

ভারতীয় আবহাওয়া দফতর জানিয়ে দিয়েছে স্পষ্টাস্পষ্টি, ২৮ ডিসেম্বর থেকে জাঁকিয়ে ঠাণ্ডা পড়তে শুরু করবে দেশের বেশ কিছু প্রান্তে। ভালো করে শীত এসে গেলে অনেকেই একটু-আধটু, অনেকে আবার লাগামছাড়া ভাবে মদ খেয়ে থাকেন। মূলে আছে প্রচলিত ধারণা- মদ শরীর গরম করে ঠাণ্ডার মোকাবিলায় সাহায্য করে!


কিন্তু চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন যে আদতে এই ধারণা পুরোপরি ভ্রান্ত। মদ শরীরের ভিতরে যাওয়ার পর তা কিন্তু দেহকে গরম করে তোলে না। এই জায়গায় এসে একটু হলেও চমকে যেতে হয়। তা হলে তুমুল শীতের মধ্যে মদ খেলে ঠাণ্ডা লাগাটা কমে যায় কী ভাবে?


সে কথা বিস্তারিত ভাবে ব্যাখ্যা করেছেন চিকিৎসকরা। বলছেন- এই শীতে ঠাণ্ডা প্রতিরোধে মদ খেলে আখেরে হিতে বিপরীত হওয়ারই আশঙ্কা রয়েছে। কেন, তা দেখে নেওয়া যাক এক এক করে!


১. মদ খাওয়া আর গরম লাগাচিকিৎসকরা বলছেন যে অ্যালকোহল বা মদ শরীরে যাওয়ার পর মোটেই তাকে ভিতর থেকে গরম করে তোলে না। বরং বাস্তবে ঠিক এর উল্টোটাই ঘটে। মদ শরীরের অভ্যন্তরীণ তাপমাত্রা আদতে কমিয়ে দেয়। এর ফলে শরীরের অভ্যন্তরীণ তাপমাত্রা আর বাইরের ঠাণ্ডা আবহাওয়ার মধ্যে যে ব্যবধানটা আছে, সেটা একটু হলেও কমে আসে। এরই ফলে মদ খেলে ঠাণ্ডার ভাব কমে যায়! কিন্তু যেহেতু শরীরের তাপমাত্রা কমে যাচ্ছে, সেই জন্য চট করে জ্বরজারি বা সর্দি-কাশি হওয়ার সম্ভাবনাও বেড়ে যায়।


২. সুস্থ শরীরকে ব্যস্ত করামদ শরীরের ভিতরে যাওয়ার পরে রক্তনালীগুলোকে বিস্তৃত করে দিয়ে তার কার্যকারিতা ধীর করে তোলে। এর ফলে শরীরের ভিতরে রক্তসঞ্চালন এক ধাক্কায় অনেকটাই বেড়ে যায়। তাতে শরীরের অভ্যন্তরীণ পদ্ধতি ভ্রান্তিতে পড়ে যায়। উষ্ণতা বেড়ে গিয়েছে ভেবে তা লাঘব করার জন্য স্বেদগ্রন্থিগুলো ঘাম ঝরাতে শুরু করে দেয়। যা শরীরে উল্টো চাপ দেয় এবং নানা অসুখে ফেলে!


৩. হাইপোথারমিয়া (Hypothermia)হাইপোথারমিয়া হল শরীরের তাপমাত্রা উল্লেখযোগ্য ভাবে কমে যাওয়ার অসুখ। এ ক্ষেত্রে শরীর তার স্বাভাবিক উষ্ণতা হারিয়ে ফেলে এবং সেই তাপমাত্রা আর উৎপন্ন করে উঠতে পারে না। এর ফলে ঠাণ্ডা লাগা অনেকটাই বেড়ে যায়। তার সঙ্গে কথা জড়িয়ে যাওয়া, দুর্বলতা, মাথা ঘোরা, শ্বাসকষ্টর মতো একাধিক সমস্যা দেখা দেয়। অ্যালকোহল যেহেতু শরীরের ভিতরে গিয়ে কার্যত তার তাপমাত্রা কমিয়ে দেয়, তাই শীতে মদ খেলে হাইপোথারমিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাও বেড়ে যায়!