

সকালে ঘুম থেকে ওঠা ইস্তক রাতে চোখ বন্ধ করা পর্যন্ত কোথায় গেলেন, কী খেলেন, কী পড়লেন এবং পরলেন, ঝগড়া করলেন কি না, রান্নায় নুন কম হল কি না- এই সব আপডেট আপনি দেন ফেসবুকে। তার পর গুনে নেন কটা লাইক, কটা লাভ, আর কটা শেয়ার জড়ো হল আপনার ঝোলায়। Photo- Collected


ওপর ওপর মনে হতে পারে খুব সুখে আছেন। অথচ সমীক্ষা বলছে ঠিক উল্টোটাই। যত বেশি আপনার ফেসবুকে যাতায়াত, ততই কম আপনার ভালো থাকা। অর্থাৎ ভালো থাকার সঙ্গে ফেসবুকে থাকার সম্পর্কটা ব্যাস্তানুপাতিক। শুধু ফেসবুক নয়, যে কোনও সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার আমাদের ভালো থাকার ওপর, মনের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।Photo- Collected


দু'বছর ধরে সমীক্ষাটি করা হয়েছে। তবে আগের অনেক সমীক্ষাই ঠিক উল্টোটা বলেছিল- সোশ্যাল মিডিয়ায় যাতায়াত এবং খুশি থাকার মধ্যে সমানুপাতিক সম্পর্ক। তবে সে সব ক্ষেত্রে সমাজের সব শ্রেণির মানুষকে নিয়ে সমীক্ষা চালানো হয়নি বলেই দাবি করছে ব্রিটেনের সংবাদসংস্থা ইন্ডিপেন্ডেন্ট।Photo- Collected


ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের হোলি বি শাক্য এবং ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের নিকোলাস এ ক্রিস্টাকিস এই সমীক্ষাটি পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন। ফেসবুকের দেওয়া তথ্য বলছে ২০১৬ সালে মানুষ গড়ে দৈনিক ৫০ মিনিট ফেসবুকে কাটিয়েছে। ২০১৩, ২০১৪ এবং ২০১৫-এর মোট ৫২০৮ জন মানুষের ফেসবুক অ্যাক্টিভিটি পর্যবেক্ষণ করে সমীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করেছে সমীক্ষক দল। মূলত মার্কিন জনসংখ্যার ওপর ভিত্তি করেই চালানো হয়েছে সমীক্ষা।Photo- Collected


প্রতিটি মানুষের ফেসবুক অ্যাক্টিভিটি দুই বছর ধরে নজরে রাখা হয়েছে। সমীক্ষার ফলফলে উঠে এসেছে, ফেসবুক অ্যাক্টিভিটি মানুষের মনের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলার ক্ষমতা রাখে। এই অ্যাক্টিভিটি-র মধ্যে কিন্তু লিঙ্কে ক্লিক করা, স্টেটাস আপডেট করা, লাইক করা, সবই পড়ে। আর এই এক একটি অ্যাক্টিভিটি আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যের ইতিবাচক প্রভাবকে ৫ থেকে ৮ শতাংশ কমিয়ে দিতে পারে।Photo- Collected


ভালো থাকা বিচার করতে সমীক্ষকরা আস্থা রেখেছিলেন ফেসবুক ব্যবহারকারীদের ওপরেই। তাঁরা নিজেরা নিজেদের সুখী মনে করছেন কিনা, সেটাই গুরুত্বপূর্ণ। তার সঙ্গে হিসেব করা হয়েছে তাঁদের প্রত্যেকের ফেসবুক অ্যাক্টিভিটি, বন্ধুতালিকায় বন্ধুর সংখ্যা, লাইকের পরিমাণ, দিনে কত সময় ফেসবুকে কাটাচ্ছেন, এই সব তথ্য। গবেষকরা জানিয়েছেন যে তাঁরা পর্যবেক্ষণ করে দেখেছেন অন্যের পোস্ট করা ফটো অথবা লিঙ্কে ক্লিক করলে সাধারণত নিজেদের শারীরিক স্বাস্থ্য, মানসিক স্বাস্থ্য এবং নিজের জীবন নিয়ে সন্তুষ্ট থাকা সবেরই অবনতি হয়। তা ছাড়া সোশ্যাল মিডিয়ায় আলাপচারিতা অনেকটা মরীচিকার মতো। যা মুখোমুখি আলাপের বিকল্প নয় কখনই। বরং অনলাইন আলাপচারিতা বাস্তবমুখী নয়, পরিস্থিতি বিশেষে নেতিবাচকও।Photo- Collected