Astrology: রোজ ২-৩-৪ টের সময় ঘুম ভাঙছে? শুভ নাকি অশুভ! কীসের ইঙ্গিত দিচ্ছে প্রকৃতি? জ্যোতিষী জানাচ্ছে কী প্রভাব পড়বে আপনার জীবনে

ঘুম মানুষের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি শারীরিক কার্যকলাপ। ভাল খাদ্যাভ্যাসের মতো, ভাল ঘুমও সুস্থ থাকার চাবিকাঠি। এজন্যই ডাক্তাররা সবসময় একটি নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমাতে যাওয়া এবং ঘুম থেকে ওঠার পরামর্শ দেন। প্রতিটি বয়সে কতটা ঘুম প্রয়োজন তা জানা প্রত্যেকের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

কিন্তু কখনও কখনও, কিছু মানুষ রাতে হঠাৎ ঘুম থেকে ওঠে। আমাদের মধ্যে কেউ কেউ প্রতিদিন একই সময়ে ঘুম থেকে ওঠে, আবার কেউ কেউ রাতে হঠাৎ ঘুম থেকে ওঠে। আপনার হঠাৎ ঘুম ভেঙে যেতে পারে, বিশেষ করে ভোর ২টো, ৩টো বা ৪টের দিকে, কোনও অ্যালার্ম, বাইরের শব্দ বা অন্য কোনও কারণ ছাড়াই। আপনি হয়তো বুঝতে পারবেন না কেন আপনি হঠাৎ এভাবে ঘুম থেকে উঠলেন।

আসলে, এটি কেবল ঘুমের সমস্যা নয়। ভারতীয় সংস্কৃতি এবং আধ্যাত্মিক বিশ্বাস অনুসারে, একই সময়ে বারবার ঘুম থেকে ওঠা হৃদয় থেকে আসা একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রাকৃতিক সংকেত। বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে সেই সঙ্কেতটি কী এবং এটি আপনাকে কী বলতে চাইছে তা বোঝা গুরুত্বপূর্ণ।

জ্যোতিষীদের মতে, ব্যস্ত দিনের ব্যস্ততার মধ্যে আমরা প্রায়শই আমাদের ভেতরের কণ্ঠস্বরকে উপেক্ষা করি। এই কারণেই গভীর রাতে, যখন পৃথিবী শান্ত এবং তুলনামূলকভাবে স্থির থাকে, তখন আমাদের ভেতরের কণ্ঠস্বর আমাদের জাগিয়ে তোলে।

রাঁচির বিখ্যাত জ্যোতিষী সন্তোষ কুমার চৌবে (রাঁচি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জ্যোতিষশাস্ত্রে স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত) পরামর্শ দেন, 'রাত ৩টা থেকে ৪টার মধ্যে সময় খুবই গুরুত্বপূর্ণ। একে ব্রহ্ম মুহুর্ত বলা হয়। এই সময়ে অনেক প্রাকৃতিক শক্তি আপনার সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের চেষ্টা করে, যা উপেক্ষা করা উচিত নয়। এই সময়ে কিছু বিশেষ কাজ করা গুরুত্বপূর্ণ।'

এই বিশেষ প্রম্পটের উদ্দেশ্য হল আপনাকে এমন কিছুর প্রতি মনোযোগ দিতে বলা যা আপনার সারাদিন ধরে অমীমাংসিত । এটি একটি অমীমাংসিত আবেগ, একটি লুকানো শোক, অথবা আপনি যে পরিবর্তন আনতে চাইছেন তা হতে পারে।

সময়ের গোপন অর্থ: আবারও, ঘুম থেকে ওঠার সময়টির বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে। মধ্যরাতে ঘুম থেকে ওঠা একটি পর্বের সমাপ্তি এবং একটি নতুন পর্বের সূচনার প্রতীক। বিশেষ করে, ভোর ৩টে থেকে ৪টের মধ্যে সময়কে 'আধ্যাত্মিক সময়'বলা হয়।

বিশ্বাস করা হয় যে এই সময় শারীরিক ও আধ্যাত্মিক জগতের মধ্যে পর্দা পাতলা হয়ে যায়। এটি প্রার্থনা, প্রতিফলন এবং শুভ লক্ষণের জন্য একটি শক্তিশালী সময়। ভোর ৪টে থেকে ৫টের মধ্যে ঘুম থেকে ওঠা ইঙ্গিত দেয় যে আপনার আত্মা নতুন শুরু এবং আগামী দিনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে।

এর অর্থ হল এই জাগরণের পিছনে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কারণ রয়েছে। প্রথমত, আপনার এখনও অমীমাংসিত ব্যথা এবং পুরনো স্মৃতি থাকতে পারে। দ্বিতীয়ত, আপনার স্বপ্নগুলি আপনাকে জীবনের সঠিক পথ খুঁজে পেতে পরিচালিত করার চেষ্টা করতে পারে।

তৃতীয়ত, আপনার মন হয়তো অবচেতনভাবে পুরনো চিন্তাভাবনা এবং খারাপ অভ্যাস ত্যাগ করছে। আবার, এটি আপনার বিবেকের কাছ থেকে ধ্যান বা প্রার্থনা শুরু করার একটি সংকেত হতে পারে।

এই পরিস্থিতিতে কী করবেন? ঘুম থেকে ওঠার পর আতঙ্কিত হওয়ার কোনও কারণ নেই। এটি কোনও সমস্যা নয়, এটিকে স্ব-কথোপকথনের লক্ষণ হিসেবে বিবেচনা করুন।

ধীরে ধীরে বসুন এবং মাঝে মাঝে গভীর শ্বাস নিন। সেই মুহূর্তে আপনার মনে কী চিন্তা, অনুভূতি এবং স্মৃতি আসে তা লক্ষ্য করুন। সেগুলো থাকতে দিন, বিচার করবেন না বা তাৎক্ষণিক কোনও মতামত তৈরি করবেন না।

এবার নিজেকে আস্তে আস্তে জিজ্ঞাসা করুন, 'আমার কী জানা দরকার?' অথবা একটি ডায়েরি রেখে যা মনে আসে তা লিখে রাখো। এই সময়ে কিছুক্ষণ ধ্যান বা মন্ত্র জপ করলে তোমার মানসিক শক্তি স্থিতিশীল হতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা সুপারিশ করেন যে, যদি আপনি হঠাৎ একই সময়ে ঘুম থেকে ওঠেন, তাহলে বিভ্রান্ত না হয়ে শ্রদ্ধার সঙ্গে সাড়া দিন। এটি আপনার অন্তর্দৃষ্টিকে বুঝতে সাহায্য করবে যে এর বার্তা আপনার কাছে পৌঁছেছে। ফলস্বরূপ, রাতের জাগরণের সংখ্যা ধীরে ধীরে হ্রাস পাবে।

তবে, প্রথমে আপনার অনিদ্রার শারীরিক কারণগুলি অনুসন্ধান করা উচিত। অনিদ্রা সবসময় আধ্যাত্মিক হয় না। এর শারীরিক কারণও থাকতে পারে, যেমন মানসিক চাপ, অতিরিক্ত ক্যাফেইন গ্রহণ, রক্তে শর্করার মাত্রার পরিবর্তন, ঘুমের শ্বাসকষ্ট, অথবা আপনার গ্রহণ করা ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া।

যদি আপনি সারাদিন ধরে ঘুমের মধ্যে শ্বাসকষ্ট, জোরে নাক ডাকা, তীব্র উদ্বেগ এবং চরম ক্লান্তির মতো লক্ষণগুলি অনুভব করেন, তাহলে অবিলম্বে একজন ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করুন। আপনার শারীরিক স্বাস্থ্য ভাল থাকলেই আপনি যেকোনও আধ্যাত্মিক বার্তা স্পষ্টভাবে বুঝতে পারবেন।

শাস্ত্রের পণ্ডিতরা এই উপলক্ষকে আশীর্বাদ হিসেবে দেখার পরামর্শ দেন। রাতের এই শান্ত সময়টিকে একটি চমৎকার উপহার হিসেবে বিবেচনা করা উচিত। তারা বলেন যে এটি নিজের অন্তরের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের একটি বিরল সুযোগ।

এই সময়ে, আপনি একটি মোমবাতি জ্বালাতে পারেন, আপনার হৃদয়ের উপর হাত রাখতে পারেন, অথবা ধীরে ধীরে শ্বাস নিতে পারেন এবং শান্তি উপভোগ করতে পারেন। এই ছোট্ট অভ্যাসটি উদ্বেগ কমাতে এবং অভ্যন্তরীণ শান্তি আনতে অত্যন্ত কার্যকর হতে পারে। (ডিসক্লেইমার: এই খবরের সঙ্গে সম্পর্কিত তথ্য নিউজ 18 বাংলা নিশ্চিত করে না। বিশেষত আপনার সাধারণ জ্ঞান বৃদ্ধি করাই আমাদের এই প্রতিবেদনের মূল উদ্দেশ্য। আমরা বিভিন্ন নির্ভরযোগ্য ওয়েবসাইট থেকে আপনার জন্য এই ধরনের তথ্য সংগ্রহ করার চেষ্টা করেছি। এই সংক্রান্ত চূড়ান্ত জ্ঞানের জন্য অবশ্যই বিশেষজ্ঞের মত নেওয়া কাম্য।)