শুধু কি নেইমার কাঁদলেন? কাঁদল গোটা ব্রাজিল আর বিশ্বের কোটি কোটি হলুদ জার্সির সমর্থকরা। দক্ষিণ কোরিয়ার বিরুদ্ধে সেলেকাওদের শৈল্পিক ফুটবলের পর আশায় বুক বেঁধেছিল আট থেকে আশি, সমস্ত ব্রাজিল ভক্ত। কিন্তু ক্রোয়েশিয়া তো আর কোরিয়া নয়। শিল্প বনাম শক্তির লড়াইয়ে বাজিমাত করল ক্রোটরা। ফিজিক্যাল এন্ড টেকনিক্যাল লড়াইয়ে প্রতি মুহূর্তে ব্রাজিলকে টেক্কা দিল গতবারের রানার্সরা। ১২০ মিনিট যে লড়াইটা করলেন লুকা মদরিচরা, তা স্বর্ণ অক্ষরে লেখা থাকবে ফুটবল ইতিহাসের পাতায় পাতায়।
advertisement
আরও পড়ুন: কাঁদতে কাঁদতে মাঠ ছাড়লেন নেইমার, স্বপ্নের নায়ককে সান্ত্বনা দিতে মাঠে খুদে এই ক্রোট সমর্থক
নেইমারদের যাবতীয় আক্রমণ ক্রোয়েশিয়ার বক্সের কাছেই আটকে গেল। আর যে ১২-১৩টা বল ডিফেন্স টপকে পৌঁছল তার প্রত্যেকটাই আটকে দিলেন ক্রোয়েশিয়ার গোলকিপার লিভাকোভিচ। ১২০ মিনিটের লড়াইয়ে একবারই মাত্র পরাস্ত হয়েছিলেন তিনি নেইমারের অসামান্য দক্ষতার কাছে। ৯০ মিনিট গোল শূন্য থাকার পর অতিরিক্ত সময়ের ফার্স্ট হাফের শেষ মুহূর্তে বিশ্বকাপের অন্যতম সেরা গোল করেছিলেন নেইমার। তবে নজরকাড়া গোলে ব্রাজিলের জার্সিতে পেলের সর্বাধিক ৭৭টি গোল করার রেকর্ড ছুঁয়েও চোখের জলে বিশ্বকাপের মঞ্চ ছাড়তে হল তাঁকে। সৌজন্যে কোচ তিতের ভুল পরিকল্পনা আর ক্রোট গোলরক্ষক লিভকোভিচের হাত।
এক গোলে এগিয়ে যাওয়ার পর অতিরিক্ত সময়ের দ্বিতীয়ার্ধে ডিফেন্স আঁটোসাঁটো না করে গোল সংখ্যা বাড়ানোর লক্ষ্যে এগোলেন তিতের ছেলেরা। আর তখনই ১১৭ মিনিটে পাল্টা আক্রমণে ক্রোটদের সমতায় ফিরিয়ে আনলেন পেটকোভিচ। ১২০ মিনিটের খেলা অমীমাংসিত থাকার পর খেলা গড়ায় পেনাল্টি শ্যুট আউটে। জাপানের বিরুদ্ধে টাইব্রেকারে জেতা ক্রোয়েশিয়া ব্রাজিলের সঙ্গেও পেনাল্টিতে আত্মবিশ্বাসী ছিল। ব্রাজিলের বিরুদ্ধে আরও এক বার পাহাড় হয়ে দাঁড়ালেন ক্রোয়েশিয়ার ৬ ফুট ২ ইঞ্চি উচ্চতার গোলরক্ষক।
আরও পড়ুন: কাঁদলেন নেইমার, আনন্দে নাচলেন মেসি, কাতারের এক মায়াবী রাতে ব্রাজিল বিদায়, জয়ী আর্জেন্টিনা
পেনাল্টি শ্যুট আউটে প্রথমেই ব্রাজিলের রদ্রিগোর শট রুখে দিলেন লিভাকোভিচ। এরপর লুকা মদরিচরা সব বলই জালে জড়ালেন। অন্যদিকে ক্যাসেমিরো ও পেদ্রো ব্রাজিলের পক্ষে গোল করলেও চতুর্থ শট পোস্টে মারলেন মার্কুইনোস। সঙ্গে সঙ্গেই শেষ হয়ে গেল যাবতীয় স্বপ্ন। ১৯৮৬ বিশ্বকাপের পর এই প্রথম পেনাল্টি শ্যুট আউটে হার মানতে হল ব্রাজিলকে। তিতের স্ট্র্যাটেজি নিয়ে উঠল প্রশ্ন। কেন পেনাল্টি শ্যুট আউটের শুরুতেই অভিজ্ঞ নেইমারকে শট মারতে পাঠালেন না সেলেকাওদের হেডস্যার। যদিও বিদায়ের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ব্যর্থতার দায় নিয়ে ব্রাজিল কোচের পদ থেকে পদত্যাগ করলেন তিতে।