প্রত্নতাত্ত্বিক ঐতিহাসিক স্থল বা প্রাচীন ইতিহাস কে ছুঁয়ে দেখার যাদের ইচ্ছা রয়েছে, তাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চন্দ্রকেতুগড়
বর্তমানে অনেকেই এটিকে 'খনা মিহিরের ঢিপি' বলেও চেনেন। *ভারতীয় ইতিহাস সম্বন্ধে যাদের আগ্রহ রয়েছে, মূলত তারাই এখানে ছুটে আসেন। তাছাড়া তেমনভাবে কোনও পর্যটক এর দেখা মেলে না বললেই চলে
উত্তর ২৪ পরগনা জেলার সদর শহর বারাসত থেকে প্রথমে দেগঙ্গা, এরপরই আসে বেড়াচাঁপা মোড়৷ সেই মোড় থেকে ডান দিকে হাঁড়োয়া রোড ধরে কিছুটা গেলেই চন্দ্রকেতুগড়
ইতিহাসবিধদের অনুমাণ, মৌর্য সাম্রাজ্যের পতনের পরে ছোট-ছোট কিছু নগরের উত্থান হয়, চন্দ্রকেতুগড় হয়ত তারই একটি৷ ইতিহাসের পাতায় তাই খুব বেশি চর্চা নেই চন্দ্রকেতুগড়ের
শোনা যায়, প্রাচীনকালে এইস্থানে চন্দ্রকেতু নামক কোন রাজা ছিলেন যিনি এই গড় নির্মিত করেছিলেন, এবং এটি তখন রূপ পায় একটি বন্দরনগরী হিসাবে
জানা যায়, কলকাতা আশুতোষ মিউজিয়ামের উদ্যোগে ১৯৫৬ সাল থেকে দশ বছর খনন প্রক্রিয়া চালায় এই স্থানে, এবং চন্দ্রকেতুগড়ের মাটির তলা থেকে প্রাক-মৌর্য থেকে পালি সাম্রাজ্য পর্যন্ত বহু নিদর্শন মেলে
এখানে খনন কার্যের থেকে পাওয়া গিয়েছিল পোড়া মাটির কারুকার্য, বহু পুরাতত্ত্ব, রূপার মুদ্রা, স্বর্ণ মুদ্রা, পাথর ও কাঠের সামগ্রী, হাতির দাঁতের নানা জিনিস, এমনকি ধাতব বস্তুও
আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ৬০০ অব্দ থেকে মধ্যযুগ পর্যন্ত এখানে এক উন্নত নগরসভ্যতার অস্তিত্ব ছিল বলেও মনে করা হয়। খনন কার্যের মাধ্যমে মেলে প্রাচীন সেই নগরীর ভগ্নাবেশ। যা এখনও এই স্থানে গেলে দেখা যায়
এখানেই ছিল ঐতিহাসিক দুই চরিত্র ক্ষমা মিহিরের বাসস্থান বলেও মনে করা হয়। সেই ঢিপির ভগ্নাবশেষের ও নিদর্শন মিলে এখানে
ইতিহাস বা প্রত্নতাত্ত্বিক বিষয় নিয়ে যারা পড়াশোনা করেন নিয়মিত বা চর্চা করেন তাদের কাছে চন্দ্রকেতুগড় ইতিহাসের এক নতুন দিক খুলে দিয়েছে বলেও মনে করা হয়