ভারতীয় '১' টাকা কোথায় গেলে '২৬০' হয়ে যায় জানেন...? এখানে লাখপতি হওয়া কে আটকায়!

মুদ্রা এক অত্যন্ত আশ্চর্য জিনিস। প্রতিটি দেশের মুদ্রা সেই দেশটির পরিচয় তুলে ধরতে পারে এক নিমেষে। কারণ এই মুদ্রা বা কারেন্সি দিয়েই বুঝে নেওয়া যায় সেই দেশের আন্তর্জাতিক গুরুত্ব। আচ্ছা আপনি কি জানেন আমাদের দেশ ভারতের মুদ্রার গুরুত্ব ঠিক কতটা? জানেন কী বিশ্বের বাজারে কিছু কিছু দেশের মুদ্রার তুলনায় ভারতীয় রুপির শক্তি ঠিক কতটা বেশি?

আসলে, বিশ্বের অনেক দেশ আছে যেখানে আপনার কাছে মাত্র ৫০০ বা ২০০০ টাকা মতো থাকলেই আপনি নিজেকে কোটিপতির মতো অনুভব করতে পারেন। কারণ এই পৃথিবীতেই এমন কিছু দেশ আছে যেখানে ভারতীয় রুপির মূল্য এত বেশি যে সামান্য সঞ্চয় থেকেই অনেক কিছু কিনে ফেলতে পারবেন চোখের নিমেষে।

কোথায় কোথায় মুদ্রা সস্তা?জানলে অবাক হবেন যে ইরানি রিয়াল থেকে ভিয়েতনামী ডং, সিয়েরা লিওন অথবা গিনি ফ্রাঙ্ক এই ধরনের দুর্বল মুদ্রাগুলির মধ্যে অন্যতম। তাই এই দেশগুলিতে, ভারতীয় রুপি কিন্তু ভ্রমণকারীদের জন্য দুর্দান্ত চমৎকার কেনাকাটার বা খরচের সুযোগ করে দেয়। এই ক্রয় ক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি কম খরচে দীর্ঘদিন ভ্রমণ করা সম্ভব করে তুলতে পারে এই সমস্ত দেশের মুদ্রা।

জেনে রাখা ভাল যে ভারতীয় রুপি বা ভারতের টাকা বিশ্বের অনেক মুদ্রার তুলনায় কিন্তু অনেক বেশি শক্তিশালী। কিছু দেশে, ৫০০ বা ২০০০ টাকার মূল্য মুহূর্তের মধ্যে লাখ লাখ টাকায় পৌঁছতে পারে। আসুন এই প্রতিবেদনে চিনে নেওয়া যাক এমনই ৫টি দেশের মুদ্রা। এই সব দেশের কারেন্সির তুলনায় কিন্তু ভারতীয় রুপি অনেক বেশি মূল্যবান। আপনি চাইলেই এই সব জায়গায় গিয়ে লাখে কামাতে পারেন।

ভিয়েতনামী ডং:ভিয়েতনামী ডংকে বিশ্বের সবচেয়ে দুর্বল মুদ্রাগুলির মধ্যে একটি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বর্তমান হিসেবে অনুযায়ী ১ ভারতীয় মুদ্রায় বা এক ভারতীয় রুপিতে প্রায় ৩০০ ডং পাওয়া যায়। মনে করা হয় যে সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে ভিয়েতনামী পণ্যের দাম কম রাখে যাতে বিদেশি বাজারে সেগুলির দাম সাশ্রয়ী হয় এবং রফতানিও বাড়ে। অতএব ভিয়েতনাম বেড়াতে গেলে কম খরচেই যে দুর্দান্ত ট্রিপ হতে পারে তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই।

ইরানি রিয়াল:ইরানি রিয়াল ধারাবাহিকভাবে বিশ্বের দুর্বলতম মুদ্রাগুলির মধ্যে স্থান পেয়ে এসেছে। ২০২৫ সালের মাঝামাঝি সময়ে, এক ভারতীয় টাকার মূল্য প্রায় ৪৯০-৫০০ রিয়াল হতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এর অর্থ হল, যদি আপনি এখানে ১০,০০০ টাকা নিয়ে যান তাহলে আপনার কাছে ৫ মিলিয়ন রিয়াল হবে। আপনার সাধারণ জ্ঞানের ভাণ্ডারে এই তথ্যটি নিশ্চিন্তে নোট করে রাখতে পারেন যে এটিই সেই দেশ যার মুদ্রা আন্তর্জাতিক বাজারে সবচেয়ে কম বলে বিবেচিত হয়।

ইন্দোনেশীয় মুদ্রার বিনিময় মূল্য?ইন্দোনেশিয়ান রুপিয়াহকেও বিশ্বের অন্যতম সবচেয়ে কম মূল্যের মুদ্রা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এক ভারতীয় রুপি প্রায় ১৮৫ থেকে ১৯০ ইন্দোনেশিয়ান রুপিয়ার সমতুল্য। তা সত্ত্বেও, ইন্দোনেশিয়ার অর্থনীতি কিন্তু সম্পূর্ণ দুর্বল নয়। আমদানি বাজার, আন্তর্জাতিক বাজারের ওঠানামা এবং দেশীয় পণ্যের দামের কারণে রুপিয়ার মূল্য এখনও বার বার বদলাতে থাকে। এই দেশে মাত্র ৫,০০০ রুপি নিয়ে পৌঁছে গেলেই ভারতীয়রা কোটিপতির মতো অনুভব করতে পারেন।

লাওসলাওসের মুদ্রা, কিপ, বিশ্বের সবচেয়ে দুর্বল মুদ্রাগুলির মধ্যে একটি হিসাবে বিবেচিত হয়। প্রকৃতপক্ষে, এখানে এক ভারতীয় টাকা প্রায় ২৫০ থেকে ২৬০ কিপের সমান। লাওসের অর্থনীতি এখনও ক্রমশ উন্নত হচ্ছে। মূলত কৃষি এবং জলবিদ্যুতের উপর নির্ভরশীল এই দেশের অর্থনীতি। তবে, পর্যটকদের জন্য লাওস নিঃসন্দেহে একটি খুব সাশ্রয়ী মূল্যের দেশ যেখানে বেড়াতে গেলে খুব অল্প অর্থের বিনিময়েই একটি দুর্দান্ত ভ্রমণ অভিজ্ঞতার সাক্ষী হতে পারেন আপনি।

গিনি, আফ্রিকা:বক্সাইট এবং লৌহ আকরিকের মতো মূল্যবান খনিজ পদার্থে সমৃদ্ধ একটি আফ্রিকান দেশ হল গিনি। তবে এত খনিজ সম্ভার থাকা সত্ত্বেও এই দেশটির মুদ্রা, গিনি ফ্রাঙ্ক, অত্যন্ত দুর্বল। মনে করা হয় যে আজকের দিনে মাত্র ১ ভারতীয় টাকা প্রায় ১০০ গিনি ফ্রাঙ্কের সমান। এর প্রধান কারণ দেশটির চলতি রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা এবং শক্তিশালী পরিকাঠামোর অভাব।