মিছিলের শেষে বিজেপি এবং কেন্দ্রীয় সরকারকে তীব্র আক্রমণ করে তৃণমূলনেত্রী বলেন, ‘কেউ হকার, কেউ দোকানদার, কেউ বিভিন্ন জায়গায় কাজ করে তারাও ভাবচ্ছে আমাদের নাম টা বাদ যাবে না তো? পরিযায়ী শ্রমিক রা ভাবচ্ছে আমাদের নাম টা বাদ যাবে না তো? বাংলা ভাষায় কথা বললে বাংলাদেশি হয়ে যায় না তেমনই হিন্দি বা উর্দু ভাষায় কথা বললে পাকিস্তানি হয়ে যায় না। এই অর্ধশিক্ষিতদের দল বিজেপি স্বাধীনতা আন্দোলনের সময় কোথায় ছিল? তারা জানবে দেশের স্বাধীনতার ইতিহাস কী করে?’
advertisement
এসআইআর হলেও বিজেপি-র কোনও লাভ হবে না বলে দাবি করে মমতা বলেন, ‘২০২৪-এর লোকসভায় তৃণমূল পেয়েছে ৪০ শতাংশ, ওরা পেয়েছে ৩৯ শতাংশ৷ ২০০৪-এ আমি তৃণমূলের ভোট পেয়ে বাংলায় একা জিতেছিলাম৷ যদি মনে করেন ২-৩ শতাংশ ভোট বেশি পেয়ে বাংলায় সরকার গড়বেন, তাহলে মুর্খের স্বর্গে বাস করছেন৷ কারণ যাঁরা আপনাদের ভোট দিয়েছিল তাঁরা আমাদের ভোট দেবে৷ কারণ এটা মানুষের অস্তিত্বের প্রশ্ন৷ স্বাধীনতার এত বছর পরে এখন প্রমাণ দিতে হবে আমি এ দেশের নাগরিক কি না, আমি এ দেশের ভোটার কি না? ২০০১ -এর নির্বাচনের পর শেষ বার এসআইআর হয়েছিল৷ ২০০২-এ কোনও ভোট ছিল না৷ ২০০৪-এ লোকসভা ভোট হয়েছিল৷ মানে এসআইআর করতে দু-আড়াই বছর সময় লেগেছিল৷ বিহারের মানুষ বুঝতে পারেনি৷ আমরা প্রথম থেকে ধরে ফেলেছি৷ একজন ন্যায্য ভোটারের নাম বাদ গেলে বিজেপি-র সরকার ভেঙে দেব৷ ‘
তৃণমূলনেত্রী অভিযোগ করেন, রাজ্যের অনেক বুথেই ২০০২-এর তুলনায় ভোটারের সংখ্যা আশ্চর্যজনক ভাবে কমে গিয়েছে৷ আধার কার্ড তৈরির বিনিময়ে এক হাজার টাকা করে নেওয়া হলেও কেন এখন আধার কার্ডকে মান্যতা দেওয়া হচ্ছে না, সেই প্রশ্নও তোলেন তৃণমূলনেত্রী৷ তিনি বলেন, ‘এর একটাই সমাধান, দিল্লির সরকারকে বিদায় দিন৷ তাহলে আর কোনও আধার কার্ডের দরকার হবে না৷ আর কত কার্ড বানাবেন? এই ভোটার তালিকা মিথ্যে হলে আপনার সরকারও মিথ্যে৷ এই ভোটার তালিকার উপরে ভিত্তি করেই তো ২০২৪-এ আপনারা ক্ষমতায় এসেছেন৷ প্রত্যেক বছর কিছু না কিছু করতে হবে৷ নোটবন্দি করে কী হল, কালো টাকা ফিরেছে? একশো জন মানুষের মৃত্যু হয়েছে৷ তাঁদের জন্য শোকপ্রস্তাব পর্যন্ত আনেনি৷ এরা নির্লজ্জ৷ এখন তো এলআইসি-ও নিরাপদ নয়৷ যখন যা খুশি করছে৷’
তৃণমূলের মিছিল থেকে বার্তা দেওয়া হয়, ‘একজন ন্যায্য ভোটারের নাম এসআইআর-এ বাদ গেলেও তার প্রতিবাদ হবে৷ মিছিলে বিভিন্ন ধর্মের মানুষকে হাঁটতে দেখা যায়৷ মিছিলে ছিলেন মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষও৷ এসআইআর বিরোধী স্লোগান লেখা প্ল্যাকার্ড, ব্যানার হাতে নিয়ে মিছিলে হাঁটতে দেখা যায় তৃণমূলের কর্মী সমর্থকদের৷ এসআইআর-এর আড়ালে এনআরসি-র প্রক্রিয়া শুরু করা হচ্ছে বলেও মিছিল থেকে স্লোগান ওঠে৷’
জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ির কাছে মিছিল শেষ হয়৷ এসআইআর আতঙ্কে গত কয়েকদিনে রাজ্যে বেশ কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ তৃণমূল নেতৃত্বের৷ এসআইআর আতঙ্কে যাঁদের মৃত্যু হয়েছে বলে তৃণমূলের দাবি, তাঁদের নামের তালিকায় শ্রদ্ধা অর্পণ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়৷
