

চালের বিকল্প কোনও দানাশস্য প্রায় নেই বললেই চলে৷ সেদ্ধ, ভাজা, ইডলি, ধোসা-- সব ক্ষেত্রেই চাল অতি প্রিয় ও পেট ভরা খাবার৷ কিন্তু চাল নিয়ে নানা মিথও রয়েছে৷ অনেকেই বলেন, বেশি ভাত শরীরে ডায়াবিটিস ডেকে আনে৷ চালে কি সত্যিই ডায়াবিটিস হয়? গত ১০ বছর ধরে চলা একটি সমীক্ষা কিন্তু অন্য দাবি করছে৷


ভারত, চিন, ব্রাজিলের মতো বেশ কিছু দেশের ১ লক্ষ ৩০ হাজার মানুষের উপর একটি গবেষণা চালানো হয়৷ ১০ বছর ধরে তাদের উপর এই গবেষণা চলে৷ এরা প্রত্যেকেই প্রতিদিন বিভিন্ন ভাবে চাল খান৷ তাতে দেখা গিয়েছে, যারা প্রতিদিন দিন গড়ে ৪৫০ গ্রামের বেশি চাল খান, তাদের ডায়াবিটিস হওয়ার ঝুঁকি অনেকটাই বেশি৷ অর্থাত্ ভাত বা চালের পরিমাণের উপরে নির্ভর করছে ডায়াবিটিসের ঝুঁকি৷


গবেষকরা জানাচ্ছেন, স্টাডি শুরুর পরে দেখা গিয়েছে, ৬ হাজারের বেশি মানুষ, যাদের ডায়াবিটিস একেবারেই ছিল না, তাদের ডায়াবিটিস ধরা পড়েছে৷ বেশি পরিমাণে ভাত খাওয়ার জেরে৷ দক্ষিণ-এশিয়া ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলিতে মানুষের খাদ্যাভ্যাসে চাল একটি গুরুত্বপূর্ণ খাবার৷


ভবধারিণী বালাজি অফ দ্য পপুলেশন হেল্থ রিসার্চ ইনস্টিটিউট, হ্যামিলটন হেল্থ সায়েন্সেস, কানাডার ম্যাকমাস্টার ইউনিভার্সিটি ও চেন্নাইয়ের ডায়াবেটোলজিস্ট ভি মোহন একটি সমগ্র গবেষণাটি চালিয়েছে৷ ডায়াবিটিস কেয়ার জার্নালে এই গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে সেপ্টেম্বরের সংখ্যায়৷


দেখা যাচ্ছে, আসলে কতটা পরিমাণ চাল একজন খাচ্ছে, তার উপরেই নির্ভর করে একজন ব্যক্তির ডায়াবিটিসের ঝুঁকি৷ চাল মানেই ডায়াবিটিস নয়৷ ডায়াবেটোলজিস্ট ভি মোহনের কথায়, 'আমাদের গবেষণায় স্পষ্ট ভাবে দেখা যাচ্ছে, চাল মানেই ডায়াবিটিস নয়৷ ডায়াবিটিসের ঝুঁকি নির্ভর করছে, কতটা পরিমাণ চাল একজন খাচ্ছেন, তার উপরে৷ ভারতে কার্বোহাইড্রেট নেওয়ার পরিমাণ বেশি৷ দক্ষিণ, পূর্ব ও উত্তর-পূর্ব ভারতে চাল খাওয়ার পরিমাণ বেশি৷ আবার উত্তর ও পশ্চিম ভারতে গমের জনপ্রিয়তা বেশি৷'


তিনি জানাচ্ছেন, সাদা ভাতে গ্লাইকেমিক ইনডেক্স অনেকটাই বেশি৷ ফলে ডায়েটে অনেকটা গ্লাইকেমিক থাকে৷ এর ফলে শুধু ডায়াবিটিসের ঝুঁকিই নয়, মেটাবলিজমেও সমস্যা তৈরি করতে পারে৷ কারণ এতে খুব কমই ফাইবার বা প্রোটিন থাকে৷ তাই পাতে বেশি ভাতের পরিমাণ বাড়ানো মানে আপনি রক্তে সুগার লেভেল বাড়ানোকেই আমন্ত্রণ জানাচ্ছেন৷