

এখনও অবধি করোনা ভাইরাসের যা ট্রেন্ড তাতে শিশুদের ক্ষেত্রে এর প্রভাব ততটা মারণ প্রতিপন্ন হয়নি ৷ অনেকক্ষেত্রেই মৃদু বা মাঝারি সংক্রমণ হয়েই থেকে গেছে৷ এমনকি শিশুদের ক্ষেত্রে এই রোগ ততটা প্রাণঘাতীও নয়৷ কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনার কোপে শিশুদের মধ্যে মাল্টিসিস্টেম ইনফ্ল্যামেটরি সিন্ড্রোম (MIS-C ) দেখা যাচ্ছে। ভারত, ইতালি, স্পেন, ব্রিটেন ও আমেরিকায় করোনা আক্রান্ত শিশু ও কমবয়সীদের মধ্যে এই জাতীয় উপসর্গই বেশি। Photo- Collected


MIS-C-র মানেটা ঠিক কী? কমবয়সীরা বেশিরভাগই মাল্টিসিস্টেম ইনফ্ল্যামেটরি সিন্ড্রোমে আক্রান্ত হচ্ছে। এই রোগে শরীরের নানা অঙ্গে তীব্র প্রদাহ বা জ্বালা শুরু হয়। উপসর্গ হল জ্বর, শরীরের তাপমাত্রা হঠাৎ বেড়ে যাওয়া, প্রশ্বাসের সমস্যা এমনকি অঙ্গ বিকল হয়ে যাওয়া। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই সিন্ড্রোম বিপজ্জনক হয়ে যাচ্ছে বলে দাবি চিকিৎসকরদের৷ মাল্টি-সিস্টেম মানেই শরীরের নানা অঙ্গ আক্রান্ত হচ্ছে ভাইরাসের সংক্রমণে। ফুসফুসের সংক্রমণ তো বটেই, হার্ট, লিভার, কিডনি, খাদ্যনালীতেও দেখা যাচ্ছে সংক্রমণ। Photo- Collected


MIS-C অনেক লক্ষণই কাওয়াসাকির সঙ্গে অসম্ভব মিলে যায়৷ এছাড়াও ছোটদের জন্য খুবই ভয়ানক ধমনীতে প্রদাহ অর্থাৎ vasculitis-র ভয়ও তৈরি করছে৷ এর জেরে দেহের স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা লোপ, এনসেফালাইটিস, কার্ডিও ভাসকুলার শকও হচ্ছে৷ Photo- Collected


এই বিষয়টির রিসার্চে দেখা গেছে ইমিউন সেল, সাইটোকিনস, ও অটো অ্যান্টিবডি থাকত শিশুদের শরীরে৷ কোভিড ১৯ -র আগে কাওয়াসাকি -র ক্ষেত্রে শিশুদের MIS-C হলে দেখা যেত অটো অ্যান্টিবডি বিষয়টিকে ট্রিগার করছে৷ ইতালি ও সুই়েনের গবেষকদের রিসার্চ অনুযায়ি অটো অ্যান্টিবডি বুঝতে না পেরে নিজেরই কোষকে বা অর্গ্যানকে আক্রমণের লক্ষ্য বানাচ্ছে৷ অন্যদিকে সাইটোকিন হল সেই ধরণের প্রোটিন যা রোগ প্রতিরোধক্ষমতা ও প্রদাহকে নিয়ন্ত্রণ করে৷ Photo- Collected


এই পরীক্ষায় পাওয়া গেছে প্রাথমিক পর্যায়ে জ্বর, পেটে ব্যথা, বমিভাব, পেট খারাপের উপসর্গ দেখা গিয়েছে। ধীরে ধীরে তীব্র শ্বাসকষ্ট, বুকে ব্যথা, ঝিমুনি, চোখ ফুলে যাওয়া, ত্বকের রঙে বদল এমনকি হাতে-পায়ে জ্বালাপোড়া ক্ষত, লালচে র্যাশও দেখা গেছে অনেকের শরীরে। Photo- Collected


গবেষকরা বলছেন পরিবারের কেউ কোভিড আক্রান্ত হলে সকলকেই টেস্ট করানো দরকার। বিশেষত শিশুদের। সদ্যোজাত শিশুদের ক্ষেত্রে সচেতনতা আরও বেশি দরকার। মা যদি কোভিড পজিটিভ হন তাহলে জন্মের সঙ্গে সঙ্গেই শিশুকে আলাদা ইউনিটে রাখতে হবে। প্রসবের সময়ও সুরক্ষার দিকে নজর রাখা দরকার। Photo- Collected


অনেক শিশুদের ক্ষেত্রে এই রোগের কারণে ত্বকের রঙে নীলচে ছোপ পড়তেও দেখা গেছে। সেই সঙ্গে ঝিমুনি, শরীরে অস্বস্তি, প্রস্রাবের সমস্যাও দেখা দেয়। মুখে ও গলায় স্ফীত মাংসল অংশ তৈরি হয়, যার জেরে শিশুদের জল ও খাবার খাওয়ানো যায় না। অনেকের ক্ষেত্রে শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। কাওয়াসাকিতে যদি হার্ট মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয় তাহলে বুকে ব্যথা শুরু হয়, এইসব উপসর্গ দেখেই সতর্ক হতে হবে অভিভাবকদের। Photo- Collected