রুদ্র নারায়ন রায়, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: কথায় আছে বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ। তেরো পার্বণ এর মধ্যেও শীতের আমেজ চেটেপুটে নিতে চায় ভোজন রসিক বাঙালি। তাই শীতকালে বাঙালির প্রিয় জয়নগরের মোয়া যদি শেষ পাতে পড়ে, তো কোন কথাই নেই। জনশ্রুতি অনুসারে জয়নগরের মোয়া আবিষ্কার হয় জয়নগর শহরের নিকটবর্তী বহরু গ্রামে। শোনা যায়, একটি অনুষ্ঠানে নিজের খেতে উৎপাদিত কনকচূড় ধানের খই ও নলেন গুড় দিয়ে মোয়া প্রস্তুত করে পরিবেশন করেন জনৈক যামিনী বুড়ো। জয়নগর শহরে জনপ্রিয়তা লাভ করে এই মোয়া। তারপর থেকেই এই ব্যবসা দক্ষিণ ২৪ পরগনা, মহানগর-সহ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে।এরপর থেকেই ব্যবসায়িক ভিত্তিতে ১৯২৯ সালে পূর্ণ চন্দ্র ঘোষ এবং নিত্য গোপাল সরকার জয়নগরের বহুরু তে তাদের কারখানা স্থাপন করেন। সেখানেই উৎপাদন হতে থাকে এই জনপ্রিয় মোয়া। দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপ, নামখানা , ডায়মন্ড হারবার, গঙ্গাসাগর এলাকায় প্রচুর পরিমাণে কনকচূড় ধানের চাষ হয়। সেই ধানের খই মোয়া কাজে ব্যবহার করা হয়। তার পাশাপাশি, শীতকালে খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করা হয়ে থাকে। সুন্দরবনের বেশিরভাগ খেজুর গাছের রস এই মোয়া তৈরীর কাজে ব্যবহার করা হয়। খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে, জাল দিয়ে তৈরি হয় গুড়। এরপর, সেই গুড় খই এর সাথে মিশানো হয়। তার সঙ্গে প্রসিদ্ধ গাওয়া খাঁটি ঘি, কাজু ,কিসমিস ব্যবহার করেই তৈরি হয় প্রসিদ্ধ মোয়া।