তবে এখনই কপাল খোলার সম্ভাবনা নেই গরমে পুড়তে থাকা পশ্চিম বর্ধমান, বাঁকুড়া এবং পুরুলিয়ার। এই তিনটি জেলায় তীব্র গরমের পাশাপাশি আর্দ্রতাজনিত কারণে ব্যাপক অস্বস্তি বজায় থাকবে। তবে গত দুদিন যে তাপপ্রবাহে মানুষজনকে নাকাল হতে হয়েছিল, তা থেকে কিছুটা মুক্তি পাবেন মানুষ। অন্যদিকে দক্ষিণবঙ্গের অন্যান্য জেলাগুলিতে বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টি হলে, তাপমাত্রা ২ থেকে ৩ ডিগ্রি নামতে পারে বলেও আশার খবর শুনিয়েছে হাওয়া অফিস।
হাওয়া অফিস সূত্রে খবর, কলকাতা-সহ গাঙ্গেয় উপকূল সংলগ্ন জেলাগুলিতে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। শনি এবং রবিবার এই দুদিন বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টিপাত হতে পারে দক্ষিণবঙ্গের আটটি জেলায়। তবে বৃষ্টির দেখা পাওয়ার সম্ভাবনা কম রাজ্যের পশ্চিমের জেলা গুলিতে। পশ্চিম বর্ধমান ছাড়াও বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, বীরভূম, মুর্শিদাবাদে তাপমাত্রা নামার সম্ভাবনা এখনই দেখতে পাচ্ছেন না আবহাওয়াবিদরা। উল্টে সপ্তাহান্তে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টির পর আগামী সপ্তাহে বাড়তে পারে তাপমাত্রা। এমনটাই জানা যাচ্ছে হাওয়া অফিস সূত্রে।
সূত্রের খবর, আগামী সোম এবং মঙ্গলবার ফের তাপপ্রবাহের পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে বেশ কয়েকটি জেলায়। গরমে পুড়তে থাকা এই পাঁচটি জেলায় আগামী সোম এবং মঙ্গলবার তাপপ্রবাহের পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। তার জন্য আগাম সতর্ক করছে আবহাওয়া দফতর। তাপমাত্রা ৪০ ছাড়িয়ে আরও অনেকটা উঠে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে সপ্তাহ শেষে ছিটেফোঁটাও বৃষ্টির দেখা না পেলে, অস্বস্তি যে আরও বাড়বে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরের অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় মধ্য বঙ্গোপসাগরে চরম শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। দিক পরিবর্তন করে উত্তর ও উত্তর পূর্ব দিকে এগিয়ে মায়ানমার ও বাংলাদেশ সংলগ্ন উপকূলে ল্যান্ডফল হবে রবিবার দুপুরে। ল্যান্ডফলের সময় মোকার গতিবেগ সর্বোচ্চ ১৭৫ কিলোমিটার অর্থাৎ চরম শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় হিসেবে আছড়ে পড়তে পারে উপকূলে। বাংলাদেশের মায়ানমার সংলগ্ন টেকনাফ ও মহেশখালীর মধ্যে এটি স্থলভাগে প্রবেশ করতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় মোকা রবিবার দুপুরে বাংলাদেশের কক্সবাজার এবং মায়ানমারের কিয়াপ্পুর(kyaupyau) মাঝে স্থলভাগে আছড়ে পড়বে। আবহাওয়াবিদদের অনুমান মায়ানমারের বন্দর সিতওয়ের(sittwe) কাছাকাছি কোথাও ল্যান্ডফল করার প্রবল সম্ভাবনা। চরম শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় হিসাবেই এটি আছড়ে পড়বে স্থলভাগে। স্থলভাগে আছড়ে পড়ার সময় এর সর্বোচ্চ গতিবেগ হতে পারে ১৭৫ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা। এখনও পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড়ের যা গতিমুখ তাতে বাংলাদেশের মহেশখালী ও টেকনাফের মধ্যে এটি স্থলভাগে প্রবেশ করবে। এর ফলে দক্ষিণ পূর্ব বাংলাদেশের ফুলিয়া পালং রত্নপালং সোনারপাড়া জালিয়া পালং জাহাজ পুরা মাদারবুনিয়া বাহারছড়া সেন্ট মার্টিন দ্বীপ টেকনাফ ও মহেশখালী এলাকায় ব্যাপক ক্ষয় ক্ষতির আশঙ্কা৷
দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরের অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় মোকা মধ্য বঙ্গোপসাগরে চরম শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। এই মুহূর্তে পূর্ব মধ্য বঙ্গোপসাগর এ অবস্থান। এটি পোর্ট ব্লেয়ার থেকে ৫৬৫ কিলোমিটার পশ্চিম ও দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থান করছে। বাংলাদেশের কক্সবাজার থেকে ৭৩০ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থান। এবং মায়ানমারের সিতওয়ে পোর্ট থেকে ৬৬০ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছে।
যত বাংলাদেশ উপকূলের দিকে এগিয়ে আসছে ততই আবহাওয়ার পরিবর্তন হচ্ছে আমাদের রাজ্যের উপকূলে। উপকূল ও উপকূল সংলগ্ন জেলাগুলিতে মেঘলা আকাশ। উপকূলে হালকা হওয়ার সম্ভাবনা। ঘূর্ণিঝড় মোকার সতর্কতায় রবিবার পর্যন্ত মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নির্দেশ করা হয়েছে। মোকার প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর উত্তাল থাকার কারণেই এই নিষেধাজ্ঞা। উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে ৮০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা এবং উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে ১৭৫ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা হতে পারে মোকার গতিবেগ।
রবিবার ১৪ই মে দুপুরে ল্যান্ডফলের পর গতিবেগ ক্রমশ কমবে এবং রাতের মধ্যে শক্তি হারিয়ে মোকা শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে। রবিবার রাত সাড়ে এগারোটায় শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় মোকার গতিবেগ থাকবে ১১০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা। ১৫ মে সোমবার ঘূর্ণিঝড়টি শক্তি হারিয়ে নিম্নচাপে পরিণত হবে তার গতিবেগ থাকবে ঘণ্টায় ৬৫ কিলোমিটার।