

সংক্রমণ নিম্নমুখী। দেশ জুড়ে করোনার টিকাকরণ শুরু হয়েছে। লকডাউন আর করোনার আতঙ্ক পেরিয়ে ফের ছন্দে ফিরছেন সবাই। সকলে বাড়ি থেকে বেরোতে শুরু করেছেন। তবে করোনাকে অবহেলা করলে চলবে না। তাই সমস্ত প্রাথমিক স্বাস্থ্যবিধি মেনেই নিউ নর্মালের জীবনযাপনে অভ্যস্ত হয়ে উঠতে হবে। আর এই পরিস্থিতিতে নিত্যদিনে সঙ্গী হল মাস্ক। সব সময়ে সঙ্গে রাখতে হবে এই অত্যন্ত প্রয়োজনীয় জিনিসটিকে। আর ঠিক এখানেই একটা প্রশ্ন প্রায়শই ঘোরাফেরা করে। আজকাল রাস্তাঘাটে অনেককেই একসঙ্গে দুটি মাস্ক পরতে দেখা যায়। একাংশের দাবি, দুটি মাস্কে না কি এই মারণ ভাইরাস থেকে আরও বেশি সুরক্ষা পাওয়া যায়। কিন্তু বিষয়টি কি আদৌ সত্যি? জেনে নেওয়া যাক কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা!


বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ডাবল মাস্কের থিওরি পরিস্থিতি বিশেষে নির্ভর করে। এই বিষয়ে আমেরিকার সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের পরামর্শ, দু'টি বা তিনটি লেয়ারের একটি কাপড়ের মাস্ক সংক্রমণ আটকাতে যথেষ্ট। তবে দেখে নিতে হবে, এটি ঠিকঠাক ভাবে নাক ও মুখ ঢাকতে পারছে কি না! যাতে কোনও ফাঁকা স্থান না থাকে, সেটা ভালো করে যাচাই করে নিতে হবে। একটু ঢিলেঢালা মনে হলে, তড়িঘড়ি সেই মাস্ক বদলে দিতে হবে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে একটি মাস্কই যথেষ্ট। তবে কেউ যদি চান, সুরক্ষার খাতিরে দু'টি মাস্কও পরতে পারেন!


এই বিষয়ে বস্টন ইউনিভার্সিটির সংক্রণমণ বিশেষজ্ঞ ড. ডেভিড হ্যামার জানিয়েছেন, যতক্ষণ পর্যন্ত নাক-মুখ ঠিকঠাক ভাবে ঢাকা থাকছে, ততক্ষণ একটি মাস্কই যথেষ্ট। তবে অনেকের ক্ষেত্রেই প্রবল ভাবে সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাঁরা এমন কোনও জায়গায় যাতায়াত করেন, যেখানে সংক্রমণের সম্ভাবনা বেশি। এই সমস্ত ক্ষেত্রে নিজেদের সচেতনতার স্বার্থে মাস্কের উপরে আরও একটি মাস্ক পরা যেতে পারে।


ক্ষেত্র বিশেষে দু'টি মাস্ক একসঙ্গে ব্যবহার করা যেতে পারে। এমনই জানাচ্ছেন সান ফ্রান্সিস্কোর ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়ার সংক্রমণ বিশেষজ্ঞ ড. মোনিকা গান্ধী। তাঁর কথায়, বিমান, বাস, কোনও ছোটখাটো ভিড় বা যেখানে সংক্রমণের সম্ভাবনা প্রবল, সেই সমস্ত জায়গায় দু'টি মাস্ক পরা যেতে পারে। এক্ষেত্রে রেগুলার সার্জিকাল মাস্কের উপরে একটি কাপড়ের মাস্ক পরা যেতে পারে।


প্রয়োজনে মাস্ক দু'টিকে উপর-নিচে বদল করেও পরা যেতে পারে। এর জেরে অনেক সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম ভাইরাসও আটকানো সম্ভব। তাছাড়া যদি প্রথম মাস্কটিতে কোনও ফাঁক থেকে যায়, তাহলে তা পূরণ করে দেয় দ্বিতীয় মাস্ক! এক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সাবধানতাও অবলম্বন করতে হবে। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, কোনও রকমের অস্বস্তি বা শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে দু'টি মাস্ক না পরলেও চলবে!