কলকাতার সবচেয়ে বড় পাইকারি মার্কেট। পুজোর আগে সেই বাগরি মার্কেট পুড়ে ছাই...
প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, আগুন প্রথমে লাগে মার্কেটের বাইরে, ফুটপাথে। সেই আগুনই ছড়িয়ে পড়ে। বাগরি মার্কেটে মোট ৮টি ব্লক। কোনওটায়া ঠাসা ওষুধ, কোনওটায় চামড়ার সামগ্রী। কোনওটায় পারফিউম-গয়না। নানা রকম দাহ্য পদার্থ থাকায় আগুন গিলে খেতে শুরু করে বাগরি মার্কেটকে। ভয়াবহ আগুনে বাগরি মার্কেটের বিভিন্ন জায়গায় ফাটল ধরে যায়। আকাশ ঢেকে যায় কালো ধোঁয়ায়....বহুদূর থেকে দেখা যাচ্ছিল সেই ধোঁয়া। বাগরি মার্কেটের তিন তলা, সেন্ট, ডিওডোরেন্ট, নেল পলিশের মতো নানা প্রসাধণী সামগ্রীতে ঠাসা। রবিবার সকালে এই তিন তলায় আগুন পৌঁছতেই তা ভয়াবহ আকার নেয়।
advertisement
পর পর বিস্ফোরণের আওয়াজ...! ফাটতে থাকে বিভিন্ন সিলিন্ডার। তিনতলায় থেকে ক্রমে আগুন ছড়াতে থাকে। চার তলায় বেশ কিছু অফিস রয়েছে। কিন্তু, পাঁচ ও ছ’তলায়, ডিওডরেন্টের বটলিং প্ল্যান্ট। সে সবেও আগুন লেগে যায়। দাউ দাউ করে জ্বলতে থাকে । আগুনের নীল শিখায় বোঝা যায়, সিলিন্ডার ব্লাস্ট করছে।
রবিবার বিকেলের দিকে আগুন পৌঁছে যায় ছাদে। জলের ট্যাঙ্কে আগুন লাগে। ছাদে গিয়ে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার জাভেদ শামিম। স্থানীয়দের একাংশের দাবি, বাগরি মার্কেটের ছাদে গ্যাস সিলিন্ডারও মজুত ছিল। আগুনে সেগুলিও ফাটতে শুরু করে।
শনিবার রাত থেকেই একে একে দমকলের ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। যান কলকাতা পুলিশ ও দমকলের শীর্ষ কর্তারাও। রাত ভোর হয়েছে। কিন্তু, বাগরি মার্কেটের আগুন নেভেনি। সকাল গড়িয়ে বিকেল....সন্ধে থেকে রাত। তবু বাগরির আগুন নেভানো যায়নি। পরিস্থিতি ক্রমেই জটিল হতে থাকে। কিছুতেই বাগে আনা যাচ্ছিল না আগুন। তখন দমকলের ডিজির গলাতেও সুর বদল।
স্থানীয়দের অভিযোগ, দমকলের কাছে পর্যাপ্ত জলের জোগান ছিল না। কিন্তু, দমকলের ডিজি এ কথা মানতে নারাজ। জলের জন্য কাজে লাগানো হয় ডিপ ওয়াটার রাইজার। নন্দরাম মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডের পর কলকাতার বারোটি জায়গায় ভূগর্ভস্থ জলের পাইপ বসানো হয়েছিল। এ দিন দুপুর থেকে ডিপ ওয়াটার রাইজারের মাধ্যমে, ভূগর্ভস্থ জল তুলে কাজে লাগাতে শুরু করে দমকল।
পুজোর আগে আগুনে ছাই বাগরি মার্কেট। আগুনে ছাই হয়ে গেল কোটি কোটি টাকার সামগ্রী।