

সারা দিনের নানা কাজকর্মের হ্যাপা আর দৌড়ঝাঁপ সামলে অনেক সময়েই শরীরে আর জুত থাকে না। অসম্ভব ক্লান্ত আর অবসন্ন লাগে। এমন অবস্থায় অনেকেই এনার্জি ট্যাবলেট খান, কেউ শারীরিক কসরত করেন। শরীরচর্চা নিঃসন্দেহে ভালো ব্যাপার, পাশাপাশি আরেকটি সহজ পন্থা হাতের কাছেই রয়েছে। ঈষদুষ্ণ জলে অল্প একটু গুড় মিশিয়ে সেই জল পান করলেই নিমেষেই উধাও হবে সব ক্লান্তি! যেহেতু গুড়ে কার্বোহাইড্রেট আছে, তাই এটি শরীরে তাৎক্ষণিক এনার্জি জোগাতে সক্ষম হয়।


সামান্য গুড় জলের যে এত মহিমা, সেটা অনেকেই জানেন না। কারণ শুধু এনার্জির জোগান দেওয়া নয়, গুড় শরীরের পক্ষে নানা দিক দিয়েই ভালো। আর এটাকে যদি একটা টোটকা হিসেবে মেনে নেওয়া যায়, তা হলে এই টোটকা ভারতে হাজার হাজার বছর ধরেই চলে আসছে। আয়ুর্বেদ শাস্ত্রেও গুড়ের নানা উপযোগিতার কথা বলা আছে। ওষুধের উপর নির্ভরশীল না হয়ে প্রাকৃতিক ভাবে সুস্থ থাকতে হলে এক ডেলা গুড়ই যথেষ্ট! রিফাইন করা চিনির চেয়ে আখ বা খেজুরের রস দিয়ে তৈরি গুড় স্বাস্থ্যের পক্ষে অনেক ভালো। এনার্জির জোগান দেওয়া ছাড়া গুড় জল আর কী কী করে উপকার করে শরীরের, সেটা একবার দেখে নেওয়া যাক!


মেটাবলিজম ও রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় - ম্যাগনেসিয়াম, ভিটামিন বি ১, বি ৬ ও ভিটামিন সি দ্বারা পরিপূর্ণ হল গুড়। এছাড়াও এতে আছে জিঙ্ক, সেলেনিয়াম ইত্যাদির মতো খনিজ। তাই সকালে বা রাত্রে শুতে যাওয়ার আগে গুড় জল খেলে তা মেটাবলিজম বাড়িয়ে দেয় আর রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাও দৃঢ় করে।


ওজন কমায় - বেশিরভাগ সময়ই আমরা ভুল ধারণার বশবর্তী হয়ে বলি যে মিষ্টি খেলেই ওজন বাড়ে। কিন্তু মিষ্টি খেলেও যে ওজন কমে, এটা কী ভাবে সম্ভব? গুড়ের ক্ষেত্রে এটা সম্ভব। গুড়ে পটাসিয়াম আছে বলে এটি শরীরে ইলেকট্রোলাইট সমতা বজায় রাখে। তাই জল ধরে রাখার ক্ষমতা অনেকটাই কমে যায় আর বাড়তি মেদও কমে। পেশি গঠনেও সাহায্য করে গুড়।


শরীর পরিস্রুত করে - গুড় প্রাকৃতিকভাবে লিভার পরিস্রুত করে এবং রক্তও পরিষ্কার করে। নিয়মিত অলস্বল্প গুড় খেলে ত্বকের উজ্জলতা বাড়বে এবং শরীর বিষমুক্ত হবে।


রক্তাল্পতা রোধ করে - প্রাচীন কাল থেকে রক্তাল্পতা যাঁদের আছে, তাঁদের গুড় খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। যেহেতু এর মধ্যে আয়রন আর ফোলেট আছে, সেহেতু গুড় শরীরে আরবিসি বা লোহিত রক্তকণিকার পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। রক্তাল্পতার রোগী এবং গর্ভবতী মহিলাদের জন্য এটি কার্যকরী।