সৌদি আরব - ২
#দোহা: কথায় বলে খেলায় জয় এবং পরাজয় পাশাপাশি থাকে। কিন্তু ছোট দল যখন বড় দলকে পরাজিত করে, তখন বলা হয় আপসেট। অতীতে বিশ্বকাপে এমন আপসেট বেশ কয়েকবার ঘটেছে। উত্তর কোরিয়ার কাছে ইতালির হার, দক্ষিণ কোরিয়ার কাছে জার্মানির হার, অথবা আমেরিকার কাছে ইংল্যান্ডের হার। তাই বলে সৌদি আরবের কাছে প্রবল পরাক্রমশালী আর্জেন্টিনা হেরে যাবে এমনটা স্বপ্নেও ভাবা যায়নি।
advertisement
দ্বিতীয়ার্ধের প্রথম থেকেই বদলে গেল খেলার চিত্রপট। ৪৮ মিনিটে সবাইকে অবাক করে সৌদিকে সমতায় ফিরিয়ে আনলেন আল শেহরি। বক্সের কোনাকুনি তার বা পায়ের শট জড়িয়ে গেল জালে। গোদের ওপর বিষফোঁড়া। ৫৩ মিনিটে এগিয়ে গেল সৌদি আরব। আল দোসারির শট প্রচন্ড গতিতে এমিলিয়ানোর নাগাল এড়িয়ে গোলে চলে গেল। পাঁচ মিনিটের ব্যবধানে আন্ডার ডগ সৌদিরা ফেভারিট আর্জেন্টিনাকে মাটিতে নামিয়ে আনলেন।
আলভারও, ফার্নান্ডেজ এবং লিসান্দ্র মার্টিনেজকে একসঙ্গে নামালেন আর্জেন্টাইন কোচ। মনে রাখতে হবে এর কয়েক মিনিট আগে চোট পেয়ে উঠে গেলেন সৌদির অধিনায়ক সালমান আল ফারাজ। বিশ্বকাপের ইতিহাসে আজকের আগে আর্জেন্টিনা বনাম সৌদি আরবের সাক্ষাৎকার হয়েছিল মোট চারবার। দুবার জিতেছিল আর্জেন্টিনা, দুবার ড্র।
ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে আর্জেন্তিনা এখন তৃতীয় স্থানে। আর সৌদি আরব রয়েছে ৫১ নম্বরে। খেলার দেড় মিনিটের মাথায় প্রথম সুযোগ পেয়েছিলেন মেসি। তার শট বাঁচিয়ে দেন সৌদি গোলরক্ষক। তবে গোলের জন্য বেশি অপেক্ষা করতে হয়নি আর্জেন্টিনাকে। বক্সের মধ্যে প্যারেডেসকে ফাউল করার কারণে ভিডিও রেফারেল দেখে পেনাল্টি নির্দেশ দেন রেফারি। গোল করতে ভুল করেননি মেসি। বিশ্বকাপে এই নিয়ে তার সপ্তম গোল এসে গেল।
বাঁদিক থেকে আর্জেন্টিনার গোমেজ নজরে পড়ছিলেন। কিন্তু ডি মারিয়া প্রথমার্ধ পর্যন্ত নিজের স্বাভাবিক খেলা তুলে ধরতে পারেননি। ২২ মিনিটে মেসি দ্বিতীয় বার বল জালে জড়িয়েছিলেন। কিন্তু অফসাইড হয়ে যায়। যত সময় যাচ্ছিল উৎকণ্ঠা বাড়ছিল আর্জেন্টিনার সমর্থকদের।
আর্জেন্টিনা আক্রমণ তুলে আনছিল। কিন্তু বক্সে ফিনিশ হচ্ছিল না। সৌদির গোলরক্ষক এবং ডিফেন্ডার সাহসী লড়াই চালিয়ে গেলেন। অতিরিক্ত ৮ মিনিট সময় দেওয়া হয়েছিল। আশা করা হচ্ছিল আর্জেন্টিনা হয়তো হার বাঁচিয়ে নেবে। একটি গোল শোধ করে দেবে তারকা খচিতদল। কিন্তু সেটা আর হল না। সৌদি আরবের সাহসের জয় হল। আন্তর্জাতিক আঙ্গিনায় ৩৬ ম্যাচ অপরাজিত থাকার পর মোক্ষম সময় ভেঙে গেল আর্জেন্টিনার রেকর্ড।