অনেকেই হয়তো মনে করেন যে, ভারতে উৎপাদিত শুধুমাত্র বাসমতি চালের সুগন্ধই সারা বিশ্বে ছড়িয়ে রয়েছে। আদতে বিষয়টা কিন্তু তেমন নয়। তাহলে কোনটা বিশ্বের সব থেকে দামি চাল? মরুদেশ সৌদি আরবে এক বিশেষ ধরনের চাল উৎপন্ন হয়। আর সৌদিতে উৎপন্ন এই চালই বিশ্বের সব থেকে মূল্যবান চালের তকমা পেয়েছে। অথচ ভারত কিংবা বিশ্বের প্রধান ধান উৎপাদনকারী দেশগুলিতে এই চালের ফলানো সম্ভব নয়। কিন্তু কেন? সেই বিষয়টাই জানা যাক।
বিশেষ জাতের এই চালের নাম হল হাসাউয়ি রাইস। সৌদি আরবের কিছু অংশেই এই চাল ফলানো সম্ভব। কারণ এর ফলনের জন্য প্রায় ৪৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত তাপমাত্রার প্রয়োজন হয়। এখানেই শেষ নয়, এই তীব্র তাপের পাশাপাশি ধান গাছের গোড়াগুলি ফলনের গোটা সময়টাই ডুবে থাকবে জলে। সেই সঙ্গে এই ধান চাষের জন্য সেচেরও বিশেষ ব্যবস্থা রাখতে হয়। মূলত আরব দেশের ধনী সম্প্রদায়ের অত্যন্ত পছন্দের খাবার এটি।
এছাড়াও এই ধান চাষ করার জন্য কঠোর পরিশ্রম এবং প্রচুর পরিচর্যারও প্রয়োজন রয়েছে। তবে এই চাষের ক্ষেত্রে ফসল প্রস্তুত করার পদ্ধতিটি অনেকটা ভারতে ধান চাষের মতোই। প্রথমে এই ধানের বীজ থেকে চারা তৈরি করা হয়। তার পর তা জলা জমিতে বপন করতে হয়। আসলে এই ধান রোপণ করা হয় গ্রীষ্মকালে এবং ফসল তোলার আদর্শ সময় হল নভেম্বর-ডিসেম্বর মাস। আবার এই চালের রঙ লাল হওয়ায় একে লাল চালও বলা হয়। আর বলাই বাহুল্য যে, এটি বিশ্বের অন্যতম সুস্বাদু চাল। শোনা যায়, আরবের মানুষ এই চাল দিয়েই বিরিয়ানি তৈরি করেন।
এবার আসা যাক হাসাউয়ি চালের উপকারিতার প্রসঙ্গে। রিসার্চগেট.নেট ওয়েবসাইট অনুযায়ী, এটা আসলে ইন্ডিকা জাতের লালচে বাদামি চাল। সাধারণত সৌদি আরবের পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশের আল-আহসা মরূদ্যানের বাসিন্দারা এই চাল খেয়ে থাকেন। ওই ওয়েবসাইটটিতে বাসমতি চালের সঙ্গে হাসাউয়ি চালের উপকারী উপাদানগুলোর তুল্যমূল্য বিচার করা হয়েছে। দাবি করা হচ্ছে, বাসমতি চালের তুলনায় এই চালে বেশি পরিমাণে ফেনোলিক ও ফ্ল্যাভোনয়েড উপাদান রয়েছে। এর পাশাপাশি এতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের পরিমাণও অনেকটাই বেশি। এছাড়াও হাসাউয়ি চালের মধ্যে জলে দ্রবণীয় ভিটামিন ও জিঙ্কের পরিমাণও বাসমতি চালের তুলনায় বেশি। ফলে এই চাল ডায়েটে যোগ করলে পুষ্টির পাশাপাশি ফাইবারেরও জোগান পাওয়া যাবে। শরীরও থাকবে সুস্থ।