কেউ কাউকে চেনেন না, গুরু পূর্ণিমা তিথিতে একে-অপরের মঙ্গল কামনায় অভিনব 'বোন ফোঁটা' মালদহে
মেয়েরাই নাকি মেয়েদের শত্রু। সেই আক্ষেপ থেকেই নিজেরাই একত্রিত হয়ে একে অন্যের মঙ্গল কামনায় গুরু পূর্নিমায় অভিনব ‘বোন ফোঁটা’র আয়োজন করলেন মালদহের একদল মহিলা।


*সমাজে পুরুষ বা সন্তানদের মঙ্গল কামনায় নানা ব্রত, উপোস বা পুজো অর্চনা করেন মহিলারা। তবে মেয়েদের মঙ্গল বা দীর্ঘায়ু কামনায় কোনো উৎসব করা হয় না। উল্টে অনেকেই বলেন, মেয়েরাই নাকি মেয়েদের শত্রু। সেই আক্ষেপ থেকেই নিজেরাই একত্রিত হয়ে একে অন্যের মঙ্গল কামনায় গুরু পূর্নিমায় অভিনব ‘বোন ফোঁটা’র আয়োজন করলেন মালদহের একদল মহিলা। তথ্য ও ছবি: সেবক দেবশর্মা ।


*কেউ কাউকে চেনেন না। বেশির ভাগেরই একে অন্যের আলাপ হয়েছে ফেসবুক, হোয়াটস অ্যাপের মতো সামাজিক মাধ্যমে। কেউ পড়াশোনা করেন, কেউ চাকুরিরত। আবার কেউ গৃহবধূ। স্যোসাল মিডিয়াতেই বার্তা আদান প্রদান করে অজানা-অচেনা সকলে একত্রিত হলেন অভিনব উৎসবে। যার পোশাকী নাম ‘বোন ফোঁটা’।


*কেউ হাতে নিয়ে হাজির লুচি, কেউ পায়েস, মিষ্টি, দই। কেউ বা ধান, দুর্বা, শাঁখ, প্রদীপের মতো পুজোর উপকরন। বোনেদের আনাগোনায় সকাল থেকেই মুখর মালদহের ইংরেজবাজার পুরসভার সৌন্দার্যায়ন প্রকল্প ‘মালদার উঠোন’।


*মার্বেলের মেঝে জুড়ে সূদৃশ্য আলপনা। এর ওপর পালা করে চলল বোন ফোঁটার পর্ব। একদল বসলেন ফোঁটা নিতে অন্যরা তাঁদের কপালে ফোঁটা দিয়ে দীর্ঘায়ু আর মঙ্গল কামনা করলেন। এই ভাবেই দফায় দফায় চলল ফোঁটা পর্ব।


*কিন্তু কেন এমন ভিন্ন ধর্মী আয়োজন। উদ্যোক্তা সৌসুমী ঘোষদাস,রমা বসাকদের কথায়, মেয়েরাও মেয়েদের মঙ্গল চান এই বার্তা দিতেই আয়োজন। শুধু উৎসব পালনের আনন্দই নয়। মঙ্গল কামনায় বোন ফোঁটার জন্য সতন্ত্র মন্ত্রও লেখা হয়। রীতি মেনে শঙ্খধ্বনি আর কপালে চন্দনের ফোঁটা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সতন্ত্র মন্ত্র পাঠও চলল সমান তালে। নিছক ফোঁটা দেওয়া নেওয়াই নয়। বোন ফোঁটার শেষে মিষ্টি মুখ থেকে শুরু করে সেলফি তোলার আনন্দে মাতেন সকলে। স্মরণীয় মূহূর্তকে ক্যামেরা বন্দী করে ফের ছয়লাপ হল স্যোসাল মাধ্যম।