

প্রার্থী হয়েছেন খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ শুভেন্দুর গড়ে ঘাসফুল ফোটানোর চ্যালেঞ্জ তো ছিলই, কিন্তু খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রার্থী হওয়ায় নন্দীগ্রাম এখন শাসক দলের কাছে প্রেস্টিজ ফাইট হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ নন্দীগ্রামে দলনেত্রীকে নির্বিঘ্নে জিতিয়ে আনতে তাই প্রস্তুতিতে ফাঁক রাখতে চাইছে না শাসক দল৷ তারই অংশ হিসেবে এবার নন্দীগ্রামে রাজনৈতিক সমীক্ষা চালাবে তৃণমূল কংগ্রেস৷


দলীয় সূত্রে খবর, নন্দীগ্রামে এই সমীক্ষা চালানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে প্রবীণ নেতা এবং রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে৷ আগামী ১ ফেব্রুয়ারি নন্দীগ্রাম পৌঁছবেন সুব্রত৷ তিন দিন ধরে চলবে সমীক্ষার কাজ৷ নন্দীগ্রামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী৷ তাঁর দাবি, ৫০ হাজার ভোটে তিনি মমতাকে হারানোর ব্যবস্থা করবেন৷ প্রকাশ্যে গুরুত্ব না দিলেও শুভেন্দুর এ হেন দাবির পরে আরও সতর্ক তৃণমূল৷


তৃণমূল সূত্রে খবর, নন্দীগ্রামের বাস্তবিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি কী, শুভেন্দু অধিকারী বিজেপি-তে যাওয়ার পর সত্যিই শাসক দল কতটা জমি হারিয়েছে বা এখনও তৃণমূলের প্রতি কতটা জনসমর্থন রয়েছে, সমীক্ষায় সেটাই বুঝে নেওয়ার চেষ্টা করবেন অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদ সুব্রত৷


শুধু তাই নয়, শুভেন্দুর বিজেপি-তে যোগদানের পর শক্ত ঘাঁটি নন্দীগ্রামে তৃণমূলের সংগঠনেও ভাঙন ধরেছে৷ ভোটের সময় অন্তর্ঘাতের আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না৷ ফলে সাংগঠনিক দিক দিয়েও নন্দীগ্রামে দলের কী অবস্থা, তা বুঝে নেওয়ার চেষ্টা করবেন সুব্রত৷


ভোটের অঙ্ক বলছে, নন্দীগ্রামে ২০১৬ সালে ৬৭.০২ শতাংশ ভোট পেয়েছিল তৃণমূল, জয়ী হন শুভেন্দু অধিকারী৷ বিজেপি পেয়েছিল মাত্র ৫.৪০ শতাংশ ভোট৷ ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের নিরিখে বিজেপি-র ভোটবৃদ্ধির হার শাসক দলকে উদ্বেগে রাখলেও নন্দীগ্রাম যথেষ্ট নিরাপদ আসনই ছিল তৃণমূলের৷ কারণ ২০১৯-এ লোকসভা ভোটের ফল অনুযায়ী নন্দীগ্রামে তৃণমূল পেয়েছিল ৬৩.১৪ শতাংশ ভোট৷ আর বিজেপি-র ভোট প্রাপ্তির হার বেড়ে হয় ৩০.০৯ শতাংশ৷


নন্দীগ্রাম বিধানসভা কেন্দ্রে ২৩ শতাংশের কিছু বেশি সংখ্যালঘু ভোট রয়েছে৷ যা তৃণমূলের বড় ভরসা৷ এ নিয়ে কটাক্ষও করতে শুরু করেছেন শুভেন্দু৷ এমন কি, মেরুকরণের রাজনীতির তাসও খেলতে শুরু করেছেন বিজেপি নেতা৷ রাখঢাক না করেই বলেছেন, নন্দীগ্রামে সংখ্যাগুরু হিন্দুদের সমর্থন পাবে বিজেপি-ই৷ ফলে নন্দীগ্রামে পদ্ম ফোটা সময়ের অপেক্ষা বলেই দাবি বিজেপি নেতার৷


যদিও শুভেন্দুর এই অঙ্ককে গুরুত্ব দিতে নারাজ তৃণমূল৷ গত ১৮ জানুয়ারি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রার্থী হিসেবে নিজের নাম ঘোষণার পরই নন্দীগ্রামে মুখ্যমন্ত্রীর সমর্থনে দেওয়াল লিখন শুরু করে দিয়েছেন শাসক দলের কর্মীরা৷ কিন্তু এইটুকুতেই সীমাবদ্ধ না থেকে এবার খাতায় কলমে নন্দীগ্রাম জয়ের অঙ্ক বুঝে নিতে চাইছে শাসক দল৷