

সারাদিন খিটখিটে ভাব, অবসাদ, ক্লান্তি মনে হয়? অফিসের চাপ কিংবা পারিবারিক সমস্যা নিয়ে সবসময় চিন্তা করছেন। যার ফলে পর্যাপ্ত ঘুম হচ্ছে না রাতে। আর তাঁর জন্যই আপনার মুডও থাকছে বিগড়ে। অনিদ্রা হল মারাত্মক ব্যাধি। বিশ্ব জুড়ে আক্রান্তের হিসেব শুনলে আঁতকে উঠবেন! প্রায় শিশু থেকে বয়স্ক সকলের মধ্যেই ঘুম ঘটিত সমস্যা প্রায় দেখা যায়। পৃথিবীতে প্রায় ৪৫ শতাংশ মানুষ ঘুমের অসুখে ভুগছেন।


অনিদ্রার কারণ আমাদের দৈনন্দিন জীবনযাপন। প্রযুক্তির উন্নতি কিছুটা হলেও আমাদের শারীরিক ক্ষতি করছে। অপর্যাপ্ত ঘুম স্বাস্থ্যের জটিলতার কারণ। ঘুমের অভাবেই মেদ বৃদ্ধি, ফোকাস হ্রাস, অনাক্রমতা হ্রাস, হৃদরোগ এবং ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ার মতন কঠিন অসুখ শরীরে চেপে বসছে। তাই রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে কয়েকটা জিনিস মাথায় রাখুন। ভাল ঘুমের জন্য কী কী বিষয় লক্ষ্য রাখবেন, জেনে নিন...


বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী, ছোট বাচ্চাদের ৮-৯ ঘণ্টা এবং পূর্ণবয়স্কদের ৭-৮ ঘণ্টা রাতে ঘুমোনো দরকার। তবেই মস্তিষ্কের বিকাশ হবে এবং শরীরও সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হবে। আপনার কি রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে কফি খাওয়ার অভ্যেস রয়েছে? যদি থাকে তাহলে বদলে ফেলুন। কফি হল উদ্দীপক। শরীরে প্রবেশ করার ছ’ঘন্টা পরেও এটা কার্যকর থাকে। তাই ক্যাফেইন জাতীয় কোনও পানীয় একদমই খাবেন না। বিকেল পাঁচটার পরে না খাওয়াই ভাল। শুধু একটু হালকা চা বা গ্রিন টি আপনি খেতে পারেন।


রাতের ঘুমে বাধ সেধেছে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি। একাকীত্ব দূর করতে অনেকেই নিজের স্মার্টফোনকে বানিয়ে নিয়েছেন বেস্ট ফ্রেন্ড। ঘুমোতে যাওয়ার আগে ঘণ্টার পর ঘণ্টা এক ভাবে তাকিয়ে থাকছেন মোবাইল ফোনের দিকে। বেশি রাত করে ঘুমোতে যাওয়া, সকালে জলদি ওঠার তাড়া এ সবই আপনার জীবনে নিয়ে আসছে অন্ধকার। মোবাইল স্ক্রিনের উজ্জ্বল আলো আপনার চোখেরও ক্ষতি করছে। তাই অভ্যেস করুন ঘুমোতে যাওয়ার অন্তত এক ঘণ্টা আগে থেকে আপনি ফোন একেবারে দূরে সরিয়ে রাখবেন।


ধূমপান শরীরের পক্ষে খুবই ক্ষতিকারক, তা আমরা সকলেই জানি। নিকোটিন শরীরকে আরও সচেতন রাখে। আপনার শরীরের যে কোনও ক্লান্তিকে দূর রাখতে সাহায্য করলেও এটি কিন্তু প্রকৃতপক্ষে আপনার ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে। এ ছাড়াও হার্ট অ্যাটাক, কার্ডিও মতন কঠিন রোগের জন্য দায়ী ধূমপান।


নিয়মিত শরীরচর্চা স্বাস্থ্যের পক্ষে খুবই ভাল। তবে ঘুমের আগে বেশি ক্ষণ ধরে যোগ ব্যায়াম করলে ঘুমের ব্যাঘাত হতে পারে। এই বিষয়টি আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে। বেশি ক্ষণ ধরে যোগ ব্যায়াম করলে শরীরের তাপমাত্রা এবং কার্ডিওভাসকুলার ক্রিয়া গুলি বৃদ্ধি পায়। অনেকেরই অভ্যেস নৈশভোজের পর ব্যায়াম করার, সেক্ষেত্রে বিকল্প হিসেবে আপনি মেডিটেশন ও হালকা ব্যায়াম করতে পারেন।