প্রদোষ ব্রত সপ্তাহের যে কোনও বারে পড়তে পারে। সেই বার অনুযায়ী প্রদোষ ব্রতকে নানা ভাগে করা হয়। আজ প্রদোষ ব্রত পড়েছে বুধবারে, তাই একে বলা হচ্ছে বুধ প্রদোষ ব্রত। পঞ্জিকা মতে ২১ জুলাই বিকেল ৪টে ১৭ মিনিট থেকে শুরু হচ্ছে ত্রয়োদশী তিথি, থাকবে ২২ জুলাই দুপুর ১টা ৩২ মিনিট পর্যন্ত। অন্য দিকে আজ সূর্যাস্ত হবে সন্ধ্যা ৭টা ১৮ মিনিটে, এই হিসেবে ২১ জুলাই রাত ৮টা ৪৮ মিনিটের মধ্যে পূজা সমাপন বিধেয়।
advertisement
অনেক পুরাণ বলে যে অসুরদের অত্যাচারে ত্রস্ত দেবতারা এক সন্ধ্যায় সকাতর প্রার্থনা জানালে নন্দীবাহন ভগবান শিব শত্রুবধ করে দেবতাদের বিপদ থেকে মুক্ত করেন, সেই জন্য সেই ঘটনার স্মরণে সন্ধ্যাকালে প্রদোষ ব্রত উদযাপন করা হয়ে থাকে। এছাড়া ব্রতকথায় আরেকটি আশ্চর্য কাহিনির সন্ধানও পাওয়া যায়।
ব্রতকথা আমাদের জানায়, একদা এক সদ্যবিবাহিত স্ত্রী দিনকয়েকের জন্য পিতৃগৃহে গিয়েছিলেন। স্বামী যে দিন তাঁকে নিয়ে আসতে যান, সেই দিনটি ছিল বুধবার। শ্বশুরবাড়ির লোকেরা তাঁকে সেই দিন যাত্রা করতে নিষেধ করলেও তিনি কারও কথা শোনেননি। গৃহে ফিরে আসার সময়ে সন্ধ্যার মুখোমুখি ওই স্ত্রী পিপাসায় কাতর হয়ে স্বামীর কাছে জলপ্রার্থনা করেন। স্বামী জল আনতে গেলে তিনি বসে থাকেন একটি গাছের নিচে।
এদিকে স্বামী ফিরে এসে দেখেন যে একেবারে তাঁরই মতো দেখতে এক পুরুষ স্ত্রীকে জল দিয়েছেন এবং দু'জনে হেসে হেসে গল্প করছেন। এর পর শুরু হয় বাদানুবাদ। ওই স্ত্রীও বুঝে উঠতে পারেন না যে তাঁর আসল স্বামী কে! এই পরিস্থিতিতে আসল স্বামী সন্ধ্যাকালে ভগবান শিবকে স্মরণ করলে, তাঁর কাছে সমস্যামুক্তির প্রার্থনা জানালে দ্বিতীয় পুরুষটি অন্তর্হিত হয়ে যায়, দাম্পত্যে শান্তি ফিরে আসে।
এই ঘটনা স্মরণে রেখে সন্ধ্যাকালে ওম উমা সহিত শিবায় নমঃ মন্ত্র ১০৮ বার জপ করতে হবে।
সার্বিক কল্যাণের লক্ষ্যে মহামৃত্যুঞ্জয় মন্ত্র ১০৮ বার জপ করলেও সুফল মিলবে।
যথাবিহিত অভিষেকের সঙ্গে শিবের পূজা করতে হবে।
পূজা সমাপনান্তে দীপ এবং ধূপ সহযোগে আরতি করতে হবে।
যদি যজ্ঞের আয়োজন করা হয়, সেক্ষেত্রে অগ্নিতে ক্ষীর আহূতি দেওয়া অবশ্য কর্তব্য।
যজ্ঞ সমাপনান্তে সাধ্যমতো ব্রাহ্মণভোজন শাস্ত্রীয় বিধান।