

পলি কথাটির অর্থ হল একাধিক। মহিলাদের ডিম্বাশয়ে যখন একাধিক সিস্ট (তরলে ভরা থলি) গড়ে ওঠে তখনই পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম (PCOS)দেখা দেয়। পরীক্ষা করে জানা গিয়েছে যে, প্রত্যেক ৫জন ভারতীয় মহিলাদের মধ্যে একজন মহিলা এই ব্যাধির শিকার হন।


'পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম' বা 'পিসিওএস' আসলে একটি হরমোনাল ব্যাধি যার জন্য বিপাকপ্রক্রিয়া থেকে জন্মদায়ক ক্ষমতা সমস্য। দুইয়ের ক্ষেত্রেই দেখা দিতে পারে।সুস্থ মহিলাদের ডিম্বাশয় প্রত্যেক মাসে একটি করে ডিম্বানু ছেড়ে থাকে। এটি গর্ভদশা চলাকালীন পরিণত হয় নয়তো বা নির্মূল হয়ে একটি সাধারণ মাসিক চক্রের রূপ নেয়।


পিসিওএস-এ আক্রান্ত মহিলাদের ডিম্বানুগুলি সঠিক ভাবে বেড়ে ওঠে না অথবা নিয়মিত ডিম্বস্ফোটন চক্রের সময় ডিম্বানু ছাড়ার সমস্যা হয়। এর ফলে নিয়মিত ঋতুচক্র আক্রান্ত হয়।


কী কারণে এই রোগ হয়?এর মূল কারণ এখনও ঠিক করে জানা যায়নি। বিভিন্ন গবেষণা থেকে জানা গিয়েছে এই ব্যাধির মূলত দুই কারণ। সর্বাধিক ক্ষেত্রে এর কারণ জেনেটিক বা জীবনধারা সম্বন্ধীয় বলে মনে করা হয়েছে। জিনের সঙ্গে পিসিওএসের সম্পৰ্ক স্থাপনের জন্যও নানান গবেষণা করা হয়েছে।


হেলথলাইন ওয়েবসাইট থেকে জানা গিয়েছে যে, একাধিক জিন এই পিসিওএস-এর কারণ। কিছু গবেষক জানিয়েছেন যে, মহিলাদের জীবনধারা এই রোগের এক প্রধান কারণ হতে পারে। মেদ বৃদ্ধি এবং খাবারের সমস্যার ফলে অসামঞ্জস্যতা ও এই তালিকায় যোগ করা হয়েছে।


পিসিওএস-এ আক্রান্ত বেশিরভাগ মহিলাদের মধ্যে উচ্চ মাপের আন্ড্রোজেন অথবা পুরুষ হরমোনগুলির উপস্থিতি থাকে। এই রোগের বেশিরভাগ বাইরের ও ভেতরের সমস্যাগুলি আন্ড্রোজেন বৃদ্ধিজনিত সমস্যার সঙ্গে জড়িত৷


পিসিওএস-এর চিকিৎসা যদি না হয় বা দেরি করে শুরু হয় তাহলে ডায়াবেটিক রোগীদের মধ্যে ইনসুলিন প্রতিরোধের মতো আরও মারাত্মক রোগ দেখা দিতে পারে। অনিয়মিত ঋতুস্রাব গর্ভধারণের ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি করতে পারে। পিসিওএস মহিলাদের সন্তান না হওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ। সুতরাং কারুর মধ্যে যদি এই লক্ষণগুলি থাকে, তবে তাদের অবিলম্বে একজন ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।


কী ভাবে করা যায় চিকিৎসা?পিসিওএস একবার ধরা পড়লে, একে রোধ করার অনেকগুলি চিকিৎসা আছে। চিকিৎসকেরা সাধারণত বেশ কিছু ওষুধগুলি নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন যার মধ্যে অন্যতম গর্ভনিরোধ ওষুধ, মেটফরমিন এবং চরম ক্ষেত্রে সার্জারিও পর্যন্ত করতে হতে পারে।


তবে এর জন্য বাড়িতে কিছু নির্দিষ্ট ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে। চিকিৎসকদের দেওয়ায় পরামর্শ মতো নিজের জীবনধারায় (lifestyle)পরিবর্তন আনলে অনেকক্ষেত্রেই এই রোগের প্রকোপ থেকে বাঁচা যায়।