

পাকা চুল, রুক্ষ চুল, তৈলাক্ত চুল থেকে চুল পড়া-- চুলের বিভিন্ন সমস্যার নিত্য নতুন সমাধান রোজই আসছে। কিন্তু টাক পড়ার দুঃখ আজও থেকে গিয়েছে। একবার টাক পড়তে শুরু করলেই ব্যস! আর ধরে রাখা যাবে না। টাকের দুঃখ নিয়েই কাটাতে হবে সারা জীবন। যদি আপনারও থাকে টাক পড়ে যাওয়ার দুঃখ, তা হলে এ বার বোধহয় একটু আশার আলো দেখতে পারেন।


নিজের চুলের ঘনত্ব নিয়ে সন্তুষ্ট এমন মানুষ খুব কমই আছেন। প্রতি দিন স্বাভাবিক নিয়ম অনুযায়ী নির্দিষ্ট জীবনচক্র শেষ করে কিছু পুরনো চুল পড়ে যায় আর নতুন চুল গজায়। তবু প্রায় সব মানুষকেই বলতে শোনা যায়, মাথা একেবারে ফাঁকা হয়ে গেল! কিন্তু সব কিছু স্বাভাবিক থাকলে মাথা একেবারে ফাঁকা কখনওই হয় না। মাথার ত্বকের লোমকূপের কোনও সমস্যা, চুলের কোনও রোগ বা শরীরের অভ্যন্তরীণ কোনও সমস্যা থেকেই মাথা একেবারে ফাঁকা হয়। যাকে চলতি ভাষায় টাক পড়া বলে।


জাপানের একদল গবেষক টাক পড়ার চিন্তা দূর করতে পারেন বলেই আপাতত মনে করা সম্ভব হচ্ছে। স্টেম সেলের মাধ্যমে নতুন করে চুল গজানোর পদ্ধতি আবিষ্কার করেই এবার হতে পারে কেল্লাফতে। সেখানকার রিকেন (RIKEN) সেন্টার ফল বায়োসিস্টেমস ডায়নামিক রিসার্চের বিজ্ঞানারী নেচার সায়েন্টিফিক রিপোর্টের একটি পেপার প্রকাশ করেছেন। সেখানেই রয়েছে টাক থেকে বাঁচার সেরার সেরা উপায়ের কথা।


স্তন্যপায়ী প্রাণির দেহে একটি পরীক্ষা করে সুফল ও সাফল্যও পেয়েছেন তাঁরা। ইঁদুরের শরীর থেকে রোম নিয়ে ২২০টি মিশ্রণের মাধ্যমে এটি পরীক্ষা করা হয়েছে। কী ভাবে খুব কম সময়ে কোলাজেনের মাধ্যমে স্টেম সেল তৈরি করে মাথায় নতুন করে চুল গজানোর কাজ করা যায়, সেটিই দেখা হয়েছে এই পরীক্ষায়।


পরীক্ষাতেই বিরাট সাফল্য দেখেছেন জাপানের এই গবেষকরা। তাঁদের দাবি, নতুন করে চুল গজানোর পদ্ধতি প্রায় আবিষ্কার করেই ফেলেছেন তাঁরা। এর ফলে টাকের সমস্যা থেকে বহু মানুষ মুক্তি পাবেন। অন্তত তিন সপ্তাহের মধ্যেই নতুন চুল গজাচ্ছে বলে পর্যবেক্ষণ রয়েছে এই পরীক্ষায়। এভাবে অন্তত ৭৯ শতাংশ নতুন করে চুল গজানো সম্ভব বলেই দাবি করেছেন গবেষকরা।


স্টেম সেল থেরাপির মাধ্যমে টাকের সমস্যার সমাধান করা সম্ভব বলেই মনে করছেন জাপানের এই গবেষকরা। বেশ কয়েক বছর ধরে স্টেম সেল ব্যবহারের মাধ্যমে কৃত্রিম ভাবে ত্বকের হেয়ার ফলিকলের উচ্চ ও নিম্ন স্তর তৈরির চেষ্টা করছেন গবেষকরা। ইতিমধ্যেই ইঁদুরের শরীরে তা পরীক্ষাও করে দেখা হয়েছে। ল্যাবে তৈরি এই টিস্যু মানুষের মাথার ত্বকেও চুল গজাতে সক্ষম বলে দাবি করছেন গবেষকরা।