বাঙালির রান্নাঘরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ হল কালো জিরে। মাছের ঝোল অথবা যে কোনও তরকারির স্বাদ ও গন্ধ বাড়িয়ে তুলতে কালো জিরের জুড়ি মেলা ভার। আর উপাদেয় এই মশলা স্বাস্থ্যের জন্যও খুবই ভাল। কারণ কালো জিরের মধ্যে রয়েছে জরুরি নিউট্রিয়েন্টস। তবে অনেকেই হয় তো জানেন না যে, দুধের সঙ্গে কালো জিরে মিশিয়ে খেলে তা আরও উপকারী। এর মধ্যে উপস্থিত জরুরি পুষ্টি উপাদান শরীরের কার্যক্ষমতা তো বাড়ায়ই, এর পাশাপাশি দেহে এনার্জির জোগান দিতেও সাহায্য করে। তাই জেনে নেওয়া যাক, মহিলা এবং পুরুষদের স্বাস্থ্যের জন্য কালো জিরে দুধের উপকারিতা নিয়ে। Representative Image
ফার্টিলিটি বাড়াতে: পুরুষদের জন্য কালো জিরে খুবই উপকারী উপাদান। এই দুধ খেলে দুর্বলতার সমস্যা দূর হয়। সেই সঙ্গে ফার্টিলিটির হারও অনেকাংশে বাড়িয়ে দেয়। যেসব পুরুষ বন্ধ্যাত্বের সমস্যায় ভুগছেন, তাঁরা যদি নিয়মিত কালো জিরে দুধ পান করেন, তাহলে উপকার পাবেন। কারণ এই পানীয় অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ এবং এটা যৌন স্বাস্থ্যের জন্যও অত্যন্ত উপকারী। Representative Image
গর্ভবতীদের জন্য আশীর্বাদ: বলা হয়, গর্ভাবস্থায় কালো জিরে দুধ খেলে শরীর-স্বাস্থ্য ভাল থাকবে। কারণ এই উপাদান দেহে রক্তের পরিমাণ বাড়ায়। সেই সঙ্গে দেহে পর্যাপ্ত ক্যালসিয়ামের জোগান দেয়। ফলে এই অবস্থায় গর্ভস্থ ভ্রূণের দেহ এবং দেহের অস্থি সুগঠিত হয়। এই দুধ রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে এবং শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। এখানেই শেষ নয়, পিরিয়ডস চলাকালীন তলপেটে-কোমরে যে ব্যথা বা ক্র্যাম্প হয়, তা উপশম করতেও সাহায্য করে কালোজিরে-দুধ। Representative Image
কার্যক্ষমতা বাড়াতে: কালো জিরে দেহের কার্যক্ষমতা বাড়াতেও সাহায্য করে। কারণ কালো জিরে এবং দুধ যখন একসঙ্গে মেশানো হয়, তখন এর পুষ্টিগুণ অনেকাংশেই বেড়ে যায়। আর এই দুই উপাদানে থাকা ক্যালোরি দেহে এনার্জির চাহিদাও পূরণ করে। তাছাড়া কালো জিরে আয়রন সমৃদ্ধ। ফলে তা স্বাস্থ্যের জন্য আশীর্বাদ। Representative Image
ওজন কমাতে: যাঁরা ক্রমবর্ধমান ওজনের সমস্যায় জেরবার, তাঁরা কালো জিরে দুধ খেলে উপকার পাবেন। বলা হয়, কালো জিরে দুধ শরীরের মেটাবলিজম বাড়াতে সহায়তা করে। আর মেটাবলিজম ভাল হলে তা সহজেই ফ্যাট হজম করাতে সাহায্য করে। যার ফলে দ্রুত কমে ওজন। তার সঙ্গে এটি পেট পরিষ্কার রাখতেও সাহায্য করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যাও দূর করে। Representative Image
ইমিউনিটি বুস্টার: দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বা ইমিউনিটি বাড়াতে অত্যন্ত উপযোগী এই কালো জিরে-দুধ। আসলে কালো জিরের মধ্যে এমন সব অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট রয়েছে, যা মরসুমি রোগের হাত থেকে শরীরকে রক্ষা করে। অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের পাশাপাশি এর মধ্যে রয়েছে জিঙ্ক। যা ইমিউন সেল বা অনাক্রম্য কোষগুলিকে শক্তিশালী করে তোলে। শুধু তা-ই নয়, ব্যাকটেরিয়া এবং ভাইরাসঘটিত রোগের মোকাবিলা করার জন্যও দেহকে প্রস্তুত করে এই পানীয়। তাই বিশেষজ্ঞরা বলেন, ঠান্ডা লাগলে অথবা সর্দি হলে কালো জিরে দুধ পান করতে হবে। Representative Image
এগুলো ছাড়াও কালো জিরে দুধের অসংখ্য উপকারিতা রয়েছে। এই পানীয় দেহের ব্যাড কোলেস্টেরল বা খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে দিতে সাহায্য করে। এ ছাড়া এর মধ্যে উপস্থিত অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান ব্যাকটেরিয়া ঘটিত সংক্রমণ রোধ করে। ত্বকের সংক্রমণ কমাতেও এর জুড়ি মেলা ভার। ফলে বোঝাই যাচ্ছে, চোখ, ত্বক এবং চুলের জন্য খুবই উপকারী কালো জিরে। Representative Image
প্রস্তুত প্রক্রিয়া: এই পানীয় বানাতে তিনটি উপাদানের প্রয়োজন- কালো জিরে, দুধ এবং গুড়। একটা ছোট গুড়ের টুকরো নিয়ে তার সঙ্গে কালো জিরে মিশিয়ে গুঁড়ো করে নিতে হবে। তার পর উষ্ণ গরম দুধে ওই মিশ্রণ মিশিয়ে নিলেই তৈরি কালো জিরে-দুধ। রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে তা পান করলে দারুণ ফল পাওয়া যাবে। Representative Image