

কফি অনেকের কাছে বিশেষ পছন্দের পানীয়। অনেকে আবার দিনে আট-দশ কাপ পান করে ফেলেন। এটি শরীরের এনার্জি বজায় রাখার পাশাপাশি সজাগ থাকতে সাহায্য করে। অনেক সময়ে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতেও সাহায্য করে। তবে আমাদের দৈনন্দিন জীবনে এর বিপরীত প্রভাবও রয়েছে। কফিতে উপস্থিত ক্যাফেইন শরীরে একাধিক সমস্যা তৈরি করতে পারে। এক্ষেত্রে কতটা কফি পান করা উচিত ? দিনের ঠিক কোন সময় কফি পান করা উচিৎ? আসুন জেনে নেওয়া যাক বিশদে!


এই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন নিউট্রিশনিস্ট প্রীতি ত্যাগী (Preety Tyagi)। প্রথমেই জেনে নেওয়া যাক কফি পানের সেরা সময় কোনটি? অনেকেরই সকাল সকাল এক কাপ কফি বানিয়ে খাওয়ার অভ্যাস রয়েছে। অনেকের কাছে সকালের রুটিনে কফি মাস্ট। কিন্তু তাতে খুব একটা বেশি উপকার পাওয়া যাবে না, এমনই বলছে চিকিৎসাশাস্ত্র। এর পিছনে কারণও রয়েছে যথেষ্ট।


নিউট্রিশনিস্ট প্রীতি ত্যাগীর কথায়, সকাল বেলায় শরীরের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান কর্টিসলের (Cortisol) মাত্রা সব চেয়ে বেশি থাকে। এই বিশেষ হরমোন শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা, সতেজ থাকা, মেটাবলিজম-সহ একাধিক প্রক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করে। আর এই সময়ে শরীরে ক্যাফেইন গেলে কর্টিসেলের উৎপাদন প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়। এর জেরে শরীরে নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে।


এক্ষেত্রে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অর্থাৎ সকাল দশটার পর থেকে কমতে থাকে কর্টিসেলের মাত্রা। তাই এর পর থেকে বা দিনের মাঝামাঝি যে কোনও সময় কফি পান করার জন্য আদর্শ। আরও একটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে। সকালের প্রথম খাবার হিসেবে অর্থাৎ খালি পেটে কফি পান করার অভ্যাস এড়িয়ে যাওয়াই ভালো।


কফির পরিমাণ নিয়ে একটু সচেতন হতে হবে। প্রতিবার কফি কাপে যেন অতিরিক্ত কফি না থাকে, সেই বিষয়টির প্রতি খেয়াল রাখতে হবে। এক্ষেত্রে পরিমাণ মতো বা তার থেকে একটু কম কফি হলে ক্ষতি নেই। কারণ কফি পানের ৩০ মিনিট থেকে এক ঘণ্টার মধ্যেই রক্তপ্রবাহের সঙ্গে মিশতে শুরু করে ক্যাফেইন (Caffeine) এবং কয়েক ঘণ্টা পর্যন্ত শরীরে তা সক্রিয় থাকে। তাই ঘন ঘন অতিরিক্ত কফি খাওয়ার বিষয়ে সচেতন হতে হবে।


তবে, দিনের শেষ কফিটা বেশি দেরি করে পান করা যাবে না। কারণ কফিতে উপস্থিত ক্যাফেইন ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। ব্যক্তিবিশেষে এই সমস্যা আবার অন্যরকম হতে পারে। এক্ষেত্রে রাতে পর্যাপ্ত ঘুমের দিকে নজর রেখে কফি পানের অভ্যাস করতে হবে। বেশি রাত করে কফি না খেলেই ভালো। কারণ শরীর ও মাথা দুই সুস্থ রাখতে, পর্যাপ্ত ঘুম অত্যন্ত জরুরি।