প্যাকেটবন্দি-তৈলাক্ত খাবারে অসম্ভব ঝুঁকি রয়েছে হার্টের, আপনিও খাচ্ছেন নাকি?
গবেষণায় উঠে এসেছে, প্রদাহ হয় এমন খাবার খান যাঁরা তাঁদের ৩৮ শতাংশ বেশি ঝুঁকি রয়েছে হার্টের রোগের। একইসঙ্গে ২৮ শতাংশ বেশি ঝুঁকি রয়েছে স্ট্রোকের। অন্যদিকে, উপযুক্ত ডায়েটে যাঁরা রয়েছেন তাঁদের এই ধরনের ঝুঁকি অনেকটাই কম।


ফের একবার প্যাকেটজাত খাবার বা প্রসেসড ফুড নিয়ে বড়সড় প্রশ্ন তুলে দিল হার্ভার্ড মেডিক্যাল স্টাডির নয়া রিপোর্ট। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি নতুন জার্নালে বলা হয়েছে, তৈলাক্ত খাবার, প্যাকেটজাত খাবার এবং মিষ্টি পানীয় কী ভাবে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলছে। যত গাঢ় লাল রঙের খাবার, লাল মাংস, কার্বোহাইড্রেটেড পানীয় এবং দীর্ঘদিন প্যাকেটবন্দি খাবার খাওয়া হবে, ততই বাড়বে হার্টের রোগের সম্ভবনা। খাবার হজম করার ক্ষমতা কখনও ওষুধের উপর নয়, বরং শারীরিক কসরত ও কী খাচ্ছেন তার উপর নির্ভর করে।


হার্ভার্ডের এই নতুন গবেষণায় দেখা গিয়েছে, শরীরের প্রদাহ বা পেটের ভিতরের জ্বলুনি কমাতে পারে এমন খাবার রাখার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে রোজকার ডায়েটে। বাদ দিতে হবে ভাজাভুজি, তৈলাক্ত খাবার, প্যাকেটবন্দি খাবার, মিষ্টি পানীয়। রাখতে হবে অলিভ অয়েল দিয়ে রান্না করা খাবার, তৈলাক্ত মাছ, সবুজ শাক-সব্জি, টোম্যাটো, ফল এবং বাদাম।


গবেষণায় উঠে এসেছে, প্রদাহ হয় এমন খাবার খান যাঁরা তাঁদের ৩৮ শতাংশ বেশি ঝুঁকি রয়েছে হার্টের রোগের। একইসঙ্গে ২৮ শতাংশ বেশি ঝুঁকি রয়েছে স্ট্রোকের। অন্যদিকে, উপযুক্ত ডায়েটে যাঁরা রয়েছেন তাঁদের এই ধরনের ঝুঁকি অনেকটাই কম। গত ২০২০-র সেপ্টেম্বরে প্রকাশিত হয়েছে এই জার্নালটি। আমেরিকান কলেজ অফ কার্ডিওলজি থেকে এই গবেষণা চালানো হয়েছে। প্রায় ২ লক্ষ ১০ হাজার মানুষকে পরীক্ষায় নেওয়া হয়েছিল।


এই গবেষণার আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হল, ডায়াবিটিস রয়েছে বা শরীরে কোনও বড় ধরনের রোগ রয়েছে তাঁরা যদি এই ধরনের প্যাকেটজাত খাবারে ভরসা করেন তাঁদের শারীরিক ক্ষতির সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। প্রসেসড মিট, মিষ্টি, প্যাকেটজাত নুডলস-- এগুলি অসম্ভব ক্ষতিকারক স্বাস্থ্যের পক্ষে। বার্গার, পিৎজা, হটডগ, ফ্রেঞ্চফ্রাই যত বেশি খাওয়া হচ্ছে, ততই বাড়ছে হার্টের রোগের সম্ভাবনা।


প্রদাহ বা শরীরের জ্বলুনি কী? সে নিয়েও ধারণা দিয়েছে এই জার্নাল। শরীরে ব্যথা, পেটে জ্বলুনি, বদহজম, সংক্রমণের মতো নানা শব্দ আমরা মাঝে মাঝেই শরীর খারাপ হলে ব্যবহার করি। এগুলি খুব অল্প সময় থাকলে অসুবিধে নেই, তবে বেশ কয়েকদিন ধরেই এগুলি হতে থাকলে আপনাকে বুঝতে হবে আপনার শরীরের কোথাও ক্ষত তৈরি হয়েছে। টাইপ ২ ডায়াবিটিস, কোলেস্টেরল, আর্থারাইটিস, হার্টের রোগ, ক্যানসার, অ্যালজাইমার্স এগুলি সবই রয়েছে এই তালিকায়। খাবারের ফলেই এগুলি শরীরে বাড়তে পারার সম্ভাবনা রয়েছে।


হার্ট ভালো রাখতে দু'বেলা ভাত খাওয়া বন্ধ রাখতে হবে। খাঁটি দুধ খাওয়া বন্ধ করা, রান্নায় তেলের পরিমাণ কমাতে হবে। চাই ঘাম ঝরানো শরীরচর্চা। চল্লিশের পর থেকে নিয়মিত ডাক্তারকে দেখানোর অভ্যেস করতে হবে। প্রেসার, সুগার থাকলে শরীরের প্রতি অনেক বেশি যত্নশীল হতে হবে। খাবার কম খেলে অসুবিধে নেই, মেপে খেলে বেঁচে যাবেন।