

প্রথম টেস্টে ৩৬ রানে অল আউট৷ বিরাট কোহলির দেশে ফিরে আসা৷ মহম্মদ শামি, যশপ্রীত বুমরা, আর অশ্বিনরাও চোট পেয়ে একে একে ছিটকে গিয়েছেন৷ তবু অস্ট্রেলিয়ায় বিজয় পতাকা উড়িয়েছে অজিঙ্ক রাহানের নেতৃত্বাধীন নতুন ভারত৷ টিম ইন্ডিয়ার এই স্মরণীয় জয়ে বড় ভূমিকা নিয়েছেন ভারতের পাঁচ তরুণ প্রতিভা৷


শার্দুল ঠাকুর, টি নটরাজন, ওয়াশিংটন সুন্দর, মহম্মদ সিরাজ এবং নবদীপ সাইনি৷ এঁদের প্রত্যেকের ক্রিকেটার হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠা করার লড়াইটা যে কারও কাছে অনুপ্রেরণা হতে পারে৷ জীবন যুদ্ধ থেকে শিক্ষা নিয়েই হয়তো অস্ট্রেলিয়ার মতো কঠিন প্রতিপক্ষের সামনেও কেঁপে যাননি শার্দুল, সিরাজরা৷


মহম্মদ সিরাজ- অস্ট্রেলিয়া সফরে জাতীয় সঙ্গীত চলার সময় চোখ ভিজে গিয়েছিল সিরাজের৷ যে ছবি রীতিমতো ভাইরাল হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়৷ সিরাজের বাবা একসময় অটো রিকশা চালাতেন৷ তাঁকে ক্রিকেটার তৈরি করতে বাবার সংগ্রামের কথা মনে পড়ে যাওয়াতেই কেঁদে ফেলেছিলেন সিরাজ৷


অস্ট্রেলিয়া সফরের শুরুতেই গত ২০ নভেম্বর সিরাজের বাবা প্রয়াত হন৷ তবুও দেশে না ফিরে বাবার স্বপ্নপূরণের প্রতিজ্ঞা করেন৷ মেলবোর্নে দ্বিতীয় টেস্টে অভিষেক হয় সিরাজের৷ আর ব্রিসবেনে দ্বিতীয় ইনিংসে পাঁচ উইকেট নিয়ে ভারতের জয়ে বড় অবদান রাখেন এই পেসার৷ চলতি সিরিজে চার টেস্টে ১৩ উইকেট তুলে নিয়েছেন ২৬ বছর বয়সি সিরাজ৷


নবদীপ সাইনি- হরিয়ানার কারনালে মধ্যবিত্ত শিখ পরিবারে জন্ম নবদীপের৷ বাবা হরিয়ানা সরকারের অধীনে গাড়ির চালক হিসেবে চাকরি করতেন৷ পাঁচ বছর বয়সে বাবার কাছে একটি বল চেয়েছিল ছোট্ট নবদীপ৷ প্রথমে নবদীপকে একটি প্লাস্টিক বল কিনে দিয়েছিলেন তাঁর বাবা৷


পাঁচ বছর বয়সেই ক্রিকেটে হাতেখড়ি হয় নবদীপের৷ তাঁর পরিবার অবশ্য নবদীপকে ক্রিকেটার হিসেবে গড়ে তুলতে খুব একটা আগ্রহী ছিল না৷ কিন্তু স্কুলে পড়ার সময় থেকেই স্থানীয় বিভিন্ন দলের হয়ে একের পর এক টুর্নামেন্টে খেলতে শুরু করে নবদীপ৷ এ ভাবেই ক্রিকেটার হিসেবে তাঁর উত্থান৷


শার্দুল ঠাকুর- এক সময় চোটের ধাক্কায় ক্রিকেট কেরিয়ার নিয়েই অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছিল৷ কিন্তু সচিন তেন্ডুলকরদের মতো কিংবদন্তির পরামর্শ নিয়ে সেই বাধা কাটিয়ে ওঠেন শার্দুল৷ ফিট হয়ে ওঠার পর তাঁকে দলে নেয় মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স৷ দুরন্ত পারফরম্যান্সে টিম ইন্ডিয়ার দরজাও খুলে ফেলেন ডান হাতি এই পেসার৷


টি নটরাজন- তামিলনাড়ুর সালেমের চিন্নাপমপট্টিতে টেনিস বলে ক্রিকেট খেলতে খেলতে বেড়ে উঠেছেন নটরাজন৷ চলতি অস্ট্রেলিয়া সফরেই ভারতের হয়ে একদিনের ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তাঁর৷ তার আগে অবশ্য আইপিএলে নিজের প্রতিভার ছাপ রেখেছিলেন নটরাজন৷


নটরাজনের বাবা সুতোর মিলে কাজ করতেন৷ আর মা শান্তা নিজেদের গ্রামেই রাস্তার ধারে একটি ছোট দোকান চালাতেন৷ ফলে বাঁ-হাতি এই পেসারের জাতীয় দলের হয়ে খেলার কাহিনিও যেন স্বপ্নের মতোই৷


ওয়াশিংটন সুন্দর- ভারতীয় ক্রিকেট মহলে অনেক দিন ধরেই পরিচিত নাম ওয়াশিংটন সুন্দর৷ কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ব্রিসবেনে টেস্টে অভিষেক হয় তাঁর৷ অভিষেক টেস্টেই ব্যাটে বলে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করে ভারতের জয়ে বড় অবদান রেখেছেন ওয়াশিংটন৷