

শীতকাল (Winter) চলে এলেই সবজি কেনার তালিকায় সবার উপরে থাকে গাজর (Carrots)। সুপ হোক, স্ট্যু হোক বা যে কোনও পাঁচমেশালি সবজি হোক, তাতে গাজর দিলে আলাদা স্বাদ হয়। তার সঙ্গে যাঁরা মিষ্টি ছাড়া আকুল হয়ে যান, তাঁরা থলে ভর্তি করে গাজর কেনেন হালুয়া বানাবেন বলে। গাজরের সব চেয়ে বড় গুণ হল এতে আছে বিটা ক্যারোটিন। যা খারাপ কোলেস্টেরল কমিয়ে হার্ট (Heart) ভালো রাখে। তবে এটুকু করেই গাজরের গুণপনা শেষ হয় না। এ ছাড়াও এই সবজি আমাদের শরীরের জন্য নানা কারণে খুবই কার্যকরী।


ছোটবেলাতে অন্তত একবার মায়ের কাছ থেকে এই আপ্তবাক্য সবাই শুনে থাকবেন যে গাজর খেলে চোখ ভালো থাকে। একদম খাঁটি কথা। কারণ গাজরে আছে ভিটামিন A যা বিটা ক্যারোটিন (beta carotene) রূপে থাকে। মূলত যাঁদের রাতকানা রোগ আছে, তাঁদের জন্য এই সবজি খুবই ভালো। বয়সজনিত কারণে দৃষ্টিশক্তি কমে যায়, তখনও গাজর খেলে অনেকটাই এই সমস্যা নিয়ন্ত্রিত হয়। চোখের সামগ্রিক স্বাস্থ্য ভালো থাকার জন্য গাজর খুব প্রয়োজন।


করোনাকালে (Covid 19) সব চেয়ে বেশি প্রয়োজন হল ইমিউনিটি (Immunity) বৃদ্ধি করার। শরীরে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি থাকলে অনেক ক্ষেত্রেই ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করা যায়। গাজরে ভিটামিন এ ছাড়াও, বি সিক্স, বায়োটিন, পটাসিয়াম ও অন্যান্য খনিজ আছে। এগুলো প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে এবং হাড় শক্ত রাখতে কাজে দেয়। পটাসিয়াম শরীরে রক্ত চাপের (Blood Pressure) মাত্রা নিয়ন্ত্রিত রাখে।


গাজরের গ্লাইসেমিক (Glycemic) ইনডেক্স খুব কম। তাই অন্যান্য ফল বা সবজির তুলনায় গাজর খেলে ব্লাড সুগার (Blood Sugar) বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে না। যাঁদের ডায়াবেটিস (Diabetes) আছে, তাঁরাও নিশ্চিন্তে এই সবজি খেতে পারে।


ফ্রি র্যাডিক্যালস (Free Radicals) অনেক সময় শরীরে ক্যানসারের (Cancer) কোষ তৈরি করে। এই ফ্রি র্যাডিক্যালসের সঙ্গে লড়াই করতে প্রয়োজন হয় অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টের। গাজরে কেরাটিনয়েডস (Carotenoids) নামের অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট (Antioxidant) আছে যা ফ্রি র্যাডিক্যালসের বিরুদ্ধে লড়াই করে এবং শরীর থেকে এই জাতীয় কোষ সরিয়ে দেয়।


যে কোনও স্বাস্থ্য সচেতন মানুষ কোনও কিছু খাওয়ার আগেই ক্যালোরি কাউন্ট দেখে নেন। তাঁদের সব সময়ে ওজন বেড়ে যাওয়ার চিন্তা থাকে। গাজরে ক্যালোরি (Calories) খুব কম এবং এতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবারা আছে। এতে উপস্থিত পেকটিন নামক ফাইবার শরীরে দ্রবীভূত হয়ে যায় এবং অনেকক্ষণ পেট ভর্তি রাখে। তাই বেশি খাওয়ার ইচ্ছে একদম হয় না। ফলে ওজন অনেকটাই নিয়ন্ত্রিত থাকে।