

শিরদাঁড়ার একদম শেষ হাড় বা টেইলবোন (tailbone)। চিকিৎসার পরিভাষায় একে ককসাক্স (coccyx bone) বলা হয়ে থাকে। কোমড়ের উপরের অংশে চাপ বেশি পড়লে, অনেক্ষণ ধরে কাজ করার পর উঠে দাঁড়ালে বা যৌনক্রিয়ার সময় এই হাড়ে ব্যথা করতে পারে। ব্যথা না হলেও অনেক সময়ে এই হাড়ে জ্বালাভাবও অনুভব হতে পারে। এই ব্যথা হওয়া বা জ্বালাভাবকে কক্সিডাইনিয়া (coccydynia) বলে। এই কক্সিডাইনিয়া (coccydynia) বেশিরভাগ মানুষের মধ্যেই খুব স্বাভাবিক বিষয় এবং অনেক সময়ই নিজে থেকে ঠিক হয়ে যায়।


তবে, অনেকেরই কক্সিডাইনিয়া (coccydynia)-র ফলে বেশি মাত্রায় ব্যথা অনুভব হয়। বা বসতে, দাঁড়াতে সমস্যা হয়। তবে, এটা যে কক্সিডাইনিয়ার (coccydynia) জন্যই হয়, তা অনেকেই বুঝতে পারেন না। কক্সিডাইনিয়ার (coccydynia) ব্যথার স্বরূপ বোঝার আগে কক্সিডাইনিয়া কেন হয় সেটা জানতে হবে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কক্সিডাইনিয়ার কারণ জানা যায় না। তবে, কোনও ইনফেকশন, টিউমার বা চোট থেকে কক্সিডাইনিয়ার ব্য়থা হতে পারে। যেমন-


১.কোথাও থেকে পড়ে গিয়ে শিরদাঁড়ায় চোট লাগা। ২. সাইকেল চালানো, বাইক চালানোর জন্য টান লেগে যাওয়া বা ওই অংশে চাপ পড়া।৩. বাচ্চা হলে এই সমস্যা হতে পারে। ৪. ওবেসিটির জন্য হতে পারে। কারণ ওবেসিটি হলে এমনিতেই হাড়ে অতিরিক্ত চাপ পড়ে।


৫.ওজন প্রয়োজনের তুলনায় কম থাকলে কক্সিডাইনিয়া হতে পারে। অর্থাৎ হাড়ের আশেপাশে মাংস কম থাকলে। ৬. কোনও ছোট জায়গায় অনেকক্ষণ বসে থাকার জন্যও এই সমস্যা হতে পারে। ৭. ক্যানসারের জন্য কক্সিডাইনিয়া হয়। তবে, এটি খুবই কম ক্ষেত্রে হয়।


কক্সিডাইনিয়া(coccydynia) সারিয়ে তোলার উপায়- সাধারণত এমনিতেই সেরে যায় এই অসুখ। কিন্তু কখনও কখনও এর জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হয়। যোগব্যায়ামেও এই ব্যথা কমে যেতে পারে।


১. চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হতে পারে বা ওষুধের প্রয়োজন হতে পারে- চিকিৎসকরা অনেক সময়ে কক্সিডাইনিয়া (coccydynia) দেখার পর NSAIDs-র মতো কোনও অসুধ দিতে পারেন। Nerve blocking anesthetic medication দিতে পারেন। যাতে সাময়িক ভাবে coccygeal nerve-কে অসাড় করে দেওয়া যায়। অনেকের ক্ষেত্রে আবার স্টেরয়েডও দিয়েও চিকিৎসা হয়।


৪. সার্জিকাল - যদি সব রকম প্রচেষ্টাই ব্যর্থ হয়ে যায়, তা হলে কক্সিজেকটমিতে (Coccygectomy) ককসাক্স (coccyx bone) হাড়টি বাদ দিয়ে দেওয়া হয়।


চিকিৎসকের পরামর্শ না নিয়েও এটি সারিয়ে তোলা সম্ভব। এর জন্য ঘরোয়া কিছু পদ্ধতি রয়েছে। ১. গরম জলে স্নান করা। এতে ব্যথার উপশম হতে পারে। ২. ঠাণ্ডা-গরম জল দিয়ে সেঁক দেওয়া। ৩. কোনও মলম বা ক্রিম লাগিয়ে ব্যথার উপশম করা যেতে পারে। ৪. হাঁটার সময় গর্ত দেখে হাঁটতে হবে।