীয় অন্য নথির প্রত্যয়িত নকল।