এই মডেলের মূল ভিত্তি হল ‘ডার্ক স্টোর’। সাধারণ সুপারমার্কেটের মতো সাজানো দোকান নয় এগুলি। ক্রেতারা এখানে ঢুকতে পারেন না। শহরের অলিগলি বা আবাসিক এলাকার কাছাকাছি ছোট ছোট গুদাম তৈরি করা হয়, যাতে পণ্য গ্রাহকের বাড়ির এক থেকে দু’কিলোমিটারের মধ্যেই থাকে। এই ডার্ক স্টোরগুলিতে শুধুমাত্র দ্রুত বিক্রির সম্ভাবনা থাকা পণ্যই রাখা হয়—দুধ, পাউরুটি, ডিম, ইনস্ট্যান্ট খাবার কিংবা নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস।
advertisement
স্ত্রীর নামে পোস্টঅফিসে ১ লক্ষ টাকার ফিক্সড ডিপোসিট করলে ২ বছরে কত টাকা মিলবে?
কোন ডার্ক স্টোরে কী পণ্য মজুত থাকবে, তা কোনও ম্যানেজারের আন্দাজে ঠিক হয় না। পুরো বিষয়টি নির্ভর করে ডেটা ও অ্যালগরিদমের উপর। কোন এলাকায় কোন সময়ে কী পণ্যের চাহিদা বাড়ে, সেই হিসাব আগেভাগেই কষে নেয় সংস্থাগুলি। যেমন, কোনও এলাকায় রাত ন’টার দিকে আইসক্রিমের চাহিদা বাড়লে, সিস্টেম আগেই সেই ডার্ক স্টোরে আইসক্রিম মজুত করে রাখে। ফলে গ্রাহক অ্যাপ খুলতেই পছন্দের জিনিসটি কাছের গুদামেই প্রস্তুত থাকে।
অর্ডার কনফার্ম হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তা পৌঁছে যায় নিকটতম ডার্ক স্টোরের কর্মীদের কাছে। গুদামের ভিতরের বিন্যাসও অত্যন্ত পরিকল্পিত। যেসব জিনিস একসঙ্গে বেশি কেনা হয়, সেগুলি কাছাকাছি রাখা হয়। কর্মীরা যাতে সময় নষ্ট না করে দ্রুত পণ্য তুলতে পারেন, তার জন্য অ্যাপ থেকেই দেখিয়ে দেওয়া হয় সবচেয়ে ছোট ‘পিকিং রুট’। লক্ষ্য থাকে ৬০ থেকে ৯০ সেকেন্ডের মধ্যেই সমস্ত পণ্য প্যাক করে ফেলা।
এই সময়ের মধ্যেই ডেলিভারি রাইডাররা গুদামের বাইরে প্রস্তুত থাকে। জিপিএসের মাধ্যমে নির্ধারণ করা হয় কোন রাইডার সবচেয়ে কাছাকাছি। পাশাপাশি, কোন রাস্তায় যানজট বেশি, কোথায় শর্টকাট আছে—সব তথ্যই সংস্থার সফটওয়্যারের কাছে আগে থেকেই থাকে। ফলে রাইডারকে আলাদা করে সিদ্ধান্ত নিতে হয় না।
তবে এই পুরো ব্যবস্থার সবচেয়ে বড় দিকটা শুধু লজিস্টিকস নয়, বরং মানুষের মনস্তত্ত্ব। ১০ মিনিটে জিনিস পাওয়ার সুবিধা আমাদের পরিকল্পনার অভ্যাস বদলে দিয়েছে। এক মাসের বাজার একসঙ্গে করার প্রবণতা কমে গিয়েছে। এখন চা পাতা বা চিনি ফুরোলেই অর্ডার দেওয়া হচ্ছে, কারণ জানা আছে—১০ মিনিটেই সব এসে যাবে। এর ফলে ক্রেতারা আরও বেশি তাৎক্ষণিক ও অভ্যাসগত কেনাকাটার দিকে ঝুঁকছেন। এই মনস্তাত্ত্বিক পরিবর্তনই ফাস্ট-কমার্স মডেলকে আরও শক্তিশালী করে তুলেছে।
