ইয়েমেন: এবার কি পাকিস্তানের দিকে নজর ইজরায়েলের? পাকিস্তান ঘোষণা করেছে, ইয়েমেনের একটি বন্দরে নোঙর করা তরল গ্যাস বহনকারী একটি জাহাজ ইজরায়েলি ড্রোন হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে। তবে এর যাত্রীদের, যাদের মধ্যে ২৪ জন পাকিস্তানি নাগরিকও ছিলেন, তাদের কোনও ক্ষতি হয়নি।
advertisement
পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সৈয়দ মহসিন নকভি শনিবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, গত ১৬ সেপ্টেম্বর হুথি বাহিনীর (আনসারুল্লাহ ইয়েমেন) নিয়ন্ত্রণাধীন রাস আল-আইস বন্দরে নোঙর করার সময় তরল গ্যাস বহনকারী একটি জাহাজ ইজরায়েলি ড্রোন হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এই জাহাজের যাত্রীদের মধ্যে ২৪ জন পাকিস্তানি নাগরিক, যার মধ্যে ক্যাপ্টেন, একজন নেপালি এবং ২ জন শ্রীলঙ্কার নাগরিক রয়েছেন, যারা সৌভাগ্যক্রমে ক্ষতিগ্রস্ত হননি। পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ইজরায়েলি ড্রোন হামলার পর, জাহাজের একটি তরল গ্যাস ট্যাঙ্ক বিস্ফোরিত হয় এবং ক্রুরা আগুন নেভাতে সক্ষম হয়।
তবে, গাজা সংকটকে কেন্দ্র করে মধ্যপ্রাচ্যের সামরিক মানচিত্রে ধীরে ধীরে তৈরি হচ্ছে এক নতুন ফ্রন্ট। ইয়েমেনের হুথি বারবার ইজরায়েলের গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলে ‘প্যালেস্টাইন টু’ হাইপারসনিক ব্যালস্টিক মিসাইল দিয়ে হামলা করছে। এই হামলা শুধুমাত্র প্রতিশোধ নয়, বরং পুরো অঞ্চলের সামরিক ভারসাম্যকেই চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে।
এই হামলাগুলো বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ, কারণ হাইপারসনিক মিসাইল শব্দের গতির চেয়ে অনেক দ্রুত এবং একসাথে একাধিক লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করতে পারে। ইজরায়েলের আধুনিক আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, যেমন আয়রন ডোম, এই ধরনের উচ্চ গতির অস্ত্রের বিরুদ্ধে সবসময় কার্যকর নাও হতে পারে। সামরিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই পদক্ষেপ ইঙ্গিত দেয় যে ছোট সামরিক শক্তিও কৌশলগত পরিকল্পনা এবং সঠিক প্রযুক্তি থাকলে বড় শক্তির আক্রমণ সামলাতে পারে।
হামলার মূল উদ্দেশ্য হল গাজায় চলমান ইজরায়েলি আগ্রাসন এবং ইয়েমেনের ওপর সাম্প্রতিক বিমান হামলার প্রতিশোধ নেওয়া। ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পাশাপাশি, ইয়েমেন লোহিত সাগর ও আরব সাগরে কৌশলগত নিয়ন্ত্রণ জোরদার করেছে। তারা স্পষ্ট জানিয়েছে যে, কোনও বাণিজ্যিক বা সামরিক জাহাজ নিজেদের পরিচয় প্রকাশ না করলে সেটি আক্রমণের মুখে পড়বে। এর মাধ্যমে তারা শুধু ইসরাইল নয়, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও কৌশলগত জলপথের ক্ষেত্রেও প্রভাব ফেলছে।